ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ‘মানবাধিকার দিবস থেকে বিজয় দিবস’ উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ‘মানবাধিকার দিবস থেকে বিজয় দিবস’ উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গান, কবিতা, নৃত্য ও আলোচনার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে বৃহস্পতিাবার থেকে শুরু হয় ‘মানবাধিকার দিবস থেকে বিজয় দিবস’ শীর্ষক উৎসব। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সপ্তাহব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাদুঘর প্রাঙ্গণে প্রতিদিন বিকেল ৪টায় শুরু হবে এ অনুষ্ঠান। জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠে আগামী ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একই সময়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডাঃ সারওয়ার আলীর স্বাগত ভাষণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। স্বাগত ভাষণে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য চলমান ও কিছু রায় কার্যকরের ফলে দেশ আস্তে আস্তে কলঙ্কমুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এবারের বিজয় উৎসব তাই ভিন্ন মাত্রা এনে দেবে। মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘদিন পরও আমরা জাতিগত জীবনে যা অর্জন করতে পারিনি, জাতি হিসেবে আমাদের যেসব স্খলনতার উত্তরণ ঘটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে ঘরে ঘরে, সমাজে-রাষ্ট্রে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য শপথ নেয়ার সময় এখনই। তিনি আরও বলেন, চলতি বছর থেকে দুইটি পারস্পারিক ধারা বাংলাদেশে বিদ্যমান। একটি ধারা দেশী-বিদেশী সকল চাপের মধ্যেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করছে। যার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ। আরেকটি ধারা ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করছে। এ দুই ধারার মধ্য থেকে মুক্তিযুদ্ধের ধারার বাংলাদেশ পুনরায় জেগে উঠবে। এরপর ‘ইম্পর্টেন্স অব দ্য ন্যাশনাল ট্রায়ালস্ অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রইমস ইন বাংলাদেশ : এ লিগেল রেসপন্স টু ক্রিটিকস্’ শীর্ষক বক্তব্য প্রদান করেন অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুয়ারি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এম রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, পূর্ব তিমুর ও কম্বোডিয়ায় জাতিসংঘের সহায়তায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য শুরু হয়েছিল। কিন্তু অর্থ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে সেই বিচারপ্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ নিজস্ব শক্তিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে। এ বিচারপ্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনানুযায়ী সম্পূর্ণরূপে বৈধ। পরে দলীয় আবৃত্তি নিয়ে মঞ্চে আসে স্বরচিত্র আবৃত্তিচর্চা ও বিকাশ কেন্দ্রের শিল্পীরা। তাদের ‘আর কত রক্তের দরকার হবে’ শীর্ষক দলীয় আবৃত্তিতে দর্শক মুগ্ধ হয়। আবৃত্তিগুচ্ছের গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ছিলেন মাহিদুল ইসলাম। পরে শুক্লা সরকারের পরিচালনায় দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে ধ্রুপদ কলা কেন্দ্রের শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় সংগ্রহকারী ছাত্রছাত্রীদের ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য ও সহস্রতম ভাষ্য পাঠ’ শীর্ষক পরিবেশনা দিয়ে শুরু হবে অনