নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ২৭ নবেম্বর ॥ মাত্র ১১ মাস হলো বিয়ে হয়েছে, মেহেদীর দাগ মুছেনি এখনও। কিন্তু যৌতুকের জন্য নির্মমভাবে জীবন দিতে হলো নার্গিসকে। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্মম নির্যাতনে নার্গিস চলে গেলেন না-ফেরার দেশে। মাদারীপুর সদরের হাজরাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বুধবার রাতে। এমন অভিযোগ নিহত নার্গিসের পরিবারের। শুক্রবার দুপুরে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
নিহত গৃহবধূর ভাই সুজন ও চাচা ফারুক মাতুব্বর অভিযোগ করে জানান, গত জানুয়ারিতে চরবাজিতপুর গ্রামের বাবু মাতুব্বরের মেয়ে নার্গিস আক্তারের (২২) সঙ্গে হাজরাপুর গ্রামের সামচু খাঁর ছেলে দুবাই প্রবাসী সান্টুর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় চার লাখ টাকার মালপত্র দেয়া হয় সান্টুকে। কিন্তু সান্টু ও তার পরিবারের লোকজন আরও আড়াই লাখ টাকা যৌতুকের জন্য নার্গিসকে নির্যাতন করতে থাকে। ছুটি শেষে সান্টু দুবাই চলে গেলেও তার পরিবার যৌতুকের আড়াই লাখ টাকার জন্য চাপ অব্যাহত রাখে। এক সপ্তাহের মধ্যে শ্বশুড়বাড়ির লোকজন নার্গিসকে যৌতুকের টাকা নিয়ে আসার জন্য বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু নার্গিস খালি হাতে ফেরত আসায় বুধবার সারারাত নার্গিসের ওপর নির্যাতন চালায় শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। নির্যাতনের এক পর্যায়ে নার্গিস মারা গেলে বাড়িতে লাশ রেখে সবাই পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। শুক্রবার দুপুরে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বিশ্বজিত বলেন, লাশের সুরতহাল করা হয়েছে। তাতে নিহত গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আরএমও ডাঃ শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ বলেন, গৃহবধূর লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এ মুর্হূতে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।
সদর থানার ওসি জিয়াউল মোর্শেদ বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত পাওয়া গেলে হত্যা মামলা নেয়া হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: