ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুবার্ষিকী

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ২৮ নভেম্বর ২০১৫

আজ ঢাকার প্রথম  নির্বাচিত মেয়র  মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুবার্ষিকী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ স্নেহভাজন, জনতার মঞ্চের রূপকার, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফের আজ নবম মৃত্যুবার্ষিকী। ২১ আগস্ট ভয়াল গ্রেনেড হামলায় মানবঢাল রচনা করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে পারলেও নিজেকে বাঁচাতে পারেননি এই জনপ্রিয় রাজনীতিক। মস্তিষ্কসহ সর্বাঙ্গে বিঁধে থাকা ঘাতক গ্রেনেডের স্পিøন্টারের দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০০৬ সালের ২৮ নবেম্বর ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত্যুর কাছে পরাজিত হন মোহাম্মদ হানিফ। মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, মোহাম্মদ হানিফ আমৃত্যু জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ পরীক্ষিত ও দেশপ্রেমিক নেতা। যৌবনের শুরু থেকে জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতি অবিচল। তার সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে খুব কাছে থেকেছেন এবং তাঁর মাধ্যমেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি। উদার চিন্তাচেতনা, প্রখর ব্যক্তিত্ব ও সংবেদনশীলতা তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে উজ্জ্বল করে। তিনি পরিণত হন দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষের নেতায়। মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী। ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী, ধারাবাহিক পথচলায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। একান্ত সচিব থাকাকালীন ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলনের প্রস্তুতি, ছয় দফা মুক্তির সনদ প্রণয়ন এবং প্রচারে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতাপরবর্তী সকল আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথের প্রথম কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোহাম্মদ হানিফ। বঙ্গবন্ধু মোহাম্মদ হানিফকে অত্যন্ত স্নেহ ও ভালবাসতেন। তাই স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু তাঁর ঢাকা-১২ আসন ছেড়ে দিয়ে মোহাম্মদ হানিফকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করিয়ে আনেন। পরবর্তীতে সংসদে হুইপেরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭৬ সালে মোহাম্মদ হানিফ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মাঝখানে কিছু সময় বিরতি দিয়ে আমৃত্যু ৩০ বছর এ দায়িত্ব পালন করেন। ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মোহাম্মদ হানিফ। ১৯৯৪ সালে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র হন তিনি। তার নেতৃত্বেই ’৯৬ সালের মার্চের শেষ সপ্তাহে ‘জনতার মঞ্চ’ গঠন করে তৎকালীন বিএনপি সরকারের পতনকে ত্বরান্বিত করা হয়। পরে ’৯৬ সালের ১২ জুন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোট পেয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়। মোহাম্মদ হানিফের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফাউন্ডেশনসহ অসংখ্য সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচীর আয়োজন করেছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছেÑ মোহাম্মদ হানিফের কবর জিয়ারত, শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, দুস্থদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ, আলোচনা সভা ইত্যাদি। মোহাম্মদ হানিফের একমাত্র পুত্র ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন পিতার রুহের মাগফিরাত কামনায় দেশবাসীর দোয়া কামনা করেছেন।
×