ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন ও আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৮ ডিসেম্বর ২০১৫

দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন ও আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন ও আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা-২০১৫’র পুরস্কার বিতরণ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয় ধানম-ির দৃক গ্যালারিতে সোমবার বিকেলে। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে বিশেষ এ আয়োজন করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ‘জাগ্রত বিবেক দুর্জয় তারুণ্য-দুর্নীতি রুখবেই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচীর আওতায় এ প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো ‘জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন’ বিষয়ক বিশেষায়িত কার্টুন প্রতিযোগিতা ও দুর্নীতিবিরোধী আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। বিজয়ী ও বিশেষ মনোনয়নপ্রাপ্ত কার্টুনিস্ট ও আলোকচিত্রীদের কার্টুন ও আলোকচিত্র নিয়ে সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত হ্যান ফুগল এসকেয়ার ও সুইডিস ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন্স কারিন ম্যাকডোনাল্ড। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের স্বাগত ভাষণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। এরপর প্রতিযোগিতার বিচারকম-লীর মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন শিশির ভট্টাচার্য, জান্নাতুল মাওয়া ও আবির আবদুল্লাহ। ‘দুর্নীতিবিরোধী আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা-২০১৫’র প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন যথাক্রমে শফিকুল আলম, ফকরুল ইসলাম ও প্রণব কৃষ্ণ রায়। বিজয়ীদের যথাক্রমে ৫০, ৩০ ও ২০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। এছাড়া মোট ১৬ জন আলোকচিত্রীকে বিশেষ মনোনয়ন দেয়া হয়। প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন’ বিষয়ে কার্টুন প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন যথাক্রমে নাসরীন সুলতানা মিতু, আরাফাত করিম ও হাসান মাহমুদ। বিজয়ীদের যখাক্রমে ৫০ হাজার, ৪০ হাজার ও ৩০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। ছয়জনকে বিশেষ মনোনয়ন দেয়া হয়। দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন প্রতিযোগিতা ২০১৫’র ক বিভাগে (১৩-১৮ বছর) প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন যথাক্রমে আশরাফুল ইসলাম, মাহাতাব রশিদ ও আনিকা বুশরা চৌধুরী। আর খ বিভাগে (১৯-২৫ বছর) প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন যথাক্রমে আরাফাত করিম, দীপংকর সিংহ ও তমা সাহা। উভয় গ্রুপের বিজয়ী তিনজনকে যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৪০ হাজার ও ৩০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। এছাড়া দুটি বিভাগ থেকে মোট ১৯ জন কার্টুনিস্টকে বিশেষ মনোনয়ন দেয়া হয়। এরপর দুটি কার্টুন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ও বিশেষ মনোনয়নপ্রাপ্ত কার্টুনিস্টদের মোট ৬৩টি কার্টুন ও আলোকচিত্রীদের মোট ২৩টি আলোচিত্র নিয়ে গ্যালারিতে আয়োজিত প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন অতিথিরা। প্রদর্শনী চলবে আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেয়া হয় আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে টিআইবির ধারাবাহিক আয়োজনের অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবরের মুক্তমঞ্চে দুর্নীতিবিরোধী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এতে টিআইবির ইয়েস গ্রুপের সদস্যদের নানান পরিবেশনার পাশাপাশি সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শিল্পী বাপ্পা মজুমদার, সায়ান ও রথীন্দ্রনাথ রায়। শিল্পকলায় থিয়েটার সপ্তাহের চতুর্থ সন্ধ্যায় রবীন্দ্রনাথের ‘মুক্তধারা’ মঞ্চস্থ ॥ ‘সবার উপরে জীবন সত্য’ সেøাগানে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে চলছে ‘থিয়েটার সপ্তাহ’। নাট্য সংগঠন থিয়েটার আয়োজিত এ উৎসবের সোমবার ছিল চতুর্থ দিন। এদিন সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় রবীন্দ্রনাথের নাটক ‘মুক্তধারা’। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন নায়লা আজাদ। ১৯২২ সালে রবীন্দ্রনাথ যখন ‘মুক্তধারা’ রচনা করেন, সে সময়ে নাট্যকারের মানস-পটভূমি গঠনে কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা কাজ করেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর পররাজ্যলোলুপ রাষ্ট্রনীতি, সঙ্কীর্ণ জাতীয়তাবোধ এবং সর্বোপরি মনুষ্যত্ব বর্জিত যান্ত্রিক সভ্যতার জয়োল্লাস কবি-নাট্যকারের চিত্তে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এদিকে, ১৯২০-২২ সময়ে স্বদেশে মহাত্মা গান্ধীর সত্যাগ্রহ ও অহিংস আন্দোলন, আইন অমান্য ও অসহযোগ আন্দোলন- এসবের প্রভাবও ‘মুক্তধারা’ নাটকে লক্ষ্য করা যায়। মানুষই যন্ত্র আবিষ্কার করেছে নিজের সুবিধার জন্য। কিন্তু অপব্যবহারের ফলে সে যন্ত্র দানবে পরিণত হয়। রবীন্দ্রনাথ ‘রক্তকরবী’তেও সেই যন্ত্র-দানবের কথা বলেছেন। তাই বলে রবীন্দ্রনাথ যন্ত্রবিরোধী ছিলেন না। কিন্তু যন্ত্রের কাছে মনুষ্যত্ব হারিয়ে যাক, প্রকৃতি বিপর্যস্ত হোক- তিনি তা চাননি। বাঁধকে তিনি যন্ত্রের প্রতীক হিসেবে এনেছেন। মুক্তধারা নাটকের মূল দ্বন্দ্বটিই হচ্ছে যন্ত্রের সঙ্গে প্রাণের, যান্ত্রিকতার সঙ্গে আধ্যাত্মিকতার। নাটকে ধনঞ্জয় বৈরাগীর অনেক আধ্যাত্মিক গানের মধ্যেও আছে সংগ্রামের সুর, প্রতিবাদের ভাষা। মুক্তধারার বাঁধ মুক্তির প্রতিবন্ধক। সেই ঝরনাধারার মুক্তি মানব জীবনের মুক্তি, যা নিয়ে আসে জীবনের স্বচ্ছন্দ গতি। পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে পৃথিবীব্যাপী সচেতন মানুষ যখন সোচ্চার, সে সময়ে রবীন্দ্রনাথের ‘মুক্তধারা’ সময়োপযোগী নাটক। উন্নত বিশ্বের লোভ-লালসা ও ভোগ-বিলাসের কারণেই যে পরিবেশ বিপর্যয়, তার শিকার আমাদের মতো উন্নয়নকামী দেশগুলো। থিয়েটার মুক্তধারা প্রযোজনার মধ্য দিয়ে প্রকৃতিকে যন্ত্র সভ্যতার ছোবল থেকে রক্ষা করার আর্তি জানাচ্ছে। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেনÑ ফেরদৌসী মজুমদার, ত্রপা মজুমদার, তানভীর হোসেন সামদানী, গোলাম শাহ্রিয়ার সিক্ত, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান প্রমুখ।
×