ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নাগপুর টেস্ট

আরেকটি পরাজয় এড়াতে লড়ছে প্রোটিয়ারা

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ২৭ নভেম্বর ২০১৫

আরেকটি পরাজয় এড়াতে লড়ছে প্রোটিয়ারা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভারতের বিরুদ্ধে এত কম রানে আর কোন দলই মুখ থুবড়ে পড়েনি। টেস্ট সিরিজে আসল পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই অগ্নিপরীক্ষাটা স্পিনের বিরুদ্ধে। চার টেস্টের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকার পর চলমান তৃতীয় টেস্টে আরেকটি পরাজয়ের মুখে রয়েছে তারা মূলত ভারতীয় স্পিনারদের ভয়ানক দাপটের মুখে পড়ে। নাগপুর টেস্টেও স্পিনাররা ব্যাটসম্যানদের ওপর সাঁড়াশির মতো চেপে বসেছে। মাত্র ৭৯ রানেই গুটিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। পরে অবশ্য দ্বিতীয় ইনিংসে শুরুটা ভাল হলেও স্বাগতিক ভারতও মাত্র ১৭৩ রানে থেমে গেছে। তাতেই দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ৩১০ রানের জয়ের বিশাল টার্গেট দাঁড়িয়ে গেছে। জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩২ রান করতেই ২ উইকেট হারিয়ে এখন লক্ষ্য পাহাড়ের সমান হয়ে গেছে সফরকারীদের জন্য। অথচ মাত্র দুদিন শেষ! প্রথমদিন ১২ উইকেট আর বৃহস্পতিবার দ্বিতীয়দিন ২০ উইকেটের পতন ঘটেছে। এর মধ্যে স্পিনারদের দখলে ১৭টি। সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে আজ তৃতীয় দিনেই ফলাফল বেরিয়ে আসবে তৃতীয় টেস্টের। আগেরদিন মাত্র ২১৫ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল ভারতের প্রথম ইনিংস। পরে ১১ রানে দুই উইকেট নিয়ে দিনের খেলা শেষ করে ফেরে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই উইকেট হারায় তারা। রবিচন্দ্রন অশ্বিনই প্রথম আঘাত হানেন। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি প্রোটিয়ারা। তিন স্পিনার অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা আর অমিত মিশ্রর মুহুর্মুহু আঘাত চলতেই থাকে। এরপর আর কোন ব্যাটসম্যানই তাদের সামনে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মাত্র ৩৩.১ ওভারে ৭৯ রানেই গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস। এটিই টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের বিরুদ্ধে কোন দলের সর্বনি¤œ ইনিংস। এর আগে ভারতের বিরুদ্ধে সর্বনি¤œ দলীয় ইনিংস ছিল ৮২ রানের। ১৯৯০ সালে চ-িগড়ে শ্রীলঙ্কা ওই রান করেছিল। ১৯৯২ সালে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফেরার পর এটি দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে কম রানে গুটিয়ে যাওয়ার রেকর্ড। ক্যারিয়ারে ১৪তম বারের মতো ৫ উইকেট শিকার করেন অশ্বিন। জাদেজা পান ৪টি। ১৩৬ রানে এগিয়ে থেকে বেশ ভালভাবেই দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ভারত। দুই উইকেটে ৯৭ রান তুলে ফেলে তারা। তখন বড় একটি ইনিংসের পথেই এগিয়ে যাচ্ছে ভারত এমনই মনে হচ্ছিল। কিন্তু এরপরই বিপর্যয় শুরু। বাকি ৭৬ রানেই ৮ উইকেট পতন ঘটে। ১৭৩ রানেই গুটিয়ে যায় ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস। তবে ৩০৯ রানের লিড হয়ে যায় তাদের। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নেন স্পিনার ইমরান তাহির। ৩১০ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আবারও বিপদে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩২ রান তুলে দিন শেষ করার আগে হারিয়েছে দুই উইকেট। যদিও এর মধ্যে নাইটওয়াচম্যান তাহিরের উইকেটটিও আছে । এখনও জয়ের জন্য ২৭৮ রান প্রয়োজন দক্ষিণ আফ্রিকার। হাতে আছে ৮ উইকেট এবং পুরো তিনদিন। তবে স্পিনাররা সে সুযোগ দেবে বলে মনে হয় না। দ্বিতীয় দিনে ২০ উইকেটের পতন ঘটেছে, এর মধ্যে স্পিনাররাই শিকার করেছেন ১৭টি। একদিনে ২০ উইকেট সর্বশেষবার পতন ঘটতে দেখা গেছে ২০১২ সালে পাকিস্তান-ইংল্যান্ডের মধ্যে দুবাই টেস্টে। তারপর নাগপুর টেস্ট একই ঘটনা দেখলো। আর তিনদিনেই ফলাফল হওয়ার জোর সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে। আজই বোঝা যাবে কে জেতে, ভারতের ভয়াল স্পিন নাকি প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা?
×