ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এইডস প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২ ডিসেম্বর ২০১৫

এইডস প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এইডস প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে সমাজের সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার কমিয়েছে। এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমাতে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এইডস রোগী শূন্যের কোটায় আনতে হলে ডাক্তার, শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। এইডস এখনও বাংলাদেশে মহামারী হয়ে উঠতে পারেনি। সচেতন থাকলে দেশ থেকে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় আনা সম্ভব। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এ আহ্বান জানান। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিশ্ব এইডস দিবস-২০১৫ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব বিমান কুমার সাহা, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক নূর হোসেন তালুকদার, আইএনএইডস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর লিও কেনী, ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের চীফ অব হেলথ ডা. সাথিয়া ডোরাইসামি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এইডস প্রতিরোধ কার্যক্রম বাংলাদেশ সরকারের কাছে জাতীয় অগ্রাধিকার প্রাপ্তির একটি বিষয়। সরকার ও এনজিওদের যৌথ উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী ও এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা, সেবা ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই কর্মসূচীর আওতায় ১২টি সরকারী হাসপাতালে এইডস রোগ শনাক্ত করা, চিকিৎসা, আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এইডসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব সম্প্রদায় ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্ব এইডস দিবস পালন করে আসছে। ইউএন এইডসের তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষ এইডসে আক্রান্ত এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ মানুষ এ মরণঘাতী রোগে মৃত্যুবরণ করেছে। এবছর বাংলাদেশে (নবেম্বর ২০১৪ থেকে অক্টোবর ২০১৫) পর্যন্ত ৪৬৯ জন এইডসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ জন মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এদিকে, নানা কর্মসূচী পালনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ‘বিশ্ব এইডস দিবস’ পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসূতি ও ধাত্রীবিদ্যা বিভাগ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বর্ণাঢ্য পদযাত্রার আয়োজন করে। পদযাত্রাটির শুভ উদ্বোধন করেন বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আলী আসগর মোড়ল, প্রক্টর অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মোঃ আব্দুল মজিদ ভূঁইয়া, প্রিভেনশন অব মাদার টু চাইল্ড ট্রান্সমিশন অব এইচআইভির (পিএমটিসিটি) প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ সালেহা বেগম চৌধুরী, প্রসূতি ও ধাত্রীবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ পারভীন ফাতেমা, নবজাতক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল মান্নান, ডাঃ সঞ্জয় কুমার দেও ডাঃ মেরিনা আকতার। অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান বলেন, সরকারী পর্যায়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ২০১৩ সালের ১৬ মে থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস এ্যান্ড গাইনি বিভাগ এইচআইভি আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের সেবা প্রদান শুরু করে এবং বর্তমানেও তা চালু রয়েছে। তিনি জানান, ৩৫ জন এইচআইভি আক্রান্ত গর্ভবতী মাকে পিএমটিসিটি কার্যক্রমের আওতায় সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ২৬ মা সুস্থ সন্তান প্রসব করেছেন। ২৫ মা তাঁদের সন্তানকে বুকের দুধ খাইয়েছেন। এ পর্যন্ত ২২ শিশু পিসিআর পরীক্ষার মাধ্যমে এইচআইভি মুক্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে। বাকি শিশুদেরও পরীক্ষা করা হবে। বিনামূল্যে স্তন ক্যান্সার নির্ণয় উদ্বোধন ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কোন অশুভ শক্তির কাছে মাথা নত করবে না। একটি অশুভ শক্তি দেশকে অস্থিশীল করতে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে আইএসসহ জঙ্গীবাদের উৎস খুঁজে বেড়ায়। সরকারকে বিব্রত করতে তারা ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশে আইএস বা কোন জঙ্গীগোষ্ঠীর অস্তিত্ব নেই। মঙ্গলবার ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বিজয়ের মাস উপলক্ষে বিনামূল্যে স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের মাসব্যাপী উ™ে^াধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
×