ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অজানা বধ্যভূমি হাবড়া

প্রকাশিত: ০৩:৪৩, ৫ ডিসেম্বর ২০১৫

অজানা বধ্যভূমি হাবড়া

পার্বতীপুর শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে হাবড়ার জমিদার কাচারিবাড়ী সংলগ্ন তিলাই নদীর পাড়ে বধ্যভূমির কথা এ প্রজম্মের কাছে অজানা। সরকারী জরিপ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেও এ বধ্যভূমির নাম নেই। অথচ এক দিনেই এখানে মুখোমুখি যুদ্ধে খান সেনাদের হাতে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০ ইপিআর। স্থানীয়রা জানায়, আগে এখানে সড়ক ছিল না। পুরো এলাকাজুড়ে ছিল আমবাগান। আমবাগানের ভিতরে তারা ব্যাংকার খুঁড়েছিল। তাদের লাশ এ জায়গায় পড়েছিল। এটাই বধ্যভূমি। দেরিতে হলেও যুব সমাজ এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে। তিনি আশা করেন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার বিজয় দিবসের আগেই বীর সেনানিদের বধ্যভূমির ওপর স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পদক্ষেপ নিয়ে জাতির লজ্জা ঘোচাবে। -শ.আ.ম হায়দার, পার্বতীপুর থেকে স্বজনরাই মনে রেখেছে সেদিনের নির্মমতার কথা নওগাঁ সদরের দোগাছী ডাঙ্গাপাড়া পুকুরপাড়, ফতেপুর গড়েরহাট, রানীনগরের আতাইকুলা, আত্রাইয়ের মিরাপুর ও মান্দার পাকুড়িয়ায় যে কয়েক শ’ মুক্তিকামী মানুষের লাশ স্তূপাকারে শায়িত করে গণকবর দেয়া হয়েছিল, সেই বেদনাবিধূর স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমির কথা অনেকেই ভুলতে বসেছে। নতুন প্রজন্ম জানেই না, ওই স্থানে পাকি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর এদেশী রাজাকার আলবদরদের সহায়তায় কি নির্মমভাবে নিরীহ মুক্তিকামী বাঙালীকে হত্যা করেছিল। শুধু তাদের স্বজনরাই মনে রেখেছে সেদিনের সেই নির্মমতার কথা। অপরদিকে নওগাঁ থেকে ৩৭ কি. মি. পশ্চিমে মান্দা উপজেলার নিভৃত গ্রাম পাকুড়িয়া। একাত্তরের ২৮ আগস্ট পাকি হানাদাররা শান্তি বৈঠকের নামে গ্রামের নিরীহ মানুষদের ডেকে জড়ো করে গ্রামের ইউনাইটেড স্কুল মাঠে। সেখানে পাকি হানাদাররা গ্রামের লোকজনদের মাঝখানে বসিয়ে রেখে চারপাশ থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ব্রাশফায়ারে হত্যা করে। হানাদার বাহিনী চলে যাবার পর এলাকাবাসী লাশের স্তূপ সারিবদ্ধ করতে গিয়ে ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। মৃত ১২৮ জনকে তাদের পার্শ্ববর্তী হাজী সাহেবের জমিতে গণকবর দেয়া হয়। ইতিহাসখ্যাত এই বধ্যভূমিটি সংরক্ষণ বা এখানে কোন স্মৃতিসৌধ নির্মাণের সরকারী উদ্যোগ আজও নেয়া হয়নি। Ñবিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ থেকে জামালপুরে ব্যক্তি উদ্যোগে গণকবর সংরক্ষণ দেশ স্বাধীনের পর ৪৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এসব গণকবর চিহ্নিত কিংবা সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই নারকীয় গণহত্যার নীরব সাক্ষী ওইসব গণকবর ব্যক্তি উদ্যোগে সংরক্ষণ করছেন বকশীগঞ্জ উপজেলার আলোকিত মানুষ খ্যাত মুক্তিযোদ্ধা বাবুল চিশতি। তিনি ইতিমধ্যেই নিজস্ব অর্থায়নে বকশীগঞ্জ এনএম উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বধ্যভূমি, ধানুয়া কামালপুর কসিম উদ্দিন চেয়ারম্যানের বাড়ির কাছে আট গণকবর এবং বকশীগঞ্জ গার্লস স্কুলের বধ্যভূমিসহ গণহত্যার এসব গণকবর সংরক্ষণ করেছেন। -আজিজুর রহমান ডল, জামালপুর থেকে
×