ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিক্ষার নামে প্রতারণা করলে কঠোর ব্যবস্থা ॥ শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫

শিক্ষার নামে প্রতারণা করলে কঠোর ব্যবস্থা ॥ শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিক্ষার নামে প্রতারণার আশ্রয় নিলে অভিযুক্ত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেছেন, সরকার ইতোমধ্যেই প্রতারণার আশ্রয় নেয়া অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ্ ানিয়েছে। ভবিষ্যতেও ছাড় দেয়া হবে না। তিনি একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফিসহ বিভিন্ন ব্যয় নির্ধারণে উদার দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর পিএসসি কনভেনশন হলে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মোঃ আবদুল হামিদ মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন তিনি। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কে এম মোহসীন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ডাঃ মুহম্মদ শহীদুল কাদির পাটোয়ারী, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী প্রমুখ। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তার বক্তৃতায় জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার ব্যয় একটি সীমা পর্যন্ত নির্ধারিত রাখার আহ্বান জানান। বলেন, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে ব্যবসা ও মুনাফার চিন্তা ত্যাগ করে সেবার মনোভাব নিয়ে জনকল্যাণে শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রাখতে এগিয়ে আসতে হবে। যে সব বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় মুনাফার উদ্দেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল, সরকার ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যেসব বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে স্বার্থ হাসিল করতে চাইবে, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার সম্ভাবনার যে দ্বার উন্মোচন করেছে, তা সফল করে তুলতে হবে। বর্তমানে দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ও শিক্ষার্থী সংখ্যা অনেক বেশি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৩৮টি, আর বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৮৩টি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আছে এক লাখ বেশি। সরকার সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকারী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে কোন পার্থক্য করে না মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তারা সকলে আমাদের সন্তান, জাতির ভবিষ্যত। তাদের সকলের জন্যই আমরা মানসম্মত শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই। শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে হবে। উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান এখন বজায় রাখাই এখন আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে আমরা ২০১০ সালে যুগোপযোগী বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস করেছি। আইনের আওতায় আমরা সব বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আনতে সক্ষম হয়েছি। যারা উচ্চ শিক্ষাকে ব্যবসায় পরিণত করতে চেয়েছিল এ আইনের মাধ্যমে তাদের প্রতিহত করতেও সক্ষম হয়েছি। সমাবর্তন বক্তা শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে বাজারমুখী ও কর্মসংস্থাানমুখী শিক্ষা হওয়াতে মনন চর্চা হচ্ছে না। সুশিক্ষিত হতে হলে, মনন চর্চা করতে হবে। তবে তো পকৃত শিক্ষা অর্জিত হবে। তিনি আরও বলেন, বিদ্যা শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে বিবেক, বুদ্ধি ও মনুষ্যত্বের জাগরণ ঘটানোই হলো প্রকৃত শিক্ষা। নতুন গ্রজুয়েটদের সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হওয়ার আহ্বান জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. কেএম মোহসীন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। রিট প্রত্যাহারের দাবি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ॥ জাতীয়করণ হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রিটকে অযৌক্তিক দাবি করে তা প্রত্যাহার ও অপপ্রচার বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতি। সংগঠনের নেতারা এক বিবৃতিতে একই সঙ্গে বলেছেন, বিভাগীয় পরীক্ষার মাধ্যমে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং সহকারী শিক্ষকদের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে পদোন্নতি প্রদানের সুযোগ দিতে হবে। বিবৃতিতে সাক্ষর করেন সংগঠনের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, শিক্ষক নেতা নূর মুহাম্মাদ পাটোয়ারী, গোলাম খালেক, সামছুল আলম, হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
×