ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে জমে উঠেছে বিজয় মেলা ॥ ছুটির দিনে ক্রেতার ভিড়

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৫ ডিসেম্বর ২০১৫

চট্টগ্রামে জমে উঠেছে বিজয় মেলা ॥ ছুটির দিনে ক্রেতার ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ শুরুতেই জমে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। চট্টগ্রাম মহানগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের আউটার মাঠে গত ১ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয় এ মেলার। দিন যত যাচ্ছে ততই মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড় বাড়ছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বিকেলে মেলায় বিভিন্ন বয়সী বিপুল দর্শনার্থীর ঢল নামে। গৃহস্থালির টুকিটাকি জিনিস থেকে শুরু করে হস্তশিল্প, পোশাক ও মৃৎশিল্পের জিনিসপত্র এক মাঠেই পাওয়া যায় বলে মেলায় গৃহিনীদের আনাগোনা বেশি। এদিকে মেলায় দর্শনার্থীর যেমন ভিড় রয়েছে, তেমনি বেচাকেনা হচ্ছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, সবসময় বিজয় মেলায় খুব ভাল বেচাকেনা হয়। এবার শুরুতেই অনেক ভাল বেচাকেনা হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে মেলায় ঢুকতে দেখা যায় ডানপাশের একটি স্টলে বসেছে মাটির তৈরি তৈজসপত্রের দোকান। সেখানে হাঁড়ি, ঢাকনা ছাড়াও শীতের পিঠা তৈরির বিশেষ বাটি বিক্রি হচ্ছে। গৃহসজ্জার নানা উপকরণ, রান্নাঘরের তৈজসপত্র, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, শাল, গহনা, জুতা ও সান্ডেলসহ ক্রোকারিজ দোকানকে ঘিরে রয়েছে দর্শনার্থীদের প্রচ- ভিড়। মেয়েদের কস্মেটিক পণ্য, ব্যাগ, জুতা ও থ্রিপিস সামগ্রীর স্টলগুলোতেও ভিড় দেখা গেছে। আবার ব্লেজার, কোট, শার্ট-প্যান্টের স্টলগুলোতে এসে ভিড় জমাচ্ছেন ছেলেরা। অনেকে এসব দোকান থেকে কেনাকাটাও করছেন। আবার অনেকে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মেলায় ঘুরে দেখছেন, করছেন যাচাই-বাছাই। রাজশাহী সিল্ক প্যাভিলিয়নে জামদানি শাড়ি দেখছেন গৃহিনী আফরোজা আক্তার। তিনি বলেন, বিজয় মেলায় সব ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। তাই পারিবারিক জরুরী কিছু কেনার প্রয়োজন হলে মেলায় আসি। মেলা ঘুরে দেখছি। ভাল লাগলে কিনব। তার পাশে ব্লেজার দেখছেন সরকারী সিটি কলেজের শিক্ষার্থী অর্নব। সে জানায়, গতবার মেলা থেকে একটা ব্লেজারের কেনেছিলাম। এক বন্ধু সেটি নিয়ে গেছে। তাই আর একটি ব্লেজার কিনতে মেলায় এসেছি। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ সূত্র জানায়, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয়, বীর বাঙালীর অহঙ্কার’ শিরোনামে এ মেলা ২৭ বছরে পর্দাপণ করেছে। ছোট পরিসরে প্রথম বিজয় মেলার আয়োজন করা হয় ১৯৮৯ সালে। সেই থেকে প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসে বিজয় মেলার আয়োজন হয়ে আসছে। মেলার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ায় মূল লক্ষ্য। এদিকে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার পণ্য মেলা ১ ডিসেম্বর শুরু হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন হবে ১০ ডিসেম্বর। ওই বর্তমান সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অগ্নিশিখা প্রজ্জ্বলন করে মেলার উদ্বোধন করবেন। এছাড়া, মেলা উপলক্ষে লালদীঘি ময়দানে বইমেলা এবং সিআরবির শিরিষতলা প্রাঙ্গণে শিশু-কিশোর উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় এবার প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হবে মৎস্যমেলা ও বৃক্ষমেলা। ১০ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিজয় মঞ্চে প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নেতৃবন্দ, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকদের নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান, বাঙালীর লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বিজয় র‌্যালি। এ সম্পর্কে বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, বিজয় মেলা এখন চট্টগ্রামের সংস্কৃতির একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৯৮৯ সালে শুরু হওয়ার পর দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে টানা বিজয় মেলা আয়োজন হয়ে আসছে এখানে। বিজয় মেলায় পণ্য মেলার আয়োজন করা হলেও বিজয়মঞ্চের আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়ের চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ায় বিজয় মেলার উদ্দেশ্য।
×