ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মুশফিকের সিলেট অবশেষে জয় পেল

প্রকাশিত: ০৫:২০, ১ ডিসেম্বর ২০১৫

মুশফিকের সিলেট অবশেষে জয় পেল

স্পোর্টস রিপোর্টার চট্টগ্রাম থেকে ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) তৃতীয় আসরে ৪ ম্যাচ পর জয়ের মুখ দেখল মুশফিকুর রহীমের সিলেট সুপার স্টারস। টানা চার ম্যাচ হারের পর সোমবার নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে এসে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে সিলেট। অবশেষে জিতে ক্রিকেটাররা স্বস্তিও পেয়েছে। শিশিরের সমস্যার জন্য মাশরাফিও আগেই ফিল্ডিং করার ভাবনা করেছিলেন। কিন্তু মুশফিক টস জিতে আগে ফিল্ডিং নিয়ে নিয়েছেন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স আগে ব্যাট করার সুবিধা নিল ঠিকই। কিন্তু সিলেটেও পরে ব্যাট করার সুবিধায় জিতেই গেল। আসহার জাইদির অপরাজিত ৫৩, ইমরুল কায়েসের ৪৮ ও লিটন কুমার দাসের ৪২ রানে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রান করল কুমিল্লা। রবি বোপারা একাই ৪ উইকেট নিলেন। জবাবে বোপারার ৫০, মুশফিকের ৪৭ ও মুনাভিরার ৩৬ রানে এবং ২ বল বাকি থাকতে নাজমুল হোসেনের মিলনের ছক্কায় ১৯.৪ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান করে জিতল সিলেট। কুমিল্লা এ ম্যাচটির আগে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ছিল। ৪ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট পেয়েছিল। টানা তিন ম্যাচে জিতেছিল। প্রথম ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে ৬ উইকেটে হারের পর চিটাগং ভাইকিংসকে ৭ উইকেটে, বরিশাল বুলসকে ৮ উইকেটে ও রংপুর রাইডার্সকে ৯ উইকেটে হারিয়ে দেয়। সোমবার হারের স্বাদ পায়। সিলেটের কাছে হারে। তবে পয়েন্ট তালিকায় তাদের অবস্থানের কোন পরিবর্তন হয়নি। কুমিল্লা যেখানে সবার উপরে ছিল, সেখানে পয়েন্ট তালিকায় তলানিতে অবস্থান ছিল সিলেটের। টানা ৪ ম্যাচের চারটিতেই হেরেছিল। প্রথম ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসের কাছে ১ রানে হারের পর বরিশাল বুলসের কাছেও সমান রানে হারে। তৃতীয় ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের কাছেও ৬ রানে হারে। দুর্ভাগ্য সিলেটের জয়ের কাছাকাছি গিয়েও জয় পায়নি। চতুর্থ ম্যাচে গিয়ে হারের ব্যবধান বাড়ে। এবার ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে ৩৪ রানে হেরে ঢাকায় মিরপুরে চার ম্যাচ খেলে সবটিতে হার হয় নিয়তি। এবার চট্টগ্রামে এসে ভাগ্য বদলায় সিলেটের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ খেলার জন্য কুমিল্লার মারলন স্যামুয়েলস আগেই চলে গেছেন। বোলিং ত্রুটির জন্য সুনীল নারিন খেলতে পারেননি। এ দুই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার ছাড়াই খেলতে হয়েছে কুমিল্লাকে। শুরুতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে কুমিল্লা। লিটনের আউটের মধ্য দিয়ে ৫৬ রানে গিয়ে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। বোপারা উইকেট শিকার করেন। ১০ রানের মধ্যেই আরও দুই উইকেটের পতন ঘটে। নবম ওভারে যখন কুমিল্লার স্কোরবোর্ডে ৬৬ রান জমা হয়, তখন মুক্তার আলী (১) ও শুভগত হোমকে (০) আউট করে দেন বোপারা। দল খানিকটা বিপদে পড়ে। তবে সেই বিপদ দূর করে দেন ইমরুল কায়েস ও আসহার জাইদি। দুইজনে মিলে চতুর্থ উইকেটে ৬২ রানের জুটি গড়েন। দল ১২৮ রানে পৌঁছাতেই ইমরুলও (৪৮) আউট হন। বোপারাই এ উইকেটটিও শিকার করেন। এরপর জাইদি ও মাশরাফি মিলে দলকে ১৬৪ রানে নিয়ে যান। জাইদি ৫৩ ও মাশরাফি ১০ রানে অপরাজিত থাকেন। সিলেটে শুরু থেকেই জবাবটা ভাল দেয়। ৩২ রানে মুমিনুল হক (৯) ও ৫২ রানে দিলশান মুনাভিরা (৩৬) আউট হন। এরপর আর কোন উইকেটই পড়ছিল না। সিলেটও জয়ের কাছাকাছি চলে যায়। যখন ১৯ বলে জিততে ২৬ রানের প্রয়োজন থাকে তখন ৪৭ রান করা মুশফিকুর রহীমকে আউট করেন কুলাসেকারা। আউটের আগে বোপারার সঙ্গে ৮৭ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। জিততে যখন ৯ বলে ৮ রান দরকার থাকে এমন সময় কুলাসেকারার বলে লং অনে হাম্মাদ আজম (১৩) শুভগতর তালুবন্দী হন। ৬ বলে জিততে ৪ রান লাগে। আবু হায়দার রাহি বল করতে আসেন। ১ বলে ১ রান হয়। দ্বিতীয় বলেই ৫০ রান করা বোপারাকে আউট করে দেন রাহি। শেষ মুহূর্তে এসে খেলা জমে ওঠে। পরের বলেই আবার শেহান জয়াসুরিয়াকে (১) বোল্ড করে দেন রাহি। হ্যাটট্রিকের আশা জাগান। সেই সঙ্গে সিলেট চাপেও পড়ে যায়। ৩ বলে ৩ রান প্রয়োজন থাকে। ছক্কাই হাঁকিয়ে দেন নাজমুল হোসেন মিলন। ২ বল বাকি থাকতেই জিতে যায় সিলেট। এবার বিপিএলে প্রথম জয়ও পায়। বোপারা এতদিন নৈপুণ্য দেখাতে পারছিলেন না। এবার দেখালেন, সিলেটও জিতল। স্কোর ॥ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১৬৪/৫; ২০ ওভার (লিটন ৪২, ইমরুল ৪৮, মুক্তার ১, শুভগত ০, আসহার ৫৩*, কাপালী ২, মাশরাফি ১০*; বোপারা ৪/১৮)। সিলেট সুপার স্টারস ১৬৮/৬; ১৯.৪ ওভার (মুনাভিরা ৩৬, মুমিনুল ৯, বোপারা ৫০, মুশফিক ৪৭, আজম ১৩, শেহান ১, নুরুল ০*, মিলন ৬*; রাহি ৪/২৮, কুলাসেকারা ২/৩১)। ফল ॥ সিলেট সুপার স্টারস ৪ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ রবি বোপারা (সিলেট সুপার স্টারস)।
×