ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘সুদের হার বাড়ানোর প্রস্তাব কোনোভাবেই মানা যায় না’

প্রকাশিত: ২১:৫০, ২ ডিসেম্বর ২০১৫

‘সুদের হার বাড়ানোর প্রস্তাব কোনোভাবেই মানা যায় না’

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে প্রবেশ করায় বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এরই মধ্যে সুদের হার বাড়াতে চাচ্ছে। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কেননা, আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে যাব, এটি সত্যি। কিন্তু তাই বলে এখন থেকেই সুদের হার বেশী দিতে হবে- এটা কোনো কথা না।’ ‘স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণে বাংলাদেশের অগ্রগতি পর্যালোচনা’ সংক্রান্ত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। অনুষ্ঠানে খসড়া রিপোর্টের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মোঃ আলকামা সিদ্দিক এবং সভাপতিত্ব করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ মেজবাহউদ্দিন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার ঘোষনা দেওয়ায় ইতোমধ্যেই জাপানসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ঋণের সুদ বাড়ানোর নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং দাতাদের সুদ বাড়ানোর চেষ্টা প্রতিরোধ করতে হবে। ’ এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘কেননা, জাতিসংঘের ঘোষণা আসবে ২০১৮ সালে তারপরও তিন বছর আমরা সুযোগ-সুবিধা পাবো। তাই ২০২১ সালের আগে মধ্যম আয়ের দেশে যাব -এটা সত্যি। কিন্তু এখনই সুদ বাড়ানোর কারণ নেই।’ মুহিত বলেন, ‘আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছি। কিন্তু কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে কলেজ সরকারিকরণ করা হলেই শিক্ষকরা ঢাকায় আসতে চান। অনেকেই ঘরে বসে বসে বেতন নেন, কাজ করেন না।’ তিনি বলেন, ‘স্থাস্থ্য খাতেও সমস্যা রয়েছে। যেমন- কমিউনিটি ক্লিনিকে মানুষের ভিড় হয়, বসার জায়গা থাকে না। কিন্তু থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে অনেক বড় ভবন থাকলেও রোগী থাকে না। বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে খতিয়ে দেখতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলোর ভাল কাজ করছে। এনজিওদের কার্যক্রম কোন কোন সময় নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এটি যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘গ্রামীণ অর্থনীতি বদলে গেছে। বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন হয়েছে। মাতৃ মৃত্যু ও শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে অগ্রগতি অনেক। আমরা মধ্যম আয়ের দেশে গেলে সুবিধা বঞ্চিত হব কি না, সে সব বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। এ জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধার বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমেরিকা ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আমাদের ডিউটি ফ্রি সুবিধা দিচ্ছে। বিশেষ করে চীন ও জাপান অনেক পণ্যে সুবিধা দিচ্ছে। আমেরিকা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে পাশ কাটিয়ে যে টিপিপি চুক্তি করেছে, এতে বাংলাদেশের কোন সমস্যা হবে না।’ সভায় জানানো হয়, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হতে হলে যে তিনটি নির্দেশক রয়েছে তার মধ্যে দুটি যেমন মাথাপিছু আয় ও মানব উন্নয়নে অগ্রগতি হয়েছে। এছাড়া অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রটি এখনও খারাপ অবস্থানে রয়েছে।
×