ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গোলাপ ফুলে বিদ্যুত

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৭ নভেম্বর ২০১৫

গোলাপ ফুলে বিদ্যুত

গোলাপ ফুল শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, উদ্ভিদ বিদ্যুত উৎপন্ন করতেও সক্ষম। কিন্তু আমরা উদ্ভিদের বিদ্যুতপ্রবাহ দেখতে পাই না। এই বিদ্যুত হঠাৎ উৎপন্ন হয় না বরং এটার প্রবাহ সম্পন্ন হয় উদ্ভিদের মৃত্যু ছাড়াই। সুইডিশ বিজ্ঞানীরা সফলভাবে একটি গোলাপ গাছের ভেতর দিয়ে ইলেক্ট্রনিক বর্তনী তৈরি হওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করতে পেরেছেন। ইলেক্ট্রনিক বর্তনী তৈরি হওয়ার ফলে ফুলের পাপড়িগুলোর আয়ন উজ্জ্বল হয়েছে। কৌশলটি ছিল, একটি পাত্রে গোলাপ গাছটির মধ্যে বিদ্যুত পরিবাহী দ্রবণীয় পলিমারযুক্ত পানি দেয়া হয়। গাছটি তা শোষণ করে নেয়। শোষণের সময় বিদ্যুত পরিবাহী ও উপাদানগুলো নিজের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করে নেয়। যে প্রক্রিয়ায় ফুলের রং ফুটে উঠে সেই প্রক্রিয়াতেই গোলাপ গাছটি বৈদ্যুতিক বর্তনী সৃষ্টি করে। যদিও গবেষক দল এখনও মূল কার্যপ্রণালী নিয়ে গবেষণা করছে। এমন একটি প্রক্রিয়া যা চিনিকে রূপান্তর করে শক্তিতে উৎপন্ন করতে পারবে। যদি এই প্রক্রিয়াটি সফল হয়, তাহলে মানুষ সফলভাবে গাছ থেকে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন করতে পারবে। তখন মানুষের শৌখিন বাগানগুলো সৌরশক্তি হিসেবে কাজ করবে এবং এগুলো দেখতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হবে। এটি একটি যুগান্তকারী সাফল্য হবে এবং এ্যান্টেনা ও সেন্সর হিসেবে ধাতুর পরিবর্তে ব্যবহার করা যাবে। গবেষকরা বাগানের একটি গোলাপ গাছ কেটে এনে বিদ্যুত পরিবাহী দ্রবণীয় পলিমারযুক্ত পানির একটি পাত্রে বসিয়ে দেন। গাছটি যখন পানি শোষণ করে তখন বিদ্যুত পরিবাহী ওই উপাদানগুলোও গাছ শোষণ করে নিজের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করে নেয়। ফুলের রং যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফুটে উঠেছে এটি সেই একই রকম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। সম্প্রতি সায়েন্স এ্যাডভান্সেস সাময়িকীতে এই গবেষণা বিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। নিবন্ধের প্রধান লেখক ম্যাগনাস বারগ্রেন বলেন, গোলাপ গাছটির ভেতর পলিমারের দ্রবণগুলো গাছের আয়নের সঙ্গে মিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি তার তৈরি করে ফেলে যা দিয়ে একটি বৈদ্যুতিক সার্কিট তৈরি করে ফেলা যায়। এই প্রক্রিয়ার উৎপাদিত সবকিছুই প্রাকৃতিক এবং এক্ষেত্রে গাছের নিজস্ব অনন্য পদ্ধতিটিই ব্যবহার করা হয় বলে দাবি করেছেন বারগ্রেন। আলোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই উদ্ভাবন শক্তি আহরণের একটি পথ খুলে দেবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
×