ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পরাশক্তিদের হটিয়ে শীর্ষে লিচেস্টার সিটি

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ৭ ডিসেম্বর ২০১৫

পরাশক্তিদের হটিয়ে শীর্ষে লিচেস্টার সিটি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চমকের পর চমক দেখিয়েই চলেছে লিচেস্টার সিটি। নবাগত এই দলটি ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের পরাশক্তিদের হটিয়ে আরও একবার পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে। শনিবার রাতে এ্যাওয়ে ম্যাচে লিচেস্টার ৩-০ গোলে হারায় স্বাগতিক সোয়ানসি সিটিকে। বিজয়ী দলের হয়ে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক করেন ফরাসী উইঙ্গার রিয়াদ মাহরেজ। পরশু রাতটিকে পরাশক্তিদের বেদনার বলা যায়। এই রাতে একমাত্র আর্সেনাল ছাড়া সব বড় দলই লজ্জায় ডুবেছে। নিজেদের মাঠ লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে গানার্সরা ৩-১ গোলে হারায় সান্ডারল্যান্ডকে। ঘরের মাঠ ওল্ডট্রাফোর্ডে ওয়েস্টহ্যামের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তবে লজ্জার হারে মাঠ ছেড়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চেলসি ও ম্যানচেস্টার সিটি। নিজেদের মাঠ স্টামফোর্ড ব্রিজে বোর্নমাউথের কাছে ১-০ গোলে হারে ব্লুজরা। অন্যদিকে স্টোকের কাছে ২-০ গোলে নতি স্বীকার করে ম্যানসিটি। ম্যাচে সিটিকে নিয়ে পুরো সময়ই ছেলেখেলায় মেতে থাকেন স্টোকের ফুটবলাররা। বর্তমানে ১৫ ম্যাচ শেষে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে এক নম্বরে লিচেস্টার। ৩০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আর্সেনাল। সমান ২৯ পয়েন্ট ভা-ারে ম্যানসিটি ও ম্যানইউর। তবে গোল গড়ে এগিয়ে থেকে তিনে সিটি ও চারে ইউনাইটেড। বোর্নমাউথের কাছে এই হারের পর চেলসি চলে গেছে পয়েন্ট তালিকার ১৪তম অবস্থানে। ১৫ ম্যাচ শেষে তাদের সংগ্রহ ১৫ পয়েন্ট। ইংল্যান্ডের শীর্ষ ক্লাবগুলোর বিপক্ষে খেলার সুযোগ খুব বেশি হয় না বোর্নমাউথের। ১৮৯০ সালে প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথমবারের মতো ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের এই ক্লাব। আর পুঁচকে এই দল যে গতবারের শিরোপাজয়ী চেলসিকে হারিয়ে দেবে, তা হয় তো কারও ভাবনায় ছিল না। সেটাও আবার চেলসিরই মাঠ, স্টামফোর্ড ব্রিজে। পরশু রাতে অকল্পনীয় এই সাফল্যই পেয়েছে বোর্নমাউথ। চেলসির বিপক্ষে ১-০ গোলের এই জয়কে বোর্নমাউথের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে মন্তব্য করেছেন কোচ এডি হাউ। ইপিএলে টানা তিন ম্যাচ হারের পর একটি ম্যাচে জয় ও একটি ড্র করে কেবলই একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন চেলসি কোচ জোশে মরিনহো। কিন্তু এই সুখ স্মৃতির রেশ কাটতে না কাটতেই আবার সেই পুরনো দুর্দশা সঙ্গী হলো বর্তামন চ্যাম্পিয়নদের। ম্যাচের প্রথমার্ধের খেলা ছিল দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে একে অপরকে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। দুই দলের গোলরক্ষকই কয়েকটি গোল প্রচেষ্টা রুখে দেন দারুণ দক্ষতায়। দ্বিতীয়ার্ধে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে মুহুর্মুহু আক্রমণ চালান চেলসির খেলোয়াড়রা। বোর্নমাউথও চলে যায় রক্ষণাত্মক অবস্থানে, একের পর এক রুখে দিতে থাকে চেলসির গোল প্রচেষ্টা। ৮২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে কর্নার আদায় করে নেন বোর্নমাউথের খেলোয়াড়রা। আর এই সুযোগটাই দারুণভাবে কাজে লাগান তারা। হেড করে চেলসির জালে বল জড়িয়ে দেন বোর্নমাউথের ফরোয়ার্ড গ্লেন মারে। ম্যাচের বাকি সময় এই গোল আর পরিশোধ করতে পারেনি চেলসি। ইপিএলে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটির বিপক্ষে পুরো ম্যাচে আধিপত্য ধরে রেখে সহজ জয় তুলে নেয় স্বাগতিক স্টোক সিটি। দ্বাদশ ম্যাচে এ্যাস্টন ভিলার সঙ্গে ড্রয়ের পর লিভারপুলের কাছে ঘরের মাঠে ৪-১ গোলে হেরেছিল সিটি। তবে গত সপ্তাহে সাউদাম্পটনকে হারিয়ে কক্ষপথে ফেরার আভাস দেয়ার পাশাপাশি শীর্ষেও ওঠে তারা। কিন্তু ফের ছন্দ পতন হলো মানুয়েল পেলেগ্রিনির দলের। চোটের কারণে ম্যাচটিতে ছিলেন না সার্জিও এ্যাগুয়েরো ও ইয়াইয়া তোরে। আক্রমণভাগ ও মাঝমাঠের এই দুই তারকাকে ছাড়া ভুগতে দেখা যায় ম্যানচেস্টার সিটিকে। প্রতিপক্ষ স্টোক সিটিও শুরু থেকেই দারুণ খেলতে থাকে। সপ্তম মিনিটে এগিয়েও যায় তারা। ডান দিক থেকে জারদান শাকিরির পাস পেয়ে খুব কাছ থেকে বল জালে জড়ান মার্কো আর্নাউটোভিচ। পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই আরেকটি গোল খেয়ে বসে অতিথিরা। এবারের গোলদাতাও অস্ট্রিয়ার স্ট্রাইকার আর্নাউটোভিচ। ম্যাচের ১৫ মিনিটের গোলটিতেও অবদান রাখেন শাকিরি।
×