ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

না’গঞ্জে ৭ খুন

চন্দন সরকার ও গাড়ি চালক ইব্রাহিম হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ১১ জানুয়ারি

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১ ডিসেম্বর ২০১৫

চন্দন সরকার ও গাড়ি চালক ইব্রাহিম হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ১১ জানুয়ারি

নিজস্ব সংবাদদাতা, নারায়ণগঞ্জ, ৩০ নবেম্বর ॥ নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনে নিহত সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১১ জানুয়ারি ধার্য্য করেছে আদালত। আদালতে র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ ১৩ আসামির (সবাই র‌্যাবের সাবেক সদস্য) পক্ষে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানালে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। সোমবার বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৩ আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন। প্রথমে আসামিদের বিচারিক হাকিমের আদালত, পরে তাদের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতের বিচারক আশোক কুমার দত্তের আদালতে প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার চার সহযোগী হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটির দায়ের করা অপর মামলাটি বিচার কাজ শুরুর জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আদালতপাড়ার বাইরে নূর হোসেনের সমর্থকরা ব্যাপক শোডাউন করে। এ সময় নূর হোসেনের মুক্তির দাবিতে মিছিল করে। সকাল থেকে আদালতপাড়ায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। সকাল পৌনে ১০টার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে ঢাকা থেকে সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) তারেক সাঈদ, মেজর (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) এমএম রানাসহ ২৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী কাউন্সিলর সেলিনা ইসলাম বিউটি দায়ের করা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন জানান, সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যা মামলাটির অভিযোগ গঠনের জন্য জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত আগামী ১১ জানুয়ারি তারিখ ধার্য্য করেছে। এছাড়া র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, পুর্ণেন্দু বালাসহ ১৩ আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানালে শুনানি শেষে আদালত তা না মঞ্জুর করেছেন। তিনি বলেন, আমরা ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ এজন্য যে, যাকে নতুন পিপি নিয়োগ করা হয়েছে তার আচরণ ও তিনি আদালতে যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন তাতে মনে হয়েছে তিনি আসামিপক্ষের লোক। আসামিদের দ্বারা প্রভাবিত। তিনি আসামিদের জামিন আবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে জোরালো কোন বক্তব্য প্রদান করেননি। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা মামলার এজাহারকারীর কাছে সঙ্গে আলোচনা করে পিপির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। এই ধরনের আলোচিত মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে যদি দক্ষ ও যোগ্য পিপি না থাকে তবে মামলা পরিচালনা করা কোনক্রমেই সম্ভব নয়। কারণ এই পিপির সঙ্গে পূর্ব থেকে নূর হোসেনের সুসম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদসহ ১৩ আসামির পক্ষে জামিনের আবেদন করেন ঢাকা থেকে আসা পাঁচ আইনজীবী। আইনজীবী মোঃ ছরোয়ার মিয়া জানান, আমরা তারেক সাঈদসহ ১৩ আসামির পক্ষে জামিনের আবেদন জানালে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। আমরা তাদের জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে যাব। নূর হোসেন সমর্থকদের শোডাউন ॥ নূর হোসেনকে আদালতে হাজির করাকে কেন্দ্র করে তার সমর্থকরা আদালতপাড়া ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডে ব্যাপক শো-ডাউন করেছে। নূর হোসেনকে প্রিজন ভ্যানে আদালতে আনা-নেয়ার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের রাস্তার পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নূর হোসেনের সমর্থকরা সেøøাগান দেয়। ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘নূর হোসেনের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’, ‘নূর হোসেনের ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘নূর হোসেনের মিথ্যা মামলা তুলে নাও-নিতে হবে।’ নূর হোসেনের ভাই আব্দুল ছালামের নেতৃত্বে নূর হোসেনের মুক্তির দাবিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডে মিছিল করে। সিদ্ধিররগঞ্জে শিমরাইলের টেকপাড়া, আটি, সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার ও ওয়াপদা কলোনিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নূর হোসেনে সমর্থকরা আদালতপাড়ায় ও লিংকরোডে এনে জড়ো করা হয়। নাসিকের ৪ কাউন্সিলর সাসপেন্ড ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ জন কাউন্সিলরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিভাগ তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। বরখাস্ত হওয়া কাউন্সিলররা হলেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের ভাতিজা শাহ জালাল বাদল, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম ম-ল, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু।
×