স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ জেলায় চলছে সার ব্যবসায়ীদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট। প্লাস্টিকের বস্তায় সার বিক্রির অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীদের জরিমানা করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকে ওই ধর্মঘট শুরু করেন জেলার সকল সার ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ী। এমন ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ কৃষক। সার কিনতে এসে অনেকে ফিরেছেন খালি হাতে। মঙ্গলবার নীলফামারী সদরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পাইকারী ও খুচরা সারের দোকান বন্ধ। এ সময় সার কিনতে আসা জেলা সদরের টুপামারী ইউনিয়নের কিষামত দোগাছী গ্রামের কৃষক সন্তোষ কুমার রায় (৩৪) বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘুরেছি সার কেনার জন্য।
দোকান বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছি। আমার জরুরী প্রয়োজন থাকায় অবশেষে এক দোকানদারকে অনেক অনুরোধ করে ১০ কেজি ইউরিয়া, ২৫ কেটি টিএসপি, সাড়ে ১২ কেজি পটাশ সার সংগ্রহ করেছি।’ দোকান বন্ধ থাকায় সার কিনতে আসা অনেক কৃষককে খালি হাতে ফিরে যেতে দেখেছেন বলে জানান তিনি।
জেলা শহরের বড়বাজারের ডালপট্টি এলাকার খুচরা সার ব্যবসায়ী সন্তোষ দেব রায় বলেন, ‘প্লাস্টিকের সারের বস্তা নিয়ে আতঙ্কে আছি।
বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর পাচ্ছি, ওই বস্তার কারণে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করছে প্রশাসন। এমন জরিমানার প্রতিবাদে সার ব্যবসায়ীদের সংগঠনের পক্ষে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট ডেকেছে। এ কারণে আমার দোকান বন্ধ রেখেছি।’ একই কথা জানান জেলা সদরের পলাশবাড়ি ইউনিয়নের বিসিআইসি সার ডিলার পোদ্দার ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপক জিতেন বায়।
নীলফামারী জেলা ফার্টিলাইজার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ সরকার জানান, প্লাস্টিকের বস্তায় সার বিক্রি ও পরিবহনের সময় পথিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেছে প্রশাসন। এরই প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে মঙ্গলবার সকাল থেকে সারা দেশের ন্যায় জেলায় অনির্দিষ্ট কালের ওই ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে জানান, প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে বাধ্য করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের প্রতিবাদে ধর্মঘট কর্মসূচী পালন করছেন সার ব্যবসায়ীরা। সারাদেশে চলছে এই ধর্মঘট। সার ব্যবসায়ীরা কারখানা ও গুদাম থেকে সার খালাস নিচ্ছেন না।
বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি নাছির উদ্দিন এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ধর্মঘট। পাটের ব্যাগ ব্যবহারে বাধ্য করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের প্রতিবাদে সার উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। গত ৩০ নবেম্বর এ অভিযান চলছিল। তিনি আগের মতো পিপি ব্যাগ চালু রাখার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উত্তোলন বন্ধ
স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জানান, প্লাস্টিকের পরিবর্তে পাটের বস্তায় সার প্যাকেটজাতকরণের সরকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে দাবিতে ফার্টিলাইজার এ্যাসোসিয়েশনের ডাকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দুপুরে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানা থেকে ৭ জেলায় সার উত্তোলন ও কৃষক পর্যায়ে সার বিক্রয় বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা। এতে করে আশুগঞ্জ সার কারখানার কমান্ড এরিয়াভুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ জেলায় ৭শ’ ৪৮ জন ডিলার তাদের সার উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধ রেখেছে ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: