ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নতুন পদ্ধতিতে সফল লিভার চিকিৎসা, দেশে প্রথম

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৩০ নভেম্বর ২০১৫

নতুন পদ্ধতিতে সফল লিভার চিকিৎসা,  দেশে প্রথম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ লিভার চিকিৎসায় নতুন পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। পদ্ধতির নাম হলো ‘লিভার টিউমার ও ক্যান্সার নিরাময়ে ট্রান্স-আরটারিয়াল কেমো-এম্বোলাইজেশন (টেইস) পদ্ধতি‘। আকৃতি ও অবস্থানের কারণে যাদের যকৃতের টিউমার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সরানো সম্ভব নয়, তাদের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতিই বিশ্বে সবচেয়ে কার্যকর বলে বিবেচিত হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে রক্তনালীর মাধ্যমে সরাসরি টিউমারে কেমোথেরাপি দেয়া যাবে। শুক্রবার ঢাকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে প্রথমবারের মতো এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ‘সফল’ হয়েছেন বাংলাদেশের একদল চিকিৎসক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মামুন-আল-মাহতাব স্বপ্নীল এ দলের নেতৃত্ব দেন। সহযোগী অধ্যাপক মামুন-আল-মাহতাব স্বপ্নীল জনকণ্ঠকে জানান, নতুন এ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজির আঙিনায় প্রবেশ করল। আমাদের রোগীরা এখন থেকে দেশেই লিভার ক্যান্সারের এ চিকিৎসা পাবেন। তাদের খরচ পড়বে ভারতের অর্ধেক। দেশের সরকারী হাসপাতালগুলোতে শীঘ্রই এ চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ দলে আরও আছেন শেখ মোহাম্মদ নুর-ই-আলম, মোঃ আশরাফুল ইসলাম, সৈয়দ আবুল ফজল, জাহাঙ্গীর সরকার, আহমেদ লুৎফুল মোবেন, মোঃ আবদুর রহিম ও ফয়েজ আহমেদ খন্দকার। তাদের প্রায় সবাই নয়া দিল্লীর ইনস্টিটিউট অব লিভার এ্যান্ড বিলিয়ারি সায়েন্সেস এবং চেন্নাইয়ের গ্লোবাল হেলথ সিটিতে ‘টেইস’ পদ্ধতির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বলে স্বপ্নীল জানান। বাংলাদেশে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর যত লোকের মৃত্যু হয়, তাদের মধ্যে যকৃতের ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ক্রনিক হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসের সংক্রমণকেই এ দেশে যকৃতের ক্যান্সারের মূল কারণ বলে মনে করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ রোগীরা আসেন একেবারে শেষ পর্যায়ে। তখন আর অস্ত্রোপচার করার উপায় থাকে না বলে জানান ডাঃ স্বপ্নীল। তিনি আরও জানান, লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারের জন্য প্রধানত দায়ী হেপাটাইটিস। রোগটি বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার সামর্থ্য রাখে । পাঁচ ধরনের ভাইরাস হেপাটাইটিস রোগটির জন্য দায়ী। এগুলোকে ইংরেজি এ, বি, সি, ডি এবং ই দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। এগুলো সাধারণত দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে, আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের মাধ্যমে, যৌনবাহিত হয়ে বা আক্রান্তের শরীরের কোন তরলের সংস্পর্শে ছড়িয়ে পড়ে। পাঁচটি ভাইরাসের মধ্যে ‘বি’ ভাইরাসটি সবচেয়ে সাধারণ। ভাইরাসটি আক্রান্ত মায়ের শরীর থেকে নবজাতক বা দুগ্ধপোষ্য শিশুর মধ্যে বাহিত হতে পারে। এছাড়া দূষিত সিরিঞ্জের মাধ্যমে মাদকগ্রহণকারীরদের মাঝে ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা আছে।
×