ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দাবিতে ৭৫ বছরের বৃদ্ধার আকুতি

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ২৮ নভেম্বর ২০১৫

শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দাবিতে ৭৫ বছরের বৃদ্ধার আকুতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা ॥ মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আমজাদ হোসেনকে স্বীকৃতির দাবিতে ৪৪ বছর পর বৃদ্ধা স্ত্রী ভাঙ্গুড়া উপজেলার নৌবাড়িয়া গ্রামের সুফিয়া বেওয়া প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। শুক্রবার ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন সুফিয়া বেওয়া জানিয়েছেন, স্বামী আমজাদ হোসেন একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু শহীদদের তালিকায় তার নাম নেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমজাদ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের নাচোল স্টেশনে রিলিভিং বুকিং ক্লার্ক পদে কর্মরত ছিলেন। সারা দেশে প্রতিরোধ গড়ে উঠলে তিনি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের ২৮ এপ্রিল পাকিস্তান সরকারের চাকুরি ত্যাগ করে তিনি সঙ্গীয় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সাথে অধিকতর প্রশিক্ষণ গ্রহণের উদ্দেশ্যে রহনপুর-সিঙ্গাবাদ সীমান্ত হয়ে ভারত গমনের জন্য একটি ট্রেনে উঠে বসেন। এক বিহারী টিটি বিষয়টি জানতে পেরে প্লাটফরমে তল্লাশিরত পাকহানাদার বাহিনীর সদস্যকে বলে দেয়। তখন হানাদার বাহিনী আমজাদ হোসেন ও তার সঙ্গীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সবাইকে ধরে নৃশংসভাবে হত্যা করে তাদের লাশ কোথায় ফেলে দেয় আজও তা জানা যায়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর প্যাডে আমজাদ হোসেনকে স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ ঘোষণা করে সমবেদনা জানিয়ে তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুনের কাছে নিজ স্বাক্ষরযুক্ত চিঠি লিখেন যার নং প্রত্রাক/৬-৪-৭২সিডি/৩১৬ তাং ১৬/০২/৭৩। সুফিয়া খাতুন নাচোল মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রাক্তন কমান্ডার চৌতন বর্মার স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ন পত্র প্রদর্শন করে বলেন আমজাদ হোসেন ছিলেন একজন নিঃস্বার্থ দেশ প্রেমিক এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা । অথচ তাকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে তিনি কয়েক বার আবেদন করেছেন কিন্তু আর্থিক দাবী মেটাতে না পারায় ভাঙ্গুড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোকছেদ আলী তাকে কোনো প্রত্যয়ন দেননি বরং বঙ্গবন্ধু স্বাক্ষরিত চিঠিটাও তিনি ছুঁড়ে ফেলে দেন। পঁচাত্তর বয়সের বিধবা সুফিয়া খাতুন জানান শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর সম্মানে তিনি দ্বিতীয় বিবাহ পর্যন্ত করেননি। দুই সন্তানকে নিয়ে ৪৪টি বছর পার করেছেন। তাই বৃদ্ধা বয়সে দেশপ্রেমিক স্বামীর উপযুক্ত মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে সুফিয়া খাতুনের পুত্র সহকারি শিক্ষক মোঃ সৈয়দ আলীও বক্তব্য রাখেন।।
×