ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেবাগকে সংবর্ধনা দিল বিসিসিআই

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৪ ডিসেম্বর ২০১৫

শেবাগকে সংবর্ধনা দিল বিসিসিআই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যেখানে বেড়ে উঠেছেন, যে মাঠ তার ঘরের কাছে সেই ফিরোজ শাহ কোটলাতেই সবকিছুর সমাপ্তি ঘটলো। অবশ্য আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের কোন ম্যাচই এ মাঠে খেলে অবসরে যেতে পারেননি। অবসর নিয়ে ফেলেছেন আগেই। ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য দারুণ অবদান রেখেছেন যতদিন খেলেছেন। সেই অবদানের কথা ভোলেনি ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)। এ কারণে মাঠের সে যোদ্ধাকে তার ঘরের মাঠ দিল্লীর ফিরোজ শাহ কোটলাতেই শেষ বিদায় জানালো বিসিসিআই। বৃহস্পতিবার এ স্টেডিয়ামেই বীরেন্দর শেবাগকে সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছে। সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের চতুর্থ ও শেষ টেস্ট শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার। এদিন খেলা শুরুর আগেই শেবাগকে সংবর্ধনা দেয়া হয় মাঠের ভেতরেই সংক্ষিপ্ত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। সেখানে বিশেষ সম্মাননা নেয়ার সময় মঞ্চে দাঁড়িয়ে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ঘাটতি হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ‘৪০০’ রানের ইনিংস খেলতে না পারার আক্ষেপ জানিয়েছেন তিনি। গত ২০ অক্টোবর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত জানান শেবাগ। প্রায় আড়াই বছর আগে বাজে ফর্মের জন্য দল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। এরপর দীর্ঘদিন প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন দলে ফেরার। শেষ পর্যন্ত সে চেষ্টাতেও সফল হতে পারেননি। সে কারণে অবসরই নিয়ে ফেললেন। ওই সময়ই বিসিসিআই জানিয়েছিল শেবাগকে সম্মানের সাথে বিদায় জানানো হবে। সেটা দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজেই যখন দিল্লী টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে সে সময় দেয়া হবে বলে জানিয়েছিল বোর্ড। সে কথাটা রক্ষা করলো তারা। সিরিজের চতুর্থ ও শেষ টেস্টে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দল নামার আগে সংক্ষিপ্ত এক অনুষ্ঠান হয়েছে মাঠে। শেবাগ তার পরিবারসহ উপস্থিত হয়েছিলেন। শেবাগের বিষয়ে দিল্লীর ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশনকে আগেই মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছিল বিসিসিআই। কিন্তু গত ১৭ বছর ধরে এ ধরনের অনুষ্ঠান থেকে দূরে থাকা এ এ্যাসোসিয়েশন এবারও আসেনি। এ বিষয়ে ডিডিসিএ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চেতন চৌহান বলেন, ‘আমরা আজই (বুধবার) একটি মেইল পেয়েছি বিসিসিআই থেকে। সেখানে বলা হয়েছে বীরেন্দ্র শেবাগকে টেস্ট ম্যাচ শুরুর আগেই সকাল ৯টায় সম্মাননা দেয়া হবে। আমি জানি না, তবে সম্ভবত বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট কিংবা সেক্রেটারি তাকে সম্মাননা তুলে দেবেন। কিন্তু ডিডিসিএ এ সম্মাননা অনুষ্ঠানের অংশ নয়।’ ১৯৯৯ সালে ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন শেবাগ। এরপর টানা ১৪ বছর অপরিহার্য ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি খেলেছেন ভারতীয় দলের হয়ে। ১০৪ টেস্টে ৮ হাজার ৫৮৬ ও ২৫১ ওয়ানডেতে ৮ হাজার ২৭৩ রান করেন তিনি। টেস্টে তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩১৯ রান। টেস্ট ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ব্রায়ান চার্লস লারার অপরাজিত ৪০০ রানের ইনিংসটি এখন পর্যন্ত বিশ্বরেকর্ড। ওই রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলার একটা লক্ষ্য ছিল শেবাগের। সেটা না হওয়াতে ক্যারিয়ারে একটা ঘাটতি বোধ করছেন সাবেক এ ওপেনার। টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে দু’বার ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকানো শেবাগ সম্মাননা নেয়ার সময় বলেন, ‘হয়তো আমি ৪০০ করতে পারতাম এবং ব্রায়ান লারার রেকর্ড ভাঙ্গাও সম্ভব ছিল। দুর্ভাগ্য যে ৩১৯ রানেই আমাকে থামতে হয়েছে।’ এ সময় দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নিজের পারফর্মেন্সের পেছনে সতীর্থ অনিল কুম্বলে, শচীন টেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলীদের যোগ্য সমর্থন দেয়াটাকে বড় অবদান রেখেছে বলে জানান তিনি।
×