ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মহাযজ্ঞ শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৮ নভেম্বর ২০১৫

শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মহাযজ্ঞ শুরু

শিল্পী জয়াপ্রদা রামমূর্তি : ভারতীয় উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের কর্ণাটকী ধারার খ্যাতিমান বংশীবাদক। বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী প্রেম রামমূর্তির কন্যা জয়াপ্রদা প্রথম বাঁশির সুর নিয়ে খেলা করতে শিখেছেন শুনে শুনে। স্বশিক্ষিত প্রতিভাময়ী এই শিল্পী বাঁশির সুরকে আরও বিকশিত করেছেন সঙ্গীতগুরু এন রামনি, সুদর্শনাচার্য ও বি আর সি আইয়েঙ্গারের মতো বিদুষীদের সান্নিধ্যে। স্বীকৃতিস্বরূপ অন্যান্য পুরস্কারের পাশাপাশি অর্জন করেছেন ‘উগাদি’ পুরস্কার। কোন বোধ থেকে উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের এ আসরে এসেছেন প্রশ্ন করায়, জয়াপ্রদা বলেন, প্রায় ১৭ বছর আগে একবার বাংলাদেশে এসেছিলাম কিন্তু সঙ্গীতের এতবড় আসরে এই প্রথম পদার্পণ। খুব সুন্দর এ আয়োজন। সঙ্গীতের বিভিন্ন মাধ্যম থাকা সত্ত্বেও বাঁশিকে কেন বেছে নিলেন প্রশ্ন করায় তিনি বলেন, পারিবারিকভাবেই প্রভাবিত হয়েছি। বাঁশির সুর ছোটবেলা থেকেই কেমন যেন আমাকে টানত। সুর শুনেই বাঁশিতে তুলতে পারতাম। আমার মা-বাবা দুজনই সঙ্গীতানুরাগী। তিনি বলেন, কর্ণাটকী ধারার আমিই প্রথম মহিলা বংশিবাদক। উৎসব সম্পর্কে তিনি বলেন, এ উৎসবটা উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এ ধরনের উৎসব আয়োজনে প্রভাবিত হয়ে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তিনি বাঁশি হাতে নিয়ে হিন্দুস্তানী ও কর্ণাটকী সঙ্গীতের পার্থক্য বোঝানোর চেষ্টা করেন। কৌশিকী চক্রবর্তী : বিশ্বখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর কন্যা কৌশিকীর জন্ম ১৯৮০ সালে। ভারতের আইটিসি সঙ্গীত রিসার্চ একাডেমির সঙ্গীতময় পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন। মা চন্দনা চক্রবর্তীর কাছে কণ্ঠসঙ্গীতে হাতেখড়ি হলেও সাত বছর বয়সে প্রাতিষ্ঠানিক তালিম শুরু হয় পন্ডিত জ্ঞান প্রকাশ ঘোষের শিষ্যত্ব গ্রহণের মাধ্যমে। এরপর এসআরএ স্কলার হিসেবে ১৯৯২ সালের নবেম্বর থেকে ২০০৪ সালের জুন পর্যন্ত তাঁর বাবা প-িত অজয় চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে ছিলেন। বয়সের তুলনায় সঙ্গীতে পরিপক্কতা বেশি এবং সঙ্গীত সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা ও নজরকাড়া স্বতঃস্ফূর্ততার স্বাক্ষর রয়েছে। এবারের উৎসবের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটাতো যুদ্ধ নয়, আনন্দ নিয়ে গান করতে এসেছি। গত বছর মঞ্চে থেকে দর্শকের অনেক ফিডব্যাক পেয়েছি, সেই মানসিকতা নিয়েই এসেছি। তাঁর গায়কীতে বাবার প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গুরু যা বলে, তা বেদবাক্য মনে হয়। যাঁর কাছে শিখেছি, তাঁর গায়কী থাকবে এটা স্বাভাবিক। পটিয়ানা ঘরানার যে সব ওস্তাদকে জানি, যারা গানের বিভিন্ন স্টাইল তৈরি করেছে। আর সেখানকার বেশিরভাগ ওস্তাদ পুরুষ। কাজেই একজন মেয়ে হয়ে পুরুষদের গায়কী সবই যে একই রকম হয় এটা ঠিক নয়। আমাকে গাইতে গেলে চ্যালেঞ্জ করে গাইতে হয়। স্বাতন্ত্র স্টাইলটা আস্তে আস্তে হয়। নিজের হাতেগড়া ‘সাকি’ ব্যান্ড সম্পর্কে বলেন, আমার ব্যন্ডের বয়স এক বছরও হয়নি। মাত্র ৬ জন সদস্য নিয়ে গড়া এ ব্যান্ড ইতোমধ্যে দেশে ও বিদেশে অনেক সুনাম কুড়িয়েছে। প-িত কুশল দাস : কলকাতার প্রখ্যাত এস্রাজ বাদক বিমল চন্দ্র দাসের পৌত্র কুশল দাস। বাবা শৈলেন দাশ ও কাকা শান্তনু দাসের কাছে সেতারে হাতেখড়ি। পরে প-িত অজয় সিংহ রায়, প-িত মানস চক্রবর্তী, প-িত রামকৃষ্ণ বসু ও প-িত সঞ্জয় ব্যানার্জীর কাছে তালিম নেন। সঙ্গীতে গভীর জ্ঞান এবং রাগ নিয়ে নিরিক্ষার ক্ষমতার জন্যে তাঁকে ভারতীয় উচ্চাঙ্গ যন্ত্রসঙ্গীতের একজন শীর্ষস্থানীয় শিল্পী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি চন্ডিগড়ের প্রাচীন কলাকেন্দ্র থেকে সঙ্গীত বিশারদ স্বর্ন পদক এবং মুম্বাইয়ের সুর শৃঙ্গার সংসদ থেকে সুরমণি পুরস্কার লাভ করেন। বেঙ্গল উৎসবে আসতে পেরে অনেক আনন্দিত তিনি। তিনি বলেন, এ ধরণেনর আয়োজন সংশ্লিষ্ট শিল্পীদের জন্য অনেক সম্মানের এ জন্য আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান তিনি।
×