ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা ওয়াসার এমডিকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ৭ ডিসেম্বর ২০১৫

ঢাকা ওয়াসার এমডিকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি

মশিউর রহমান খান ॥ শর্ত সাপেক্ষে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাসকিম এ খান। তার বিরুদ্ধে ওয়াসার পদ্মা (জশলদিয়া) পানি শোধনাগার প্রকল্পে সরকারের কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতিসাধনের অভিযোগ রয়েছে। তবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়কে অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। অন্যদিকে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ নথিভুক্তির (অব্যাহতি) মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। দুদক অব্যাহতি দিলেও মন্ত্রণালয় এ অভিযোগ নতুন করে তদন্তসাপেক্ষে কোন দুর্নীতি বা অনিয়ম পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে বলে দুদক চেয়ারম্যান মোঃ বদিউজ্জামান জনকণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন। দুদক সচিব আবু মোঃ মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত আদেশপত্র সূত্রে জানা যায়, ওয়াসার এমডি তাসকিম এ খানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকারী বিভাগ বরাবর নির্দেশ প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্পের এ পর্যায়ে দুদকের কিছু করণীয় না থাকায় নথিভুক্তির মাধ্যমে নথির কার্যক্রম নিষ্পত্তি হিসেবে গণ্য করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। দুদকে আসা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রকল্প এলাকায় জমি অধিগ্রহণ এবং পরামর্শক নিয়োগের আগে অনেকটা তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের পাইপ আমদানি করেন ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান। অসৎ উদ্দেশ্যে প্রকল্প অনুমোদনের ১৩ মাস আগেই তিনি ঢাকা ওয়াসার ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি সই করেন। ওই কাজের জন্য কোন দরপত্র চাওয়া হয়নি, এমনকি ভেটিং (দর-কষাকষি) হয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। এর ফলে সরকার ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হবে। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ভেটিংয়ের সুযোগ থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তা না করায় কমপক্ষে ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। আর জমি অধিগ্রহণের আগেই বিদেশ থেকে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী (পাইপ) আমদানির জন্য ব্যয় হয়ে যাওয়া টাকার ওপর অতিরিক্ত সুদ গুনতে হবে প্রায় দেড় শ’ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে সরকারের বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীবাসীর বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মুন্সীগঞ্জের পদ্মা (জশলদিয়া) পানি শোধনাগারটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ঢাকা ওয়াসার পদ্মা (জশলদিয়া) পানি শোধনাগার প্রকল্পের (ফেজ-১) ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩ হাজার ৫০৮ কোটি ৭৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার ৪২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ঋণ হিসেবে দেবে চীনা এক্সিম ব্যাংক। বাকি অর্থ দেবে সরকার ও ঢাকা ওয়াসা। সরকার ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর একনেকের বৈঠকে এ-সংক্রান্ত প্রকল্প অনুমোদন দেয়। পদ্মার জশলদিয়া পয়েন্টে এই শোধনাগার স্থাপন করা হবে। এখান থেকে পরিশোধিত পানি কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার জন্য বসানো হবে পাইপ। বুড়িগঙ্গা নদীর তলদেশ দিয়ে এই পাইপ ঢাকায় নেয়া হবে। এ জন্য জশলদিয়া পয়েন্ট এবং কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত পাইপ বসানোর জন্য জমি প্রয়োজন হবে। এই জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করেছে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
×