ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পৌর নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীতা বাতিলের দাবি ওয়ার্কার্স পার্টির

প্রকাশিত: ২১:৫৪, ৮ ডিসেম্বর ২০১৫

পৌর নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীতা বাতিলের দাবি ওয়ার্কার্স পার্টির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জামায়াত অংশ নেয়ার উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশের ওযার্কার্স পার্টি। বিভিন্ন পৌরসভায় জামায়াতের অন্তত ৪৪ জন নেতার প্রার্থীতা বাতিল করতে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে দলটি। মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীনতাবিরোধী ও সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক দল জামাতের সদস্যদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার থাকতে পারে না। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সংবিধান সমুন্নত রাখা। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন এবং সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা বিবৃতিতে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী ও নিবন্ধন বাতিল হওয়া দল জামাতের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে তারা বলেছেন, জামাত দলগতভাবেই যুদ্ধাপরাধী। এটি এখন আর কেবল অভিযোগ নয়, বরং আদালতের বিচারে প্রমাণিত সত্য। শুধু তাই নয়, জামাতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ ফাঁসির আগে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনে এবং জামাতের আমির মতিউর রহমান নিজামী সুপ্রিম কোর্টে বিচার চলাকালীন প্রাণদ- লাঘবের আবেদনে একাত্তরে তাদের স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকা- স্বীকার করে নিয়েছেন। ফলে দলগতভাবেই যারা স্বাধীনতাবিরোধী, সেই দলের কোনো সদস্যের স্বাধীন বাংলাদেশের কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অধিকার থাকতে পারে না। তাছাড়া জামাতের গঠনতন্ত্র স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে উচ্চ আদালতের রায়ে তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। যে দলটির গঠন প্রক্রিয়া ও গঠনতন্ত্র বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক, সেই দলের সদস্যরা কিভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে? বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশিত হয়েছে যে জামাতের অন্তত ৪৪ জন নেতা দেশের বিভিন্ন পৌরসভায় মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এর বাইরে আরো বহু সংখ্যক নেতা বিএনপি’র ব্যানারে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রথমত এই নিবন্ধন বাতিল হওয়া ও যুদ্ধাপরাধী দলের সদস্যপদ তারা ত্যাগ করেন নি। ফলে সাংবিধানিকভাবেই এদের প্রার্থী হওয়ার কোনো সুযোগ থাকতে পারে না। দ্বিতীয়ত এই ৪৪ জনের প্রায় সবাই সাম্প্রতিক সময়েও রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী কাজের সাথে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত হয়েছিলেন। এদের নামে আগুন সন্ত্রাসে মানুষ হত্যাসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা চলমান। এমন সব প্রার্থীরা স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ পৌরসভা দখল করতে পারলে রাষ্ট্রবিরোধী অপকর্ম আরো আস্কারা পাবে। একইসাথে সারাদেশে জনজীবন আরো বেশি নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে নিপতিত হবে। ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, আমরা আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে সাক্ষাৎ করে জামাতের সদস্যদের নির্বাচনে প্রার্থিতার বিষয়ে এ সকল বক্তব্য স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছি। এখন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধান সমুন্নত রেখে জনজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। আমরা আশা করব, একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন সে দায়িত্ব পালন করতে আরো বেশি সক্রিয় ও দায়িত্ববান হবেন। ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে স্বাধীনতাবিরোধী ও সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামাতে ইসলামের সদস্যদের এবং একই সাথে সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত সকল প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
×