ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টেস্টে উত্থানের শুরু অস্ট্রেলিয়া থেকে ॥ কোহলি

প্রকাশিত: ০৫:২২, ৯ ডিসেম্বর ২০১৫

টেস্টে উত্থানের শুরু অস্ট্রেলিয়া থেকে ॥ কোহলি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলেছিল ভারত। গত বছর শেষদিকে অস্ট্রেলিয়া সফরেই মূলত বিরাট কোহলির ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেয়ার শুরু। বরাবরই অস্ট্রেলিয়া সফরে খুব বাজে ছিল ভারতের নৈপুণ্যে। তবে এবার দারুণ পারফর্মেন্স দেখায় ভারতীয় দল। চার টেস্টের মধ্যে দুটিতে ড্র এবং এ্যাডিলেড টেস্টে প্রায় জয়ের কাছাকাছি গিয়েও হেরে যায় ভারত। এরপর শ্রীলঙ্কার মাটিতে ২২ বছর পর টেস্ট সিরিজ জেতে ভারত, ব্যবধান ছিল ২-১। আর বিশ্বের এক নম্বর দল দক্ষিণ আফ্রিকাকে ঘরের মাটিতে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে এক ধাপ ওপরে (দুই নম্বর) উঠে এসেছে ভারত। অধিনায়ক কোহলি মনে করেন ভারতীয় টেস্ট দলের এ উত্থান শুরু হয়েছে মূলত অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভাল করার মাধ্যমে। এ তরুণ অধিনায়ক দাবি করেন নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়টি বেশ ভালভাবেই মানিয়ে গেছে তার সঙ্গে। এবার ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজে বিন্দুমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। শুধু বৃষ্টির কল্যাণে ব্যাঙ্গালুরু টেস্ট ড্রয়ের স্বাদ পেয়েছে প্রোটিয়া শিবির। কিন্তু বাকি তিন টেস্টেই জয় তুলে নিয়েছে ভারত। এ বিষয়ে কোহলি বলেন, ‘অধিনায়কত্ব আমার সঙ্গে নিখুঁতভাবে মানিয়ে গেছে। আমি অধিনায়ক হিসেবে পরিকল্পনা তৈরি করাটা বেশ উপভোগ করি। আর যখন সেসব কাজে লাগে চমৎকার এক অনুভূতি হয়।’ গত ৯ বছরে এই প্রথম দেশের বাইরে সিরিজ হারল দক্ষিণ আফ্রিকা। আর জানুয়ারিতে স্থায়ী অধিনায়ক হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো পূর্ণাঙ্গ কোন সিরিজে ভারতকে নেতৃত্ব দিলেন কোহলি। কোহলি মনে করেন সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দেয়ার পরই ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ বিষয়ে কোহলি বলেন, ‘উন্নতির বিষয়টা আরও ভালভাবে দেখা গেছে এক নম্বর টেস্ট দলকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে দেয়ার পর। আমি খুবই আশ্চর্য হয়েছি তাদের ব্যাটিং করার মনোভাব দেখে। কিন্তু আমাদের বোলাররা কোন সময়ই বাড়তি কোন স্নায়ুচাপে ভোগেনি।’ ভারতীয় দল গত বছর নবেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফরে টেস্ট সিরিজ থেকেই নিজেদের উন্নতির শুরুটা করেছিল। তরুণ উদীয়মান দলটি দারুণ খেলেছিল। আর সেখান থেকেই আত্মবিশ্বাস বাড়তে শুরু করেছে। এ বিষয়ে কোহলি বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট হচ্ছে সেই ফরমেট যেখানে আমরা সবাই ভাল করতে চাই। আমি অনুভব করছি বর্তমান পরিস্থিতিটার সূচনা হয়েছে অস্ট্রেলিয়া থেকেই। যেভাবে আমরা সেখানে খেলেছি সেটার মাধ্যমে। এমনকি পরাজিত হয়েও আমরা নিজেদের সত্তাটা দেখিয়েছি। এ কারণে সেগুলো এক তরফা ম্যাচ ছিল না। আর এসবই আমাদের টেস্ট দল হিসেবে একটা বিশ্বাস দিয়েছে। এখন মনে হচ্ছে আমরা বিশ্বজুড়েই ভাল খেলতে পারি। কারণ অস্ট্রেলিয়াতে ভাল করার পর সেটার ছাপ আমরা শ্রীলঙ্কায় দেখিয়েছি। কিছু পরিকল্পনা, নীতির ভাল প্রয়োগ ঘটাতে পেরেছি যা দারুণ কিছু করার জন্য প্রয়োজন ছিল। তিন সিরিজ আমি দলকে নেতৃত্ব দিলাম পূর্ণাঙ্গ অধিনায়ক হিসেবে। খুব উপভোগ করেছি। আমি এ বিষয়টা খুবই পছন্দ করি যে দলের সব বিষয়েই আমার একটা সংশ্লিষ্টতা আছে।’ সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ ও শেষ টেস্টে সম্প্রতি সবচেয়ে ধীরতম ব্যাটিংয়ের নমুনা দেখিয়েছে। অনেক সতর্ক ব্যাটিং করেও হেরেছে ৩৩৭ রানের বড় ব্যবধানে। এবার অধিনায়ক হাশিম আমলাও ছিলেন ব্যর্থ। ৭ ইনিংসে ব্যাট করে মাত্র ১১৪ রান পেয়েছেন। এ বিষয়ে আমলা বলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে রান করার মাধ্যমে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব হয়। কিন্তু সেটা করতে না পারা খুবই হতাশাজনক। আমরা ব্যাটিংয়ের দিক থেকে নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছি।’ ২০১০ সালে ভারত সফরে দারুণ সফল ছিলেন আমলা। একটি ২৫৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেলা ছাড়া আরও দুটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন তিনি। অথচ এবার ব্যর্থ আমলা দিল্লী টেস্টে খুব বাজে এক রেকর্ডের জন্ম দিলেন। ২৪৪ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেললেন যা টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে ধীরগতির স্কোরিং রেট। এ বিষয়ে আমলা বলেন, ‘কেউ এভাবে বল আটকাতে চায় না। কিন্তু এটা প্রয়োজন ছিল ঝুঁকিপূর্ণ শট না খেলে টিকে থাকার জন্য। এটা আসলেই কঠিন এবং অস্বাভাবিক যেকোন ব্যাটসম্যানের জন্য।’
×