সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসলামপন্থীদের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো পাকিস্তানজুড়ে। এরই মধ্যে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মুলতানের বাহাউদ্দিন জাকারিয়া ইউনির্ভাসিটি হিংসা-বিদ্বেষ রোধে লড়াই চালিয়ে যায়। অল্প পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়টি সাম্প্রতিক দিনগুলোতে স্পটলাইটের মধ্যে চলে এসেছে। কারণ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত এক ছাত্রী তাশফিন মালিক ও তার মার্কিন বংশোদ্ভূত স্বামী সৈয়দ রিজওয়ান ফারুক গত সপ্তাহে ক্যালির্ফোনিয়ায় এক পার্টিতে হামলা চালিয়ে ১৪ জনকে হত্যা করে। এদিকে এফবিআই সোমবার জানিয়েছে, ওই দম্পতি বেশকিছু দিন আগে চরমপন্থীতে পরিণত হন এবং তারা এ হত্যাকা- ঘটানোর আগে স্থানীয় শ্যূটিং রেঞ্জে গিয়ে টার্গেট প্র্যাকটিস করেছেন।
এ হামলার সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাশফিনের ভূমিকা বিশেষ আগ্রহ তৈরি করেছে। কারণ হামলার দিন তিনি ফেসবুকের একটি পোস্টে লিখেছেন, এই দম্পতি এ হত্যাকা- মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রতি উৎসর্গ করছে। এদিকে এ হামলার জন্য আইএস তার স্বঘোষিত খিলাফতের সৈন্য হিসেবে ওই দম্পতির প্রশংসা করেছে। তবে তাশফিন ও ফারুককে তাদের গ্রুপের সদস্য বলেনি তারা। এই দম্পতি হামলার পরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তাদের ছয়মাসের একটি মেয়ে রয়েছে। ২০০৭ সালের প্রথম দিকে তাশফিন যখন মুলতান ইউনিভার্সিটির ফার্মেসির ছাত্রী ছিলেন তখন তালেবান জঙ্গীরা পাকিস্তানে একের পর এক হামলা চালাতে থাকে এবং মুলতান ও এর পাশে তাশফিনের নিজ শহর চরমপন্থী সাম্প্রদায়িক কর্মকা-ের কেন্দ্র হয়ে ওঠে। শিক্ষকরা তাকে ভদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবেই অভিহিত করেছেন। তিনি খুবই ধার্মিক ছিলেন, সবসময় নেকাব পরতেন এবং পুরুষ শিক্ষার্থীদের সব সময়ই এড়িয়ে চলতেন। সেখানে পড়ার সময় কোন পুরুষ শিক্ষক তার চেহারা দেখেননি। যা তাকে কম সময়ের মধ্যেই অনন্য করে তোলে। তবে তার জঙ্গীবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার সময় ও পরিস্থিতি এখনও রহস্যের মধ্যে রয়েছে তদন্তকারীদের কাছে। প্রবাসী পাকিস্তানী সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত কোটায় ভর্তি হলেও তাশফিন তার মেধা ও সামর্থ্য দিয়ে দ্রুতই অধ্যাপকদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন। অনেকেই মনে করেছিলেন তিনি হয়তো পড়া শেষে প্রভাষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেবেন।- ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস