ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সম্প্রীতির স্মারক

ঝলক

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫

ঝলক

হিন্দু দম্পতি সন্তানের নাম রাখলেন ইউনুস। মুসলিম নাম অনুসরণে। ঘটনা সম্প্রীতির স্মারক ভারতের বন্যাকবলিত চেন্নাইয়ের। চেন্নাইবাসী হিন্দু দম্পতি মোহন ও চিত্রা যে এলাকায় থাকেন তা বর্তমানে বন্যা কবলিত। ঘরের ভিতর বেনোজল। রাস্তায় গলাসমান পানি। হঠাতই প্রসব বেদনা ওঠে চিত্রার। এমন অবস্থা কী করণীয়, তার কোন কূলকিনারা করে উঠতে পারছিলেন না পানিবন্দী মোহন। এমন সময় ত্রাতার ভূমিকায় অবর্তীণ হন এক যুবক। নাম মহম্মদ ইউনুস। মুসলিম ধর্মাবলম্বী। নৌকা করে হাসপাতালে পৌঁছে দেন বিপদাপন্ন দম্পতিকে। এরপর হাসপাতালে জন্ম নেয় এক কন্যা শিশু। ইউনুসের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাতে মোহন-চিত্রা দম্পত্তি সদ্যজাত শিশুর নাম দেন উদ্ধারকর্তার নামানুসারে। ধর্মীয় সম্প্রতি ও মানবতার স্মারক এই নামকরণ ইউনুসকে জনায় ওই দম্পতি। মোহনকে পাঠানো সেই বার্তা নিজের ফেসবুক পেজেও পোস্ট করেছেন মোহন। সাম্প্রতিক কালে সেদেশে রাজনৈতিক বিভাজন ও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি যখন বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটির বহুত্ববাদী চেহারাকে ক্রমেই মলিন করে তুলছে, তখন সেই ভারতেই সবাই দেখল মানবতার এমন নজির। সোয়া ঘণ্টার জীবনে জীবনদান যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা এমা ও এ্যান্ড্রু দম্পতি। সুখের সংসার। নবজাতকের আগমনী বার্তা। শান্তিতেই কাটছিল দিন। এমার গর্ভধারণের ১৩ সপ্তাহের মাথায় এলো দুঃসংবাদ। পেটে কন্যাশিশু জটিল অসুখে আক্রান্ত। মাথার স্বাভাবিক বৃদ্ধি হচ্ছে না। জন্মের কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যাবে নবজাতক। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিলেন গর্ভপাতের। এমা ও এ্যান্ড্রু দম্পতি সিদ্ধান্ত নিলেন, নবজাতককে ক্ষণিকের জন্য হলেও পৃথিবীর আলোর মুখ দেখাবেন। এর পেছনে ছিল ওই দম্পতির আরও মহৎ উদ্দেশ্য। ওই নবজাতকের শরীরের নানা অঙ্গ দান করে দেন তারা। জন্ম নেয়ার পর ৭৪ মিনিট অর্থাৎ মাত্র সোয়া ঘণ্টা বেঁচে ছিল কন্যাশিশুটি। মা-বাবা নাম রেখেছেন হোপ লি। এই ছোট্ট হোপের মাধ্যমেই বাঁচার আশা ফিরে পেয়েছেন অন্য এক পূর্ণবয়স্ক মানুষ। হোপের মৃত্যুর কিছুক্ষণের ম্যধ্যেই কিডনি, যকৃৎ, অন্যান্য অঙ্গ বের করে সংরক্ষণ করা হয়। সেই কিডনি প্রতিস্থাপিত হয় ওই মুমূর্ষু ব্যক্তির দেহে। দম্পতি জানায়, নবজাতকের দেহদানের সিদ্ধান্ত তাদের জন্য কঠিন ছিল। তবে অন্য কারও দেহে তো হোপ বেঁচে রইল। এটা কিছুটা হলেও কষ্ট লাঘব করবে। সোয়া ঘণ্টার জীবনেই হোপ জীবন দিয়ে গেল অন্য এক মৃতপ্রায় মানুষকে। বর্তমানে এই নবজাতক হোপই যুক্তরাজ্যের কনিষ্ঠতম অঙ্গদানকারী। অজ্ঞতম দেশ সবচেয়ে ধনী, সবচেয়ে সুখী, সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণÑ এ রকম নানা তকমার দেশের কথা আমরা শুনেছি। এবার নতুন করে শোনা গেলো অজ্ঞতম দেশের কথা। অজ্ঞতার বিচারে প্রথম স্থান মেক্সিকোর দখলে। তথ্য বিট্রিশ রিসার্চ সংস্থা ইপসস মোরির সমীক্ষার। ৩৩ দেশের ২৫,০০০ নাগরিকের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষায় অসাম্য, ধর্মহীন জনসংখ্যা, নারীর কর্মসংস্থান ও ইন্টারনেটের সুলভতাÑ এই চারটি বিষয়ের অংশগ্রহণকারীদের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। মেক্সিকো বিশ্বের অজ্ঞতম দেশের শিরোপা অর্জন করেছে, কারণ এই চারটি বিষয় নিয়ে তাদের ধারণা যৎসামাণ্যই। অন্যদিকে বিচক্ষণতম রাষ্ট্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। এই সমীক্ষার নিরিখে অবশ্য মেক্সিকোবাসীকে অজ্ঞ অর্থাৎ বোকা ভাবার কোন কারণ নেই। সমীক্ষার চার বিষয়ে ওই দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনা কম; এই আর কী!
×