ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লুইসের শতকে বরিশালের আয়েশি জয়

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২ ডিসেম্বর ২০১৫

লুইসের শতকে বরিশালের আয়েশি জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে ॥ অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোশাররফ হোসেন রুবেলের বলে সুইপ করে মিডউইকেট দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকালেন এভিন লুইস। বল গেল গ্যালারিতে। সঙ্গে সঙ্গে মমতাজের গান বাজল, ‘পোলা তো নয় সে যে আগুনেরই গোলা রে..।’ আবার যখন ১২তম ওভারে ডয়েশচেটের ওভারে ছক্কার পর ছক্কা, চারের পর চার হাঁকিয়ে ২৬ রান নেন, তখন প্রতিটি বাউন্ডারির সময়ই আবার একই গান বাজে। সত্যি সত্যিই আগুনের গোলা হয়েই উপস্থাপন হলেন লুইস। বিপিএলের তৃতীয় আসরে প্রথম শতক করলেন। ৬৫ বলে ৭ চার ও ৬ ছক্কায় অপরাজিত ১০১ রান করলেন। তার এ দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ৯ উইকেটে হারিয়ে দিল বরিশাল বুলস। আরাম আয়েশে খেলে ঢাকাকে হারাল বরিশাল। বিপিএলের তৃতীয় আসরে ৫ ম্যাচের ৪টিতেই জিতে গেল বরিশাল। ঢাকা ৫ ম্যাচ খেলে ২টিতে হারল। ম্যাচে টস জিতে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল। পড়ে যারা বোলিং করেন, তাদের সমস্যায় ফেলে শিশির। এজন্য আগেই ফিল্ডিং নেয় বরিশাল। তাতে সাফল্যও মিলে বরিশালের। আগে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারার ৬০ ও রায়ান টেন ডয়েশচেটের অপরাজিত ৪৫ রানে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান করে ঢাকা। কেভন কুপার ২ উইকেট নেন। জবাবে এক লুইসই অপরাজিত ১০১ রান করেন। ৮ বল বাকি থাকতেই মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান করে জিতে বরিশাল। প্রথম উইকেটেই মূলত বরিশাল জয়ের স্বাদ নিতে থাকে। রনি তালুকদার (৩৮) ও লুইস মিলে ১২৭ রানের জুটি গড়েন। এর আগে ১২তম ওভারে লুইস যে কা- করেন, তা ক্রিস গেইলকেই মনে করিয়ে দিয়েছে। ডয়েশচেটের এক ওভারেই ২৬ রান নেন। পরপর দুই বলে ছক্কা হাঁকিয়ে তৃতীয় বলে বাউন্ডারি, চতুর্থ বলে আবার ছক্কা ও পঞ্চম বলে আবার চার হাঁকান লুইস। আরেকটি ওয়াইড হওয়াতে এক ওভারেই ২৭ রান ওঠে। ১১ ওভারে যেখানে দলের রান থাকে ৯১, সেখানে মুহূর্তেই ১২তম ওভারে গিয়ে ১১৮ রান হয়ে যায়। ঢাকায় ৬ ডিসেম্বর বরিশালের হয়ে যখন এবারের টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবেন গেইল, তখন গেইল-লুইস জুটির ধুমধারাক্কা ব্যাটিং যেন এখনই চোখে ভাসতে শুরু করে দিয়েছে। ১৮তম ওভারের শেষ বলে এক রান নিয়ে লুইস প্রথম শতক পূরণ করেন। এর আগে বিপিএলে ৭টি শতক হয়। এরমধ্যে বিপিএলের প্রথম আসরে ক্রিস গেইল (১০১*) যে শতক করেন, সেটি বিপিএলেরই প্রথম শতক ছিল। সেই শতকটিও অপরাজিত ১০১ রানের হয়। বরিশালের হয়েই করেন গেইল। দ্বিতীয় আসরে খুলনার হয়ে শাহরিয়ার নাফীস অপরাজিত ১০২ রান করে আসরের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হন। তৃতীয় আসরে লুইস করেন প্রথম সেঞ্চুরি। শেষে গিয়ে মেহেদী মারুফকে (১৫*) নিয়ে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন ম্যাচ সেরা লুইস। ঢাকার ইনিংসে টি২০’র আমেজে মিলেছে বলতে গেলে শেষ ওভারেই। তৃতীয় ও পঞ্চম বলে ওয়েলার ও ডয়েশচেট ছক্কা হাঁকান। রানও এই ওভারেই একটু বেড়ে যায়। ১৯ ওভারে ১৪১ থাকে, সেখান থেকে ১৫৮তে চলে যায় ঢাকা। ৭৩ রানেই ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর দল চাপের মধ্যে পড়ে। তবে সাঙ্গাকারা হাল ধরে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। তার সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে যে ডয়েশচেটের ৫৯ রানের জুটি হয়, সেখানেই ঢাকা কিছুটা এগিয়ে যায়। না হলে আরও কম রান হতে পারত। এরপর ওয়েলার (১০*) ও ডয়েশচেট মিলে ইনিংসের বাকিটা সময় খেলেন। কিন্তু স্কোরবোর্ডে রান এত বেশি জমা হয়নি, যতটা হলে বরিশাল চাপে পড়তে পারত। তাইতো সহজেই জয় পায় বরিশাল। স্কোর ॥ ঢাকা ডায়নামাইটস ১৫৮/৫; ২০ ওভার (সৈকত ১৫, সাঙ্গাকারা ৬০, থিরিমান্নে ৫, নাসির ৫, আবুল ৮, ডয়েশচেট ৪৫*, ওয়েলার ১০*; প্রসন্ন ২/২৩, কুপার ২/৩০) বরিশাল বুলস ১৫৯/১; ১৮.৪ ওভার (রনি ৩৮, লুইস ১০১*, মারুফ ১৫*)। ফল ॥ বরিশাল বুলস ৯ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা ॥ এভিন লুইস (বরিশাল বুলস)।
×