ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কুমিল্লা ৫ উইকেটে হারাল চিটাগাংকে

প্রকাশিত: ০৭:৫৮, ৪ ডিসেম্বর ২০১৫

কুমিল্লা ৫ উইকেটে হারাল চিটাগাংকে

স্পোর্টস রিপোর্টার চট্টগ্রাম থেকে ॥ এমনিতেই স্কোরবোর্ডে কম রান যোগ করতে পেরেছে চিটাগাং ভাইকিংস। ১৩৬ রান করেছে তারা। আবার এমন এক ঘটনা ঘটিয়েছেন চিটাগাংয়ের তিলকারতেœ দিলশান, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের স্কোরে ৫টি রান এমনিতেই যোগ হয়ে গেছে। কুমিল্লার ইমরুল কায়েসকে যে রান নিতে দেননি দিলশান, তাতে করে ম্যাচেই শাস্তি পেয়েছে চিটাগাং। সেই শাস্তির সঙ্গে ৫ উইকেটের হারও হয়েছে চিটাগাংয়ের। বিপিএলের তৃতীয় আসরের প্রথম লেগেও চিটাগাংয়ের বিপক্ষে জিতেছে কুমিল্লা। ফিরতি লেগেও জিতল। হ্যামস্ট্রিংয়ে সমস্যা আছে মাশরাফির। আর তাই বোলিংই করলেন না। তবে মাশরাফিকে যে অধিনায়কত্বেই চেয়েছে কুমিল্লা, তা পেয়েছেও। বল না করে শুধু নেতৃত্ব দিয়ে গেলেন মাশরাফি। তাতে জয়ও ধরা দিল। দিনের প্রথম ম্যাচটিতে বৃষ্টি বাগড়া দেয়ায় চিটাগাং-কুমিল্লা ম্যাচটি ১৫ মিনিট দেরিতে শুরু হয়েছে। ম্যাচে টস জিতে কুমিল্লা ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। চিটাগাং ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান করে। উমর আকমল সর্বোচ্চ অপরাজিত ৪৯ রান করেন। তিলকারতেœ দিলশান ৩৯ ও তামিম ২৭ রান করেন। জবাব দিতে নেমে ১৯.৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান করে জিতে যায় কুমিল্লা। দলের পক্ষে শেহজাদ ৩৭, ইমরুল ৩৫ ও শোয়েব মালিক অপরাজিত ৩৪ রান করেন। আমির ২ উইকেট নেন। চিটাগাংয়ের স্কোরবোর্ডে যখন ৬ রান যোগ হয় তখনই ঝামেলা লাগে। ইমরুল কায়েস রান নিতে গিয়েও নিজ স্থানে ফিরে আসেন। ততক্ষণে আহমেদ শেহজাদ রান নিয়ে নেন। রান আউট থেকে রক্ষা পেতে ইমরুল আবার যখন রান নিতে যান, রান আউট করতে সামনে এসে দাঁড়িয়ে যান দিলশান। দিলশানের সঙ্গে শরীরে ধাক্কা লাগে। এরপরও ইমরুল রান নিতে যেতে চান। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে স্পষ্ট বোঝা যায়, দিলশানের বাড়ানো পায়ে ইমরুলের পা লাগে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ইমরুল। এ নিয়ে থার্ড আম্পায়ারের কাছে যখন সিদ্ধান্তের দায়ভার যায়, নট আউটই দেন থার্ড আম্পায়ার আনিসুর রহমান। সঙ্গে চিটাগাংয়ের দিলশান যে ইমরুলকে রুখে দেয়ার চেষ্টা করেন তার জন্য চিটাগাংকে ৫ রান শাস্তিও দেয়া হয়। নিয়ম হলো, যদি ব্যাটসম্যান রান নেয়ার সময় কোন ফিল্ডার রুখে দেয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে ব্যাটিং সাইডের স্কোরে পুরস্কারস্বরূপ ৫ রান যোগ হবে। সেটি অতিরিক্ত রানে যুক্ত থাকবে। এরসঙ্গে যে রানটি নিতে চেয়েছেন সেই রানও যোগ হবে। পাশাপাশি বলটিও গণ্য করা হবে না। চিটাগাংয়ের বেলাতে তাই হলো। তার মানে মোট ৬ রান পেল কুমিল্লা। সেই শাস্তিতে লাভ হয় কুমিল্লারই। দলের ৫৫ রানের সময় ইমরুল (৩৫) কিন্তু আউট হন সেই দিলশানের বলেই। দিলশানের সে কী উল্লাস! যেন ম্যাচই জিতে গেছেন। তা আর হয়নি। শেহজাদ (৩৭) দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ৯৪ রানে গিয়ে আউট হন। ম্যাচের জিততে ১৯ বলে ২৪ রান লাগে। এমন সময়ে আসহার জাইদি (৮) ও শুভগত হোমকে (২) ১৭তম ওভারে আউট করে দেন আমির। খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেড়ে যায়। ৬ বলে জিততে যখন ৭ রানের প্রয়োজন থাকে, তা ৪ বলেই করে ফেলে কুমিল্লা। সাত ওভারেই ৫০ রান করে ফেলে চিটাগাং। অষ্টম ওভারে গিয়েই তামিম-দিলশানের ওপেনিং জুটি ভেঙ্গে যায়। আর ১ রান যোগ হতেই তামিমকে আউট করে দেন শুভগত হোম। ওভারের দ্বিতীয় বলে তামিম আউট হওয়ার পর শেষ বলেই আবার এনামুল হক বিজয়ও রান আউট হয়ে যান। দল যখন ৬১ রানে তখন দিলশান একবার ক্যাচ আউট হওয়া থেকে বাঁচলেও খুব বেশিদূর যেতে পারেননি। ৭৮ রানে আউট হয়ে যান। দল বিপদে পড়ে যায়। সেই বিপদ আরও ঘনিয়ে আসত যদি আর ২ রান যোগ হতেই ৫ রানে থাকা উমর আকমলের ক্যাচটি লুফে নেয়া যেত। সেই যে সুযোগ পেলেন উমর, আর আউটই হলেন না। চিটাগাং এদিন মোহাম্মদ আমিরকে মাঝপথেই ব্যাটিং করতে পাঠায়। তাতে কাজও হয়েছে কিছুটা। আমির এককুল রক্ষা করে গেছেন। আরেকদিকে রান তুলে গেছেন উমর। তবে ৮ রানের বেশি করতে পারেননি আমির। যে জিয়ার ওপর ভরসা করা হয়, তিনিও ২ রানের বেশি করতে পারলেন না। শেষে উমর ও বিলাওয়াল ভাট্টি (২*) মিলে দলকে ১৩৬ রানে নিয়ে যান। তাকে কোন কাজই হয়নি। ৮ ম্যাচ খেলে ৬ হার হওয়ায় লীগ পর্বের গ-ি অতিক্রম করার সুযোগ টালমাটাল এখন চিটাগাংয়ের। সেই তুলনায় ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট পেয়ে পরের পর্বে প্রায় পা দিয়েই রেখেছে কুমিল্লা। চিটাগাংয়ের এ হারে শাস্তিও যুক্ত থাকল। চট্টগ্রামের পর্বে টানা চার ম্যাচ খেলে তিনটিতেই হারল চিটাগাং। চট্টগ্রাম পর্বের শেষদিনেও হারল। স্কোর ॥ চিটাগাং ভাইকিংস ১৩৬/৫; ২০ ওভার (উমর ৪৯*, দিলশান ৩৯, তামিম ২৭; জাইদি ১/১৮)। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১৪২/৫; ১৯.৪ ওভার (শেহজাদ ৩৭, ইমরুল ৩৫, মালিক ৩৪*; আমির ২/২২)। ফল ॥ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা ॥ শোয়েব মালিক (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)।
×