ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিভিন্ন সংগঠনের সভা সমাবেশে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের দাবি

কড়া প্রতিবাদ জানাবে ঢাকা

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২ ডিসেম্বর ২০১৫

কড়া প্রতিবাদ জানাবে ঢাকা

তৌহিদুর রহমান ॥ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত হলেও নির্লজ্জ মিথ্যাচার শুরু করেছে পাকিস্তান। সে সময়ের গণহত্যার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করছে ইসলামাবাদ। দেশটির এই ধরনের বক্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা। এছাড়া ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির বিকৃত ব্যাখ্যা দিচ্ছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলবের পর ঢাকা-ইসলামাবাদ কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। এদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য আবারও জোরাল দাবি উঠেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পাকিস্তানে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলবের ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ ঢাকা। পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে, সেটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করে সরকার। এই লক্ষ্যে ঢাকার পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সোমবার এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দিনভর বৈঠক হয়েছে। সূত্র জানায়, পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সোহরাব হোসেইন এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। মঙ্গলবার তার সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এখন দুই দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মৌসুমী রহমানকে তলবের প্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোন মন্তব্য করার নৈতিক অধিকার পাকিস্তানের নেই। এছাড়া ১৯৭১ সালে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের কোন দায় নেই এটাও পুরোপুরি অসত্য। এ বিষয়ে কূটনৈতিক পরিসরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির বিকৃত ব্যাখ্যা দিচ্ছে পাকিস্তান। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পরিপন্থী বলে উল্লেখ করছে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তানের এই বক্তব্য পুরোপুরি মিথ্যা বলে মনে করে সরকার। কেননা গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, ধর্ষণ ও খুনের মতো ঘটনাগুলো ক্ষমার অযোগ্য ঘোষণা করেই চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। এসব অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য বলে ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ। এখন পাকিস্তান সরকার বলছে ‘এই চুক্তির আওতাতেই বাংলাদেশ সরকার সে সময় কোন বিচারের দিকে অগ্রসর না হয়ে ক্ষমা প্রদর্শন করেছিল। তবে এখন নতুন করে আবার সেই বিচার শুরু করেছে বাংলাদেশ’। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, পাকিস্তান সরকার ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অপব্যাখ্যা করছে। চুক্তিতে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধকে ক্ষমা অযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে পাকিস্তান সরকার অস্বীকারের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ওয়ালিউর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশে পাকিস্তানের গণহত্যা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। তারা অস্বীকার করলেই ঐতিহাসিক ঘটনা মিথ্যা হয়ে যাবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন লাইব্রেরি অব কংগেস ও ব্রিটিশ মিউজিয়ামেও বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে দলিল সংরক্ষিত আছে। সেসব দলিলে প্রমাণ রয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান সরকারের হামিদুর রহমান কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, বাংলাদেশে গণহত্যা ঘটেছে। পাকিস্তান সরকার থেকে গঠিত কমিশনের প্রতিবেদনেই উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে গণহত্যা হয়েছে। পাকিস্তান এই প্রতিবেদন কোনভাবেই অস্বীকার করতে পারে না। ঢাকা-ইসলামাবাদ টানাপোড়েন ॥ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মুজাহিদের মৃত্যুদ-ে নাখোশ হয়ে গত ২২ নবেম্বর প্রতিক্রিয়া জানায় পাকিস্তান। পাকিস্তানের ওই প্রতিক্রিয়ার প্রতিবাদে গত ২৩ নবেম্বর দেশটির ঢাকায় নিযুক্ত হাইকমিশনার সুজা আলমকে তলব করে সরকার। সে সময় পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে জানিয়ে দেয়া হয়, পাকিস্তান সরকার সরাসরি এখন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তান সরকার কোনভাবেই যেন আর হস্তক্ষেপ না করে, সে বিষয়ে তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। ১৯৭১ সালের গণহত্যার বিচারের লক্ষ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতি বাংলাদেশে সাধারণ নাগরিক ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন রয়েছে বলেও জানানো হয় পাকিস্তানী হাইকমিশনারকে। তবে এই বিচার নিয়ে পাকিস্তান যা বলছে, সেটা অগ্রহণযোগ্য ও অনাকাক্সিক্ষত বলেও উল্লেখ করে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলবের সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের একজন সদস্য আগেই জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করা হবে। এরপর গত সোমবার পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মৌসুমী রহমানকে তলব করে পাকিস্তান সরকার। তাকে তলবের পর ১৯৭১ সালের হত্যাকা-ে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে পাকিস্তান। এখন তলব ও পাল্টা তলব নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। এই ঘটনার পর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আবারও প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার ॥ ১৯৭১ সালে সংঘটিত গণহত্যা বা নৃশংসতাকে পাকিস্তান অস্বীকার করেছে। সোমবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে একাত্তরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও ধারণাপ্রসূত হিসেবে আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। পাকিস্তান বলেছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে নৃশংসতার কোন ঘটনা ঘটেনি। আর গণহত্যার ঘটনার জন্য পাকিস্তানের কোন দায় ছিল না। পাকিস্তানের ওপর আনা এসব অভিযোগ সত্য থেকে অনেক দূরে। গত ২৩ নবেম্বর বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে ভিত্তিহীন ও অমূলক অভিযোগ এনে নোট ভারবাল দিয়েছিল তাও প্রত্যাখ্যান করে পাকিস্তান সরকার। একই সঙ্গে যুদ্ধের নৃশংসতায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততা নিয়ে যে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল তাও প্রত্যাখ্যান করা হয়। কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের দাবি ॥ পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলবের পর ১৯৭১ সালের গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করায় পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠন। মঙ্গলবার সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, গণজাগরণ মঞ্চ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়। সেক্টর কমান্ডার ফোরামের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) কে এম সফিউল্লাহ বলেছেন, দেশে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুতে পাকিস্তান যে ধরনের উদ্বেগ, বিবৃতি ও প্রতিবাদ জানিয়েছে, এরপর দেশটির সঙ্গে কোন ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখাই উচিত নয়। এ দেশ কখনও পরাজিত হওয়ার নয়। দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তরুণ প্রজন্মকে সামনে এগিয়ে আসতে হবে। দেশবিরোধীদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। এছাড়া মঙ্গলবার সেক্টর কমান্ডার ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, নির্বিচার ধ্বংসযজ্ঞ ও অগণিত নারী নির্যাতনের দায় অস্বীকার করা পাকিস্তানের আরেক ঐতিহাসিক পাপ। ইতিহাস থেকে তারা কোন শিক্ষা গ্রহণ করেনি। পাকিস্তান সরকারের এই ধরনের বিবৃতি ইতিহাসেরই চরম বিকৃতি নয় কেবল, একই সঙ্গে নির্লজ্জ মিথ্যাচারের শামিল বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এদিকে পাকিস্তানকে ‘দাঁত ভাঙা’ জবাব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে গণহত্যায় পাকিস্তানের দায় অস্বীকার করার তীব্র সমালোচনা করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। সরকারকে এর ‘দাঁত ভাঙা’ জবাব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গণজাগরণ মঞ্চ বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছে, একাত্তরে গণহত্যার দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা এবং ক্ষতিপূরণ প্রদানের পূর্ব পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করে দেয়া হোক। এছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন ও সার্ক থেকে দেশটির সদস্যপদ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। পাকিস্তানের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোন সম্পর্ক রাখবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা চত্বরে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজয় শোভাযাত্রা ও সমাবেশে এ দাবি জানান তিনি। ‘যুদ্ধাপরাধী মুক্ত বাংলাদেশ চাই’ এই সেøাগানে শোভাযাত্রাটি বের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পরে স্বাধীনতা চত্বরে মুক্তির গান, বিজয়ের গান পরিবেশন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আরেফিন সিদ্দিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এবং বিজয় অর্জিত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে পাকিস্তানীরা বিভিন্ন ধরনের অন্যায়-অত্যাচারে লিপ্ত ছিল ও ঠা-া মাথায় অত্যন্ত নির্মমভাবে বুদ্ধিজীবীসহ অনেক সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ ছিল বিশ্ব সভ্যতার বিরুদ্ধে অপরাধ। আজ তারা নির্লজ্জ মিথ্যাচার করছে। অথচ পাকিস্তান কর্তৃক গঠিত হামিদুর রহমান কমিশনেই গণহত্যার দালিলিক তথ্য প্রমাণ রয়েছে। তিনি বলেন, পাকিস্তানে এই বিবৃতি একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের হস্তক্ষেপ। এরপর পাকিস্তানীদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখার কোন সুযোগ নেই। তাই অবিলম্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সকল কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হোক। মানবাধিকারের প্রবক্তা জাতিসংঘ থেকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র পাকিস্তানকে বহিষ্কারের সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়ারও দাবি জানান তিনি। পাকিস্তানের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোন সম্পর্ক রাখবে না ঘোষণা করে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ছাত্র-প্রতিনিধি পাকিস্তানে যাবে না। এছাড়া একাত্তরের গণহত্যা নিয়ে পাকিস্তানের দায় অস্বীকার করার ঘটনায় গণসংহতি আন্দোলন পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে। মঙ্গলবার গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া একাত্তরের গণহত্যার দায় অস্বীকার করার ঘটনায় সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। গণহত্যা স্বীকার করেছে পাকিস্তানীরাই ॥ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীর প্রধান আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী তার যুদ্ধকালীর স্মৃতি নিয়ে লিখেছেন ‘বিট্রায়াল অব ইস্ট পাকিস্তান’। এই বইয়ে তিনি বলেন, কেবল ২৫ মার্চ রাতেই শুধু ঢাকাতেই ৫০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়’। এছাড়া পাকিস্তানের প্রয়াত মেজর জেনারেল খাদিম হুসেন রাজা তাঁর ‘এ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওন কান্ট্রি: ইস্ট পাকিস্তান’ বইয়ে লিখেছেন, ‘যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনাসদস্যদের বাঙালী নারীদের ওপর লেলিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন পাকিস্তানের লে. জেনারেল এ এ কে নিয়াজী। শুধু তাই নয়, বাঙালী জাতিগোষ্ঠী পরিবর্তিত হয়ে নতুন জাতিগোষ্ঠী সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত বাঙালী নারীদের ওপর সেনাদের নির্যাতন চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি’। পাকিস্তানী জেনারেলদের লেখা এমন অনেক বইয়ে ১৯৭১ সালে গণহত্যা স্বীকারের বিষয়টি উঠে এসেছে। তবে তারপরও এখন নির্লজ্জভাবে মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান।
×