ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোজাম্মেল খান

জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের গণহত্যা

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ৯ ডিসেম্বর ২০১৫

জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের গণহত্যা

ইতিহাসের অসংখ্য নজির সত্ত্বেও, ‘গণহত্যা’ শব্দটি আইনী পণ্ডিত পোলিশ ইহুদী রাফায়েল লেমকিন ১৯৪৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পাওয়ার সৃষ্টি করেন এবং এর আগে এটার কোন অস্তিত্ব ছিল না। এর পর ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গণহত্যার একটি কনভেনশন গৃহীত হয় যেখানে এটাকে এমন একটি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হয় যার সংজ্ঞা ছিল এরূপÑ ‘সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোন জাতীয়, পৌত্তলিক, গোত্র এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধ্বংসের অভিপ্রায়ে সংঘটিত।’ প্রতিরোধ ও গণহত্যার অপরাধ শাস্তি কনভেনশন নামে অভিহিত এটি ৯ ডিসেম্বর ১৯৪৮ সালে সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত এবং ১৯৫১ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। ‘গণহত্যা’ শব্দটা আন্তর্জাতিক আইন শব্দকোষে প্রবেশের প্রায় ৬০ বছর পর ২০০৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আর্মেনীয়দের, ইহুদী ও রুয়ান্ডাতে সঙঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলোকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। জাতিসংঘ ১৯৮৫ সালে গণহত্যা হিসেবে ১৯১৫ এবং ১৯১৭ সালে শত সহস্র আর্মেনীয়দের, সেইসাথে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানি কর্তৃক ইহুদীদের গণহত্যা এবং জুন ১৯৯৪ সালে আনুমানিক ৮০০০০০ রুয়াান্ডান টুটসি তাদের স্বদেশী হুটুদের হাতে সংবটিত হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। গণহত্যা বিশেষজ্ঞ এ ডির্ক মসেস-এর মতে, ‘পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) ১৯৭১ সালে স্বায়ত্তশাসন/ স্বাধীনতা আন্দোলন দমনের নামে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নৃশংস হত্যা, প্রকৃতপক্ষে গণহত্যা, উপরোল্লিখিত অন্য কোন হত্যার চেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক মনোযোগ পেয়েছে। সেটা সত্ত্বেও জাতিসংঘ এ ক্ষেত্রে এ হত্যার কোন প্রতিবাদ বা নিন্দা করেনি। ‘গণহত্যা’ শব্দটি ১৯৭১ সালে পৃথিবীব্যাপী প্রত্যক্ষদর্শীদের, সাংবাদিক এবং রাজনীতিবিদ দ্বারা বাংলাদেশে হত্যাকাণ্ডকে বর্ণনা করতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীকালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে নুরেমবার্গের এবং টোকিও বিচারের পর ১৯৭২ সালে অসংখ্য পাকিস্তানী সৈন্য এবং তাদের স্থানীয় দোসরদের বিরুদ্ধে একই ধরনের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পরিকল্পনা করা হয়। বিচারের ইস্যু প্রথমবারের মতো এমনকি ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক আদালতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। এবার ফিরে দেখা যাক আন্তর্জাতিক মিডিয়া গণহত্যা রিপোর্ট কিভাবে পরিবেশন করেছিল। ২৭ মার্চ, ১৯৭১ তারিখে ঢাকায় আমেরিকান কনসাল জেনারেল আর্চার ব্লাড, শব্দগুচ্ছ ‘সিলেক্টিভ জেনোসাইড’ ব্যবহার করে ওয়াশিংটনে একটি তারবার্তা পাঠান। এপ্রিল ৭ তারিখে নিউইয়র্ক টাইমস, ‘বাংলায় রক্তগঙ্গা’ শিরোনামে এক সম্পাদকীয়তে ‘বেসামরিক নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ’ ওয়াশিংটনের নীরবতার নিন্দা করা হয়। এর আগের দিন আর্চার ব্লাড এবং তাঁর ২০ জন ঢাকায় কর্মরত সহকর্মী ১৯৭১ সালের ৬ এপ্রিল তারিখে স্টেট ডিপার্টমেন্টে যে টেলিগ্রামটি পাঠান যার শিরোনাম ছিল’ ‘পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপারে আমেরিকান নীতির মতদ্বৈধতা’ এবং এটা সম্ভবত কূটনীতির ইতিহাসে মার্কিন বৈদেশিক নীতির বিরুদ্ধে তার নিজের দেশের কূটনীতিকদের সবচেয়ে কড়া প্রতিবাদ। এর সার সংক্ষেপ ছিল নিম্নরূপ : “আমেরিকা আজকে পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপারে যে নীতি গ্রহণ করছে এটা আমাদের জাতীয় এবং নৈতিক স্বার্থ কোনটার সাথেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাকে ঢাকায় আমেরিকান কনস্যুলেটের অফিসার, আমরা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করছি। আমাদের সরকার গণতন্ত্রকে দলিত করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সরকার অত্যাচার আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের সরকার যা করছে তাকে অনেকেই ‘নৈতিক দেউলিয়াপনা’ বলে আখ্যায়িত করবেন, বিশেষ করে যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ইয়াহিয়াকে বার্তা পাঠিয়েছে গণতন্ত্রকে সমর্থন করে, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সংখ্যাগুরু দলের নেতাকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে (ঘটনাক্রমে তিনি পাশ্চাত্যপন্থী) এবং রক্তপাত এবং দমননীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে। অথচ আমরা হস্তক্ষেপ করছি না, এমনকি নৈতিকভাবেও না, যেখানে সোজা কথায় ‘গণহত্যা’ চলছে, এ অজুহাতে যে এটা একটা সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। বহু প্রাইভেট আমেরিকানও ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ। পেগি ডারডিন মে মাসের শুরুর দিকে নিউইয়র্ক টাইমস এক নিবন্ধে এ প্রাণনাশকে ‘আধুনিক সময়ের সবচেয়ে রক্তাক্ত হত্যাযজ্ঞ হিসেবে অভিহিত করেন। যুগান্তকারী ঘটনা ঘটে জুন মাসে। করাচীতে মর্নিং নিউজের সহকারী সম্পাদক এন্থনি মাসকারেনহাস যিনি পূর্ব পাকিস্তানে ৯ পাকিস্তানী ডিভিশনে সংযুক্ত এক সরকারী যুদ্ধ সংবাদদাতা হিসেবে বাংলাদেশ সফর করেন এবং লন্ডন পালিয়ে যান। তিনি লন্ডনের সানডে টাইমসেরও সংবাদদাতা ছিলেন। ঐ দৈনিকে একই দিনে দুটো, একটি দীর্ঘ নিবন্ধ এবং একটি সম্পাদকীয়, উভয়ই ‘গণহত্যা’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়। এন্থনি মাসকারেনহাসের নিজের দেখা হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা পৃথিবীব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। ‘হংকং স্ট্যান্ডার্ড’ এক সম্পাদকীয়ের শিরোনাম ছিল, ‘আরেকটি চেঙ্গিস! পাকিস্তানী সামরিক জেনারেল টিক্কা খান নামে এর নামকরণ করা হয়। টিক্কা খান এবং তার পোশাকধারী গলাকাটার গ্যাং অর্ধেক একটি জাতির মানুষকে ধ্বংস করার চেষ্টায় লিপ্ত,’ দৈনিকটি অভিমত ব্যক্ত করে। জাতিসংঘ সদর দফতরের আঙিনায় আগস্ট ১ তারিখে দ্য বিট্লস বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত গণহত্যায় বাঙালীদের দুর্দশার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বাড়াতে ৪০,০০০ লাইভ শ্রোতাদের সামনে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ আয়োজন করে। সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি ভারত ঘুরে এসে বাংলাদেশে মানুষের ওপর পরিচালিত পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণহত্যা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করে দেন। জুন মাসের ৩ তারিখে জাতিসংঘের মহাসচিব উ থান্ট, পূর্ব পাকিস্তানে ঘটনা ‘মানব ইতিহাসের অন্যতম বিয়োগান্তক পর্ব’ উল্লেখ করে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিকে এক চিঠিতে লেখেন, ‘অবশ্যই এ ঘটনার সত্যসমূহ যোগাড় করা এবং তাদের নিজস্ব মূল্যায়ন করবেন ভবিষ্যতের ঐতিহাসিকরা, কিন্তু তা মানব ইতিহাসের একটি পৃষ্ঠায় একটি খুব ভয়ানক ফোঁটার সৃষ্টি করেছে,’ বলেন উ থান্ট তাঁর এ চিঠিতে। তবে পূর্ব পাকিস্তানে জাতিসংঘের প্রবৃত্তি মানবাধিকার নয়, মানবিক সমস্যা দ্বারা চালিত হয়। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি উ থান্টের ইঙ্গিত আমলে নেননি এবং ভারতের সেনাবাহিনী মুক্তিবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধে অংশ না নেয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদ ঘুমিয়ে ছিলেন এবং স্পষ্টভাবে উপমহাদেশে পরিস্থিতি বিবেচনা করা হয়নি। তবে ডিসেম্বরে নিরাপত্তা পরিষদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে যুদ্ধবিরতির, যা ছিল স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য এবং সেটার অর্থ ছিল গণহত্যাকে নিরবছিন্নভাবে চলতে দেয়া। তবে পর পর দুটো সোভিয়েত ভেটো ভারত ও বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীকে সুযোগ করে দেয় গণহত্যাকারী বাহিনীকে পরাজিত করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় আত্মসমর্পণে বাধ্য করার, যার পরিণতিতে জন্ম হয় বাংলাদেশের এবং পৃথিবীর অন্যতম নৃশংস গণহত্যার পরিসমাপ্তি। জাতিগত বৈষম্যের বিলোপ কমিটি ১৯৭১ সালের এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর মাসে তাদের সভায় কিন্তু গুরুত্বের সাথে বাংলাদেশে গণহত্যা ওই সভায় বিবেচনা করা হয়নি। ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশন সদস্য দেশের ‘অভ্যন্তরীণ প্রশ্ন’ এর অজুহাতে কোন উদ্বেগ বা নিন্দা বা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেনি। ক্রোধান্বিত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী অকৃতকার্যভাবে ‘অভ্যন্তরীণ প্রশ্ন’-এর জবাব দিতে গিয়ে বলেন, ‘এটা কোন দেশের ক্ষুদ্র অংশ নয় যে তারা বৃহত্তর অংশ থেকে বিছিন্ন হতে চাচ্ছে। এটা হলো দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ যারা তাদের অধিকার দাবি করছে।’ তারপর সুদীর্ঘ ৪৪ বছর কেটে গেছে এবং উ থান্ট-এর পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, ‘এ ঘটনার সত্যসমূহ যোগাড় করা এবং তাদের নিজস্ব মূল্যায়ন করবেন ভবিষ্যতের ঐতিহাসিকরা’। অনেক বই লেখা হয়েছে, সেমিনার ও কর্মশালা বিশ্বের বহু অংশে অনুষ্ঠিত হয়েছে, অকাট্য দলিল এবং কঠিন এবং জমাটবদ্ধ প্রমাণসহ জাতিসংঘের কাছে দাবি করা হয়েছে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়ার জন্য। বাংলাদেশের গণহত্যা অনেক মার্কিন ও কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় ‘সত্য এবং বিচার’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গণহত্যাকে স্বীকৃতির দেয়ার জন্য জাতিসংঘের কাছে দাবি করা হয়। তার সম্প্রতি প্রকাশিত, বহুবিধ পুরস্কার