ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিরীয় উপকূলে ক্ষেপণাস্ত্রবাহী রুশ যুদ্ধজাহাজ

শত্রু ধ্বংস করব ॥ পুতিন

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ২৬ নভেম্বর ২০১৫

শত্রু ধ্বংস করব ॥ পুতিন

তুরস্ক এক রুশ সামরিক বিমান গুলি করে ভূপাতিত করার পর যুদ্ধের আতঙ্কময় এক নতুন ভয়াবহ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। রাশিয়া এর বাহিনীর প্রতি হুমকি সৃষ্টি করে এমন যে কোন লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছে এবং সেই উদ্দেশ্যে ভূমধ্যসাগরে সিরিয়ার লাতাকিয়া উপকূলের অদূরে দূরনিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্রবাহী যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো তুরস্কের প্রতি সংহতি ব্যক্ত করেছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ঘটনার জন্য রাশিয়াকে দোষারোপ করে বলেছেন, মস্কো তুর্কি সীমান্তের কাছে সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত মধ্যপন্থী বিরোধী পক্ষের ওপর আঘাত না এনে ইসলামিক স্টেটের ওপর হামলা চালানোর দিকে আরও দৃষ্টি দিলে ওই ঘটনা নাও ঘটতে পারত। যুদ্ধ বেধে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন মস্কো বিষয়ক এক বিশেষজ্ঞ। খবর ডেইলি এক্সপ্রেস মেইল ও ফক্সনিউজের। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন তুরস্কের সঙ্গে সব সামরিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। এর আগে তিনি মঙ্গলবার রুশ বিমান ভূপাতিত করার দায়ে তুরস্ককে চড়া মাসুল দিতে হবে বলে সতর্ক করে দেন। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও বলেছে যে, এখন থেকে রুশ যুদ্ধবিমানগুলো সিরিয়ায় হামলারত বোমারু বিমানগুলোকে টহল দেবে। ব্রিটেন পুতিনের বাহিনীর যে কোন প্রতিশোধমূলক হামলার মুখে তুরস্ককে এর অনুরোধমতো সমর্থন যোগাতে ১২টি টাইফুন জঙ্গীবিমানকে প্রস্তুত রেখেছে। আকাশে যুদ্ধ চালানোই এদের লক্ষ্য। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তুর্কি প্রেসিডেন্ট তাইয়িপ এরদোগানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময় তুরস্কের প্রতি মার্কিন সমর্থনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওবামা তুরস্কের নিজস্ব সার্বভৌমত্ব রক্ষার অধিকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সমর্থন ব্যক্ত করেন। এতে আরও বলা হয়, নেতৃবৃন্দ উত্তেজনা প্রশমিত করা এবং এরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধের ব্যবস্থা করার গুরুত্ব নিয়ে একমত হন। ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, এ সামরিক জোট তুরস্ক ও এর ভৌগোলিক অখ-তার প্রতি সংহতি ঘোষণা করছে। তবে তিনি শান্ত থেকে উত্তেজনা হ্রাস করতে আঙ্কারা ও মস্কোকে যোগাযোগ রক্ষা করে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি ঘটনা সম্পর্কে তুরস্কের বক্তব্যকে সমর্থন করেন। তিনি বলেন, আমরা কয়েক মিত্র রাষ্ট্রের কাছ থেকে যে মূল্যায়ন পেয়েছি, তুরস্কের বর্ণনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তুরস্ক ইতোপূর্বে বলে যে, রুশ বিমানটি তুর্কি আকাশসীমায় প্রবেশ করার পর এর এফ-১৬ জঙ্গীবিমানগুলো রুশ বিমানের দিকে গুলিবর্ষণ করে। কিন্তু রাশিয়া ওই বিমানের তুর্কি আকাশসীমায় প্রবেশ করার অভিযোগ অস্বীকার করে। কিন্তু রুশ বিমানটিতে যখন তুরস্ক গুলিবর্ষণ করে তখন সেটি সিরীয় আকাশসীমায় ছিল বলে মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করেন। তাদের একজন চাঞ্চল্যকরভাবে জানান, ধ্বংসপ্রাপ্ত বিমানটি তুর্কি এলাকায় সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য প্রবেশ করার পর সিরিয়ায় ফিরে গিয়েছিল। মার্কিন সূত্রে বলা হয়, জেট বিমানটির তাপমাত্রা আভাস দেয় যে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় এটি প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ার আকাশসীমায় ছিল। এতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের দাবিই সমর্থিত হয়। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন উত্তেজনা প্রশমনের জন্য জরুরী পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বানের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিক সাংবাদিকদের এ কথা জানান। রয়েল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটে কর্মরত মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ শশাঙ্ক যোশী বলেন, তুরস্কের রুশ বিমান ভূপাতিত করার ঘটনা ওই অঞ্চলে পুঞ্জিভূত বিপদের প্রমাণ মাত্র।
×