ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আইএসবিরোধী রুশ অভিযান জোরদার ॥ তিন দিনে দু’হাজার বোমাবর্ষণ

সাবমেরিন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫

সাবমেরিন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

রাশিয়া ভূমধ্যসাগরে মোতায়েন এক সাবমেরিন থেকে প্রথমবারের মতো ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের স্থাপনাগুলোর ওপর আকাশ পথে হামলা জোরদার করেছে। মস্কো সাবমেরিন থেকে এর সর্বশেষ হামলা চালিয়ে সামরিক শক্তি দেখাল। এর আগে রুশরা কাস্পিয়ান সাগরে মোতায়েন যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। রাশিয়া আরও জানায়, সন্ত্রাসী দলটির ওপর ৫ ডিসেম্বর থেকে তিন দিনের অভিযানে প্রায় ২ হাজার বোমা বর্ষণ করে ৬শ’র বেশি লক্ষ্যস্থল ধ্বংস করা হয়েছে। খবর ডেইলি মেইল ও এক্সপ্রেসের। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু কাস্পিয়ান সাগরে মোতায়েন যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পাশাপাশি সিরিয়াতে সাবমেরিন থেকেও বোমাবর্ষণের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে শোইগু প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে বলেন, আমরা ভূমধ্যসাগরে মোতায়েন রস্তভ-অন-দন সাবমেরিন থেকে ক্যালিবর ক্লুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছি। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিচু দিয়ে ১৫০০ মাইল ওড়ে গিয়ে শত্রুর আস্তানায় আঘাত হানতে সক্ষম বলে মনে করা হয়। শোইগু আরও বলেন, রাশিয়া মঙ্গলবার জিহাদী দল ইসলামিক স্টেটের কার্যত সিরীয় রাজধানী রাকার আশপাশে সন্ত্রাসীদের দুটি ঘাঁটিতে লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করে। শোইগু জানান, বিমান ও সাবমেরিন থেকে সাফল্যের সঙ্গে অভিযান চালানোতে সব লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তেল অবকাঠামো, অস্ত্রভা-ার ও মাইন তেরির একটি কারখানার ওপর আঘাত হানা হয়। প্রেসিডেন্ট পুতিন মঙ্গলবার বলেন, সাবমেরিন থেকে ছোড়া ক্যালিবর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর সঙ্গে পরমাণু যুদ্ধাস্ত্র সংযুক্ত করা যেতে পারে, তবে তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এরূপ যুদ্ধাস্ত্রের কখনও প্রয়োজন হবে না বলে আশা ব্যক্ত করেন। শোইগু বলেন, রুশ সামরিক বাহিনী সাবমেরিন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে যাচ্ছে বলে মস্কো ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও সিরিয়াতে এর নিজস্ব বিমান অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। শোইগু আরও বলেন যে, সামরিক জেটগুলো তিনদিন সিরিয়ায় ৩শ’ বারেরও বেশি কম্ব্যাট মিশন চালিয়ে ৬ হাজারেরও বেশি লক্ষ্যস্থলে আঘাত হানে। এক সরকারী ভিডিওতে রাশিয়ার দূরপাল্লার টিইউ বোমারু বিমানগুলো থেকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দখল করা ভবনগুলোর ওপর ব্যাপক বোমাবর্ষণ করার দৃশ্য দেখানো হয়। মঙ্গলবার রুশ সেনাবাহিনীর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ৫ ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত আইএস জঙ্গীদের ওপর ১৯২০টি বোমাবর্ষণ করা হয়। এতে বলা হয়, ৭০টি কমান্ড সেন্টার, ২১টি প্রশিক্ষণ শিবির, ছয়টি গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক কারখানা, গোলাবারুদের ৪৩টি ডিপো এবং ছয়টি তেল স্থাপনা ধ্বংস করা হয়। এতে আরও বলা হয়, ওইসব হামলার ফলে আলেপ্পো, ইদলিব, পার্বত্য লাতাকিয়া ও পালমিরা এলাকায় অন্যান্য সশস্ত্র দলের সহযোগিতা নিয়ে সিরীয় সেনাবাহিনীর আরও অভিযান চালানোর পথ সুগম হলো। সাবমেরিনটি টের্পেডো ও পানি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্যালিবর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রসজ্জিত। প্রায় ৪ হাজার টন ওজনের রস্তভ-অন-দন ওই সাবমেরিন ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৩ মাইল বেগে পানির নিচ দিয়ে চলতে পারে এবং প্রায় ১ হাজার ফুট গভীরে ডুব দিতে পারে। এ ধরনের সাবমেরিনের লুকিয়ে চলার সামর্থ্যরে জন্য একে ন্যাটো ‘ব্ল্যাক হোল’ বলে থাকে। এতে সচরাচর ৫০ জনেরও বেশি ক্রু থাকে। এটি নতুন করে জ্বালানি ও রসদ নেয়ার জন্য বন্দরে ফিরে আসার আগে প্রায় ৪০ দিন সমুদ্রে থাকতে পারে। ক্যালিবর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে আবার এর কার্যকরতা দেখাল।
×