ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরফরাজের ব্যাটিং এ ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি ভারত যুবাদের

প্রকাশিত: ১৯:৩২, ৩০ নভেম্বর ২০১৫

সরফরাজের ব্যাটিং এ ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি ভারত যুবাদের

অনলাইন ডেস্ক॥ নিজেকে উন্নত করার খিদে তাঁর এতটাই যে, বাথরুমেও এবি ডে’ভিলিয়ার্স তাঁর সামনে পড়ে গেলে ছাড়া পান না। এবং তাঁর ক্রিকেট-জ্ঞান দেখে তাজ্জব হয়ে এবি বলে ফেলেন, ‘তোমার বয়সে আমি তো এত কিছু শিখিইনি!’ কোচ হিসেবে যাঁকে পেয়েছেন, তাঁর নাম যে সত্যিই রাহুল দ্রাবিড়, এখনও বিশ্বাস হয় না বছর আঠারোর তরুণের। টিভিতে দ্রাবিড়ের দুর্দান্ত সব ইনিংসের রেকর্ডিং দেখেন আর বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে ভাবেন, এই লোকটাই আমার টিমের কোচ! তিনি, সরফরাজ খান। আপাতত সংক্ষিপ্ত তাঁর ক্রিকেট জীবন যেন শুধু একটা মন্ত্রই জানে— সাফল্য। স্কুল ক্রিকেটে পরপর রেকর্ড। গত বছর অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক। এ বারের আইপিএলে বিরাট কোহলির টিমের হয়ে বিস্ফোরক কিছু ইনিংস খেলে ক্রিকেটবিশ্বের নজরে আসা। মু্ম্বইয়ে রঞ্জি অভিষেকে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি। কিন্তু এই মরসুমে উত্তরপ্রদেশে এসে যথেষ্ট ধারাবাহিক পারফরম্যান্স। আর রবিবার সল্টলেক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি যে উঠল যুব ভারতের হাতে, তার অন্যতম কারিগর তিনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ফাইনালে ফেভারিট হিসেবে শুরু করেছিল যুব ভারত। ৩৬.৫ ওভারে বাংলাদেশ যে ১১৬ অল আউট হয়ে গেল, তাতে আশ্চর্যের কিছু ছিল না। দুই ওপেনার ওয়াশিংটন সুন্দর (১২) এবং ঋষভ পান্ত (২৬) যখন আক্রমণাত্মক শুরু করলেন, তখনও অঘটনের পূর্বাভাস ছিল না। কিন্তু সাত ওভারের মধ্যে হঠাৎই ভারত ৪২-৩ হয়ে যায়। ভুল শট বাছাইয়ের খেসারত দিয়ে ফিরতে হয় টপ অর্ডারকে। বাংলাদেশ তখন তেতে গিয়েছে। ৫২-৩ অবস্থায় লাঞ্চে গেল যখন দুটো টিম, মাঠে হাজির শ’দুয়েক দর্শকের মধ্যে টেনশনের হালকা শিরশিরানি। এই অবস্থা থেকে কুড়ি মিনিটেরও কম সময়ে টিমকে অনায়াস জয় এনে দিলেন সরফরাজ। এক ওভারে ১৫ তো পরেরটায় কুড়ি— তাঁর ২৭ বলে করা ৫৯ রানের ইনিংসের বিস্ফোরণে উড়ে গেল যাবতীয় আশঙ্কা। ন’টা বাউন্ডারি, তিনটে ওভার বাউন্ডারিতে বিপক্ষ বোলিং বিধ্বস্ত। একটা বল তো এত জোরে মাঠ পার করালেন যে, সেটা নিকো পার্কের আশেপাশে গিয়ে পড়লে আশ্চর্যের হবে না! ‘‘শেষ তিন ম্যাচে রান পাইনি তাই আজ ফাইনালে বাড়তি প্রস্তুতি নিয়ে নেমেছিলাম। ঠিক করে ফেলেছিলাম, আজ আক্রমণই হবে আমার রক্ষণের সেরা অস্ত্র,’’ ম্যাচের পর বলছিলেন ফাইনাল সেরা সরফরাজ। বলছিলেন, টিমের অন্যতম অভিজ্ঞ প্লেয়ার হলেও নিজেকে সিনিয়র হিসেবে দেখেন না। আর পাঁচ জন সতীর্থের সঙ্গে নিজেকে রাখেন একই স্তরে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে একটা ম্যাচ জেতানোর পর হাতজোড় করে তাঁকে কৃত়জ্ঞতা জানিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। বারবার বলেছিলেন তরুণের প্রতিভার কথা। সরফরাজের ক্রিকেট-কক্ষপথ যদি দিগ্‌ভ্রষ্ট না হয়ে যায়, তা হলে কে বলতে পারে, অদূর ভবিষ্যতে একই দৃশ্য আবার দেখা যাবে না? আইপিএল নয়, দেশের জার্সিতে। সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ১১৬ (নাজমুল ৪৫, ময়ঙ্ক ডাগার ৩-৩২), ভারত ১১৭-৩ (সরফরাজ ৫৯ ন.আ.)। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×