ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুত ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

প্রকাশিত: ০১:৪০, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫

বিদ্যুত ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

অনলাইন ডেস্ক ॥ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, পরিবেশ বান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি করার পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যুতের সিস্টেম লস ও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। রাষ্ট্রপতি আজ বৃহস্পতিবার ‘জাতীয় বিদ্যুৎ মেলা ও জ্বালানি সপ্তাহ-২০১৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই যথেচ্ছ বিদ্যুৎ ব্যবহারের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে। পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমাতে হবে।’ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিদ্যুতের গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, শিল্প-কারখানা, কৃষি, যোগাযোগসহ সকল আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার সরকারের পরিকল্পনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন নতুন শিল্প কারখানা বিশেষ করে পল্লী এলাকায় কৃষি ভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানা স্থাপন ও এগুলো চালু রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুতের চাহিদা ২৪ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৯ হাজার মেগাওয়াটে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, বিদ্যুতের চাহিদা বিবেচনা করে সরকার এ খাতকে সরকারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং ইতোমধ্যে এ খাতের উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ভারত এবং অন্যান্য সার্ক দেশসমূহ হতে বিদ্যুৎ আমদানির পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ইতোমধ্যে ১১ হাজার ৮৭৭ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণের জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্কারমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণের উন্নয়ন সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরো বলেন, এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৪১ হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন স্থাপন করা হয়েছে এবং দেশের ৭৪ শতাংশ জনগণ বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের অবশিষ্ট জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে সরকার ২ লাখ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপনের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসকে দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি বিবেচনা করা হয়। এই গ্যাস বর্তমানে দেশের শিল্প জ্বালানির তিন-চতুর্থাংশ পূরণ করছে। সরকার ইতোমধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লা উৎপাদনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি আরো বলেন, ২০০৯ সালের পর থেকে ৩টি নতুন গ্যাসফিল্ড আবিষ্কৃত হয়েছে এবং এসব গ্যাস ক্ষেত্র থেকে ৯৮৬ এমএমসিএফডি গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিবেশবান্ধব ও টেকসই। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অর্থমন্ত্রী এএমএ মুহিত ও প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ফিতা কেটে বিদ্যুৎ সপ্তাহের উদ্বোধনের পর রাষ্ট্রপতি মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
×