ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতু নির্মাণে কর্মযজ্ঞ বেড়েই চলছে, প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন ১২ ডিসেম্বর

মাওয়া প্রান্তে সাজানো হচ্ছে বিশাল পাইপ, মূল পাইলিংয়ের ব্যাপক প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৩ ডিসেম্বর ২০১৫

মাওয়া প্রান্তে সাজানো হচ্ছে বিশাল পাইপ, মূল পাইলিংয়ের ব্যাপক প্রস্তুতি

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ থেকে ॥ পদ্মা সেতুর কর্মযজ্ঞ বেড়েই চলছে। প্রধানমন্ত্রীর পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল সেতু এবং নদী শাসন কাজ উদ্বোধনের বাকি আর মাত্র ৯ দিন। এই ক্ষণটি যতই এগুচ্ছে কর্ম ব্যস্ততা ততই যেন বাড়ছে। নদী শাসন এবং মূল পাইলের কাজ শুরুর জন্য বিশাল প্রস্তুতি এখন চোখে পড়ার মতো। প্রায় লাখ ব্লক সাজিয়ে রাখা হয়েছে নদী শাসন কাজের জন্য। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পরপরই এসব ব্লক ফেলা হবে পদ্মায়। ড্রেজিংও চলছে পুরোদমে। একইভাবে মূল পাইলিংয়ের জন্য বিশাল বিশাল পাইপ সাজানো হচ্ছে মাওয়া প্রান্তের সাত নম্বর পিলার ঘিরে। এই সাত নম্বর পিলারের কাজ উদ্বোধন হলেও মাওয়া প্রান্তে চার, পাঁচ ও ছয় নম্বর মোট চারটি পিলার পয়েন্টে মূল পাইল স্থান করা হবে একযোগে। তাই হুলুস্থূল কর্মযজ্ঞ এখানে। বিশাল ওয়ার্কসপ থেকে এসব পাইপ নদীতে যাচ্ছে জাহাজে করে। এছাড়া আগামী বর্ষা মৌসুমে যাতে পদ্মার ভাঙ্গন প্রকল্পের ধারে কাছেও আসতে না পারে সেভাবেই এই শুষ্ক মৌসুমে নদী শাসনে মূল কাজ করা হচ্ছে পরিকল্পনা মাফিক। এসব খুঁটিনাটি তথ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) আব্দুল কাদের জানান, প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্বোধনের পরপরই মূল সেতুর কাজ এমনভাবে চলবে যা আর ধীরে চলার সুযোগ থাকবে না। সেভাবেই কর্মপরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। আর এসব কারণেই অক্টোবরের পরিবর্তে ডিসেম্বরে মূল পাইলিংযের এই উদ্বোধনী ক্ষণ ঠিক করা হয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং জনসভা নিয়েও প্রস্তুতি সাভ চলছে। বুধবার প্রস্তুতি সভা হয়েছে গজারিয়া উপজেলায়। সোমবার লৌহজংয়ের কুমারভোগে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা নিয়ে দিনভর জেলা আওয়ামী লীগের সভা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে এই জনসভায় অন্তত দেড় লাখ মানুষের অংশগ্রহণ থাকবে। বিপুল সংখ্যক এই মানুষের সমাবেশে আসা এবং বসার জায়গাসহ পুরো জনসভাটি সফল করতে বেশ কয়েকটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই প্রস্তুতি সভায় অংশ নেন জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মোঃ মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং অন্যান্য নেতা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লৌহজং, টঙ্গীবাড়ি, সিরাজদিখান ও গজারিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকগণ। লৌহজং উপজেলার চেয়ারম্যান ওসমান গনি তালুকদারের বাসভবনে এই প্রস্তুতি সভায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভাটি সফল করতে নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। লৌহজং উপজেলার চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ওসমান গনি তালুকদার জানান, দেড় লাখ মানুষের উপস্থিতির টার্গেট নিয়েই আমরা এগোচ্ছি। এছাড়া রবিবার শরীয়তপুরে এবং পদ্মা সেতুর দোড়াছি সার্ভিস এরিয়ায় সরকারীভাবে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সভায় জানানো হয় ১২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে শরীয়তপুরের জাজিরার উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। বেলা ১০টায় জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল সেতু এবং নদী শাসন কাজের উদ্বোধন করবেন। সাড়ে ১১টায় লৌহজং উপজেলার মাওয়া পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা। ১২টায় মাওয়া পয়েন্টে পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল সেতু এবং নদী শাসন কাজের উদ্বোধন করবেন। এতে চায়না মেজর ব্রিজের প্রজেক্ট ম্যানেজার লিউ জিন হুয়ার উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। আধা ঘণ্টার এই অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী দোগাছির সার্ভিস এরিয়া-১ নামাজ আদায় ও মধ্যাহ্নভোজ করবেন। এদিন দুপুর আড়াইটায় লৌহজং গোল চত্বরে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। এরপর সোয়া ৪টায় হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় রওনা হবেন। গজারিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি সভা ॥ ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জেলার সর্বত্র বইছে উৎসবের আমেজ। এই আগমন নিয়ে নানা প্রস্তুতি চলছে এখানে। বুধবার বিকেলে গজারিয়া উপজেলার ভাটেরচর দে. এ. মান্নান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রস্তুতি সভা করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
×