ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ টেস্ট শুরু আজ, সান্ত¡নার জয় পেতে মরিয়া প্রোটিয়ারা

ভারতের লক্ষ্য ৩-০

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৩ ডিসেম্বর ২০১৫

ভারতের লক্ষ্য ৩-০

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দিল্লীতে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা চার ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্ট শুরু হচ্ছে আজ। সিরিজে ২-০তে এগিয়ে থাকলেও ম্যাচটি সামনে রেখে অস্বস্তিতে মোড়ল দেশ ভারতীয় ক্রিকেটের থিঙ্কট্যাঙ্ক। অস্বস্তি পিচ নিয়ে। নাগপুরে তিন দিনে শেষ হওয়া তৃতীয় টেস্টের পিচ নিয়ে নাখোশ আইসিসি (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) ইন্ডিয়ান বোর্ডের (বিসিসিআই) কাছে চিঠি লিখেছে। কেবল নাগপুর নয়, গোটা সিরিজেই পিচের আচরণ নিয়ে বড় রকমের প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। প্রথমে মোহালিতে আড়াই দিনে প্রথম টেস্ট জিতে নেয় ভারত, নাগপুরেও ফল আসে তিন দিনে, তার আগে ব্যাঙ্গালুরুতে বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়া ম্যাচের প্রথমদিনে পড়ে ১২ উইকেট! কোটলায় আজ থেকে শুরু হওয়া শেষ টেস্টের পিচ তাই কেমন হয়- বিশ্বজুড়ে ক্রিকেট বিশ্লেষকরা সেদিকে তাকিয়ে। এই অবস্থায় দিল্লী ক্রিকেটের কর্তাব্যক্তি-কিউরেটর সবাই বেশ সতর্ক। সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট চেতন চৌহান যেমন বলেন, ‘আমরা স্পোর্টিং উইকেটই তৈরি করেছি’। সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার সহকারী কোচ আদ্রিয়ান বিরেলও পিচ দেখে বলেছেন, ‘মনে হয় না এখানে টেস্ট তিন দিনে শেষ হবে।’ নাগপুর টেস্ট শেষ হওয়ার পর ভারতীয় ‘টিম ডিরেক্টর’ কাম অন্তর্বর্তী কোচ রবি শাস্ত্রী বলেছেন, ‘পিচ নিয়ে কোন সমস্যাই ছিল না। আমরা দিল্লীতে একইরকম পিচ আশা করছি।’ পিচ নিয়ে অধিনায়ক কোহলির বক্তব্য শাস্ত্রীর মতোই। তিনি বলেন, ‘সিরিজে পিচ নিয়ে এত কথা বলার মানে হয় না। পৃথিবীর সব দেশই নিজেদের ইচ্ছামতো পিচ বানায়। এমন তো নয় আমরা অন্য পিচে খেলছি। এখানে খেলেই এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করেছি। আমার বোলাররা অসাধারণ বোলিং করেছে। দিল্লীতেও আমি ঘূর্ণিপিচ চাইব যে যাই বলুক। আমার একমাত্র লক্ষ্য সিরিজ ৩-০তে শেষ করা।’ সিরিজে এখন পর্যন্ত প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার ৫০ উইকেটের ৪৭টিই নিয়েছেন ভারতীয় স্পিনাররা! বলতে গেলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবিন্দ্র জাদেজা আর অমিত মিশ্রর ঘূর্ণিতে দিশেহারা টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল প্রোটিয়ারা। পিচ নিয়ে আলোচনার ডামাডোলে স্পিনারদের কৃতিত্বটা যেন ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। লেগস্পিনার অমিত মিশ্র বলেন, ‘এটা দুঃখজনক যে আমাদের একবিন্দুও কৃতিত্ব দেয়া হচ্ছে না। পিচ নিয়েই বেশি কথা বলা হচ্ছে। অথচ গোটা সিরিজ জুড়ে আমরা ভাল বল করে চলেছি। সবাই ভুলে যাচ্ছেন, ভারতীয় উপমহাদেশের পিচ গত ১৫ বছর ধরে এ রকমই। সেটা শ্রীলঙ্কা-ভারত কিংবা বাংলাদেশ হোক। আমরা শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েও একই রকম পিচ পেয়েছিলাম। সেখানেও একই রকম ভাল বোলিং করে জয় নিয়ে ফিরেছি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘স্পিনাররা ভাল বল করলে উইকেট পাবেই। বিদেশেও তাই আমরা সফল হয়েছি।’ বিদেশে বলতে শ্রীলঙ্কা সফরের দিকেই ইঙ্গিত করেন লেগি মিশ্র। অন্যদিকে পিচ নিয়ে কথা বললেও নিজেদের ব্যাটিংয়ের দিকেই তাকিয়ে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হাসিম আমলা। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের পিচে ব্যাটিং করাটা সহজ নয়। তবে সেটা দু’দলের ব্যাটসম্যানদের জন্যেই প্রযোজ্য। আমাদের দলেও ভাল মানের স্পিনার আছে। প্রথমে ব্যাটসম্যানদের বড় স্কোর করতে হবে। যেভাবে আমরা ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজ জিতেছিলাম। এটা ঠিক যে, ঘরের মাটিতে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ভয়ঙ্কর এক স্পিনার। গত তিনটি ম্যাচেই সেটি দেখা গেছে। অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমাদের তাদের বিরুদ্ধে সফল হতে হবে। শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজের ব্যবধান কমাতে মরিয়া সবাই।’ অশ্বিনের কথা বিশেষভাবে বলার কারণটা স্পষ্ট। ৫+৭=১২ উইকেট নিয়ে নাগপুর টেস্টে জয়ের নায়ক অশ্বিন সিরিজে এ পর্যন্ত ৫ ইনিংসে নিয়েছেন ২৪ উইকেট। বছরটা স্বপ্নের মতো কাটছে ধুরন্ধর এই অফস্পিনারের। এ বছর (২০১৫) ৫৫ উইকেট নিয়ে অশ্বিনই সর্বাধিক উইকেট শিকারি। তবে দিল্লীর পিচ স্পিন-বান্ধব হবে কি না এ নিয়ে দু’টি প্রশ্ন রয়েছে। প্রথমত আইসিসি থেকে কড়া বার্তা পাওয়ার পর নিশ্চই নড়েচড়ে বসবে বিসিসিআই। অন্যদিকে দিল্লীতে এখন শীতের মৌসুম। তাপমাত্রা গড়ে ২০ ডিগ্রী। রাতে আরও কম। শিশির ও ভেজা ভাবের কারণে পিচ থেকে পেসাররাও সহায়তা পাবেন। সেটি হলে দক্ষিণ আফ্রিকাই বেশি খুশি হবে। ভারতের তুলনায় প্রোটিয়াদের পেস আক্রমণ বেশ সমৃদ্ধ।
×