ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ

বিকেএসপিতে নিবিড় অনুশীলনে ফুটবলাররা

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৩ ডিসেম্বর ২০১৫

বিকেএসপিতে নিবিড় অনুশীলনে ফুটবলাররা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতের কেরালায় অনুষ্ঠিত হবে ‘সাফ অঞ্চলের ফুটবল বিশ্বকাপ’ খ্যাত ‘সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ।’ এতে অংশ নেবে সাফ অঞ্চলের সাত দেশÑ স্বাগতিক ভারত, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ভুটান। আফগানিস্তান এবারই শেষবারের মতো সাফ ফুটবল খেলবে। এরপর তারা আসিয়ান অঞ্চলের তালিকাভুক্ত হয়ে যাবে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর এই টুর্নামেন্টের গ্রুপিং ড্র হয় ভারতের দিল্লীতে। কঠিন গ্রুপেই পড়েছে বাংলাদেশ। ‘বি’ গ্রুপে অবস্থান ‘বেঙ্গল টাইগার্স’দের। যেখানে তাদের সঙ্গী গতবারের সাফ চ্যাম্পিয়ন আফগানিস্তান। রয়েছে শক্তিশালী মালদ্বীপ এবং ভুটান। তুলনামূলক ভুটানই বাংলাদেশের কাছে স্বস্তিকর প্রতিপক্ষ। অন্যদিকে ‘এ’ গ্রুপে পড়েছে সর্বোচ্চ ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। সঙ্গে আছে নেপাল ও শ্রীলঙ্কা। অপর দল পাকিস্তান টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। উল্লেখ্য, এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সাফ ফুটবলের আয়োজন করতে যাচ্ছে ভারত। বাংলাদেশ দল তাদের আনুষ্ঠানিক অনুশীলন শুরু করেছে গত ২৮ নবেম্বর থেকে সাভারের জিরানির বিকেএসপিতে নতুন কোচ মারুফুল হকের অধীনে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তান দলটি আরব আমিরাতের দুবাইতে গিয়ে অনুশীলন করবে বলে জানা গেছে। ভুটান অনুশীলন করছে নিজেদের দেশেই। নেপালও তাই। তবে তারা অনুশীলনের জন্য খুঁজছে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের ভেন্যু। পছন্দের তালিকায় আছে কাতার, কুয়েত এবং বাহরাইন। কিছুদিন আগে তারা দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করে এসেছিল, সেটা অবশ্য বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলা উপলক্ষে। এদিকে মালদ্বীপের প্রধান গোলরক্ষক ইমরান মোহাম্মদ হাঁটুর ইনজুরি কাটিয়ে আবারও জাতীয় দলের অনুশীলনে ফিরেছেন। সাফের আগে বাংলাদেশ দল কোন অনুশীলন বা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে? এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বলেন, ‘এ বছরের শুরুতে বাফুফের পরিকল্পনা ছিল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে তিন-চার দিনের জন্য অনুশীলন করা। এ ব্যাপারে সব প্রক্রিয়া সম্পন্নও করা হয়েছিল। কিন্তু আসা-যাওয়ায় সময় নষ্ট হবে বলে প্রধান কোচ মারুফুল সেখানে না যাওয়াটাই সমীচীন হবে বলে যুক্তি পেশ করেন। বাফুফেও সেটা মেনে নিয়েছে।’ এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ফুটবল প্রতিযোগিতা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের নাম বদলে গেছে। এ আসরের নতুন নাম ‘সাফ সুজুকি কাপ।’ এ নামেই অনুষ্ঠিত হবে এ প্রতিযোগিতার একাদশ আসর। এই প্রথম সাফের টাইটেল স্পন্সর হল সুজুকি মটর কর্পোরেশন। তাদের আগ্রহেই টুর্নামেন্টের নাম বদলেছে সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনকে (সাফ)। এর আগে টুর্নামেন্টটির নামগুলো ছিল যথাক্রমে ‘সার্ক গোল্ডকাপ’, ‘সাউথ এশিয়ান গোল্ডকাপ’ এবং ‘সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ’। কেরালার ত্রিভানদ্রাম আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে দুই গ্রুপে মোট আটটি দল লড়বে। দুই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল উঠবে সেমিফাইনালে। ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে দু’টি সেমিফাইনাল। ৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল। বাংলাদেশের খেলাগুলো হবে ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় আফগানিস্তান, ২৬ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় মালদ্বীপ এবং ২৮ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় ভুটানের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ এশিয়ার এই ফুটবল টুর্নামেন্টে আধিপত্য ভারতেরই। ১৯৯৩ সাল থেকে শুরু হওয়া সাফ ফুটবলে তারা সর্বোচ্চ ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন। বাকি চার আসরের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরেছে চারটি দল। ২০০৩ সালে প্রথম ও শেষবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। ১৯৯৯ সালে ফাইনালে খেললেও সেবার শিরোপা জিততে পারেনি বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের একমাত্র শিরোপাটি আসে ২০০৩ সালে মালদ্বীপকে হারিয়ে। ২০০৫ সালেও ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। ভারতের কাছে ২-০ গোলে হেরে সেবার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। বাংলাদেশের গ্রুপে থাকা বাকি তিন দলের মধ্যে আফগানিস্তান ও মালদ্বীপের এই শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা হয়েছে। গত আসরে নেপালকে হারিয়ে ট্রফি নিয়ে ঘরে ফেরে আফগানিস্তান। আর মালদ্বীপ তাদের একমাত্র শিরোপা জিতেছিল ২০০৮ সালে। বাংলাদেশের গ্রুপে তুলনামূলক দুর্বল দল ভুটান। এই প্রতিযোগিতায় দলটির সেরা সাফল্য ২০০৮ সালের সেমিফাইনালে খেলা। দেখার বিষয়, এবার বাংলাদেশ এক যুগের শিরোপা খরা ঘোঁচাতে পারে কি না।
×