বিজয়ী, অনেক-প্রশংসিত বই, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্যারি ব্যাসের ‘ঞযব ইষড়ড়ফ ঞবষবমৎধস : ঘরীড়হ, করংংরহমবৎ, ধহফ ধ ঋড়ৎমড়ঃঃবহ এবহড়পরফব’ নামের বইটির ভূমিকায় তিনি বলেন, ‘এ বইটা হলো পৃথিবীর দুই বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ানক মানবিক সঙ্কটে একে অপরের সাথে কিভাবে সম্মুখীন হয়েছে সেটা নিয়ে। সে হত্যাযজ্ঞ, যেটা সংঘটিত হয়েছিল এখনকার বাংলাদেশ, সাম্প্রতিক ইতিহাসের এক মুখ্য নৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যদিও আজ এটা আমেরিকানদের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কাছে অনেক বেশি পরিচিত। আধুনিক যুগের হিংস্রতার অন্ধকার কাহিনীতে এটা বসনিয়া তুলনায় অধিকতর রক্তক্ষয়ী এবং অনেকটা রুয়ান্ডার সমকক্ষ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। এ ঘটনা ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের ওপর, যেখানে বিশ্বের ছয় ভাগের এক ভাগ মানবজাতি বাস করে, পর্বতসম প্রভাব ফেলেছিল।’ তবুও, গিনেস বুক অব রেকর্ডস বিংশ শতাব্দীর মধ্যে শীর্ষ পাঁচ গণহত্যার এক গণহত্যার হিসেবে তালিকাভুক্ত করা সত্ত্বেও ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশনের মনকে টলাতে পারেনি এবং ৩০ লাখ নিরস্ত্র মানুষ হত্যাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এর বিপরীতে, গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী আসামিদের আইনের যথাযথ প্রক্রিয়ায় পন্থার সুযোগ যেখানে দেয়া হয়েছে, সেখানে কোন আসন্ন মৃত্যুদ- কার্যকর করার আগে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) বিচার প্রক্রিয়া নিন্দা করার কোন সুযোগ ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশন হাতছাড়া করছে না। গত ১৯ নবেম্বর জেনেভায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে, ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশনের এক মুখপাত্র সরকারের আইসিটি দ্বারা দেয়া মৃত্যুদণ্ড বাস্তবায়ন করা উচিত নয় বলে বিবৃতিতে বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালে পরিচালিত বিচারের নিরপেক্ষতা নিয়ে আসামিদের সন্দেহ উত্থাপিত হয়েছে’ এ কারণে। বিবৃতিটি এসেছে সাম্প্রতিক দু’জন যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদ- প্রতিক্রিয়ায় আগে। আফসোসের কথা হলো, ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশন এমন দুই অপরাধীর জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করলেন যাদের অপরাধ আইসিটি বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভাষায়, ‘নিঃসন্দেহে যেমন ভয়ঙ্কর অপরাধের ধরনের মধ্যে পড়ে যা মানবজাতির সমষ্টিগত বিবেককে কাঁপিয়ে তোলে।’ ৭১ সালে ত্রিশ লাখ নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষকে নৃশংসভাবে যখন হত্যা করা হয়েছিল তখন একটি সার্বভৌম দেশের ‘অভ্যন্তরীণ প্রশ্ন’-এর অজুহাতে ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশন মুখ বুজে ছিল। এখন আর একটি ‘সার্বভৌম দেশ’-এর কয়েকজন নাগরিকের স্বচ্ছ এবং খোলা আদালতে বিচার এবং দণ্ডিত আসামিদের দণ্ড কার্যকরণ (‘অভ্যন্তরীণ প্রশ্ন’) নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার নৈতিক কর্তৃত্ব কি ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইট কমিশনের রয়েছে? লেখক : কানাডা প্রবাসী অধ্যাপক
×