ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনায় খান এ সবুরের নামে স্থাপনার তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৩০ নভেম্বর ২০১৫

খুলনায় খান এ সবুরের নামে স্থাপনার তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী খান-এ-সবুরের নামে খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কি কি স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে- তার তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট। খুলনার মেয়রকে ১৫ দিনের মধ্যে ওই তালিকা আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কমিশনারদের জবাবদিহির ধারা বাতিলে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রেখেছেন আপীল বিভাগ। এদিকে প্রতিযোগিতা কমিশনের মাধ্যমে বাজার মূল্যায়ন করে মোবাইল অপারেটর রবি ও এয়ারটেলের একীভূত হওয়ার আবেদনের নিষ্পত্তি কেন করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে হাইকোর্ট। রবিবার আপীল বিভাগ ও হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছেন। খান-এ-সবুরের নামে খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কি কি স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে- তার তালিকা চেয়েছে আদালত। রবিবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মোঃ সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ খুলনার মেয়রকে ১৫ দিনের মধ্যে ওই তালিকা আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। এর আগে গত ৩ নবেম্বর এক আদেশে একই বেঞ্চ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিজড়িত ‘খান-এ-সবুর’ সড়কের নাম প্রত্যাহার করে আগের ‘যশোর রোড’ নামটি ফিরিয়ে আনতে আদালতের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলেছিল। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল সাত দিনের মধ্যে। সে অনুযায়ী খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আইনজীবী রবিবার আদালতে প্রতিবেদন দিলেও তা যথাযথ হয়নি বলে জানিয়েছে আদালত। মেয়রকে ১৫ দিনের মধ্যে আবারও এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, আগামী ১৪ ডিসেম্বর বিষয়টি আবার কার্যতালিকায় আসবে। আদালতে আবেদনকারী পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এ কে রাশেদুল হক। আর খুলনার মেয়রের পক্ষে ছিলেন এম এ গফুর। জিয়াউর রহমানের প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমানও ষাটের দশকে মুসলিম লীগ নেতা ছিলেন। স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার কারণে ১৯৭২ সালে তাকেও দালাল আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তার নামেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মিলনায়তনের নামকরণ হয়। স্বাধীনতাবিরোধীদের নামে স্থাপনা, সড়ক, অবকাঠামোর নামকরণ স্থগিত চেয়ে ২০১২ সালে হাইকোর্টে একটি রিট করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন ও সাংবাদিক গবেষক শাহরিয়ার কবির। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ১৪ মে রুলসহ খান-এ-সবুর ও শাহ আজিজুর রহমানের নাম ব্যবহার স্থগিতের আদেশ দেয় হাইকোর্ট। আদেশের পর রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশেদুল হক জনকণ্ঠকে বলেছেন, ‘মেয়রের প্রতিবেদন যথাযথ হয়নি। কারণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মামলার পক্ষ না হয়েও অন্য একজনকে প্রতিবেদন দেয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন, যা আইনানুগ হয়নি বলে আদালত মনে করেছে।’ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শাহ আজিজুর রহমান’ মিলনায়তনের নাম প্রত্যাহারের আদেশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে কি না, তাও প্রতিবেদন আকারে জানাতে বলেছিল এই বেঞ্চ। ব্যারিস্টার রাশেদুল হক আরও বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে আদেশ প্রতিপালন করেছে বলে জানিয়েছে। উল্লেখ্য, হাইকোর্টের ওই রুলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের নামে থাকা সড়ক, স্থাপনা ও অবকাঠামোর নাম পরিবর্তনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, পরিবর্তনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সে সবের নামকরণ কেন করা হবে না এবং যারা ওই নামকরণের জন্য দায়ী, তাদের কেন বিচারের আওতায় আনা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। আদালতের ওই নির্দেশনা অনুসরণ করা হচ্ছে না জানিয়ে গত ২৫ আগস্ট আরেকটি আবেদন করেন মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবির। দুদকের ধারার আদেশ বহাল ॥ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কমিশনারদের জবাবদিহির ধারা বাতিলে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রেখেছেন আপীল বিভাগ। রবিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপীল বেঞ্চ আদেশে বলেন ‘নো অর্ডার’। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন এ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রবি ও এয়ারটেল নিয়ে হাইকোর্টের রুল ॥ প্রতিযোগিতা কমিশনের মাধ্যমে বাজার মূল্যায়ন করে মোবাইল অপারেটর রবি ও এয়ারটেলের একীভূত হওয়ার আবেদনের নিষ্পত্তি কেন করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে হাইকোর্ট। নাজমুস সাকিব আল আযম নামের এক এয়ারটেল গ্রাহকের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলীর বেঞ্চ রবিবার এই আদেশ দেয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বাণিজ্য সচিব, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা (কমপিটিশিন) কমিশনের সচিব, টেলিকম সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান এবং রবি ও এয়ারটেল কর্তৃপক্ষকে চার সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
×