স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী নগরীর একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষ নিজেদের আত্মীয়দের নামে ‘নামকরণ’ করে নিয়েছে স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। এমনকি স্কুল প্রতিষ্ঠার ৫ বছর পর যার জন্ম তার নাম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেও একটি কক্ষের নামকরণ করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্কুল পরিচালনা কমিটির এই সদস্যরা বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। এ ঘটনা নগরীর শিরইল কলোনি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। জানা গেছে, কোমলমতি শিশুদের ইতিহাস, ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করে দিতে নানামুখী কৌশল অবলম্বন করানো হয়। এর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের একটি কৌশল হলো শ্রেণীকক্ষের নামকরণ। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শ্রেণী কক্ষগুলো বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়। কোথাও ফুলের নামে, কোথাও নদীর নামে আবার কোথাও বীর শ্রেষ্ঠদের নামে অথবা ঐতিহাসিক কোন জায়গার নামে কিংবা স্থানীয় বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের নামে। তবে নগরীর ওই বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষের নাম রাখা হয়েছে ওই বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিচালনা কমিটির স্বজনদের নামে। সাধারণত শ্রেণীকক্ষের নামকরণে বিখ্যাত ও স্মরণীয়দের নামে করা হলেও ওই বিদ্যালয়ের যে ম্যানেজিং কমিটি আছে ওই সদস্যদের ও তাদের স্বজনদের নাম লেখা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা শ্রেণীকক্ষের সুন্দর নামকরণের দাবি জানিয়েছেন।
বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেণীর নামকরণ করা হয়েছে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে নুর মোহাম্মদ, চতুর্থ শ্রেণীর নামকরণ ফাইজ উদ্দিন, তৃতীয় শ্রেণীর নাম আব্দুল মজিদ, শিশু শ্রেণীর কক্ষের নামকরণ হয়েছে সাজেদা খাতুন আঙ্গুরা এবং প্রথম শ্রেণীর কক্ষ সোলায়মান শেখের নাম। এদের মধ্যে নুর মোহাম্মদ ও সাজেদা আক্তার আঙ্গুরা জীবিত। তারা বর্তমানে ওই স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য। স্কুল প্রতিষ্ঠায় তাদের কোন অবদান নেই। প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বর্তমান পরিচালনা কমিটি সভাপতি নুরুজ্জামান টিটোর বাবা সোলাইমান শেখের নামকরণ করা হয়েছে। নুর মোহাম্মদের নাম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নামকরণ করা হলেও স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর। তিনি ওই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। তার জন্মের তারিখ ২ মে ১৯৫৮ সালে আর বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে ১৯৬৩ সালে। তিনি কিভাবে একটি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করতে পারেন তা নিয়ে এলাকাবাসীর মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে স্কুলের সভাপতি ও রাসিকের কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টিটো বলেন, শ্রেণীকক্ষের নামকরণ বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছিল। তাই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় যাদের অবদান রয়েছে তাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেম জানান, কবি সাহিত্যিক অথবা বিখ্যাত কোন ব্যাক্তির নামে নামকরণ করার কথা। যাতে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণীত হয়। তবে ওই স্কুলের নামকরণ তারা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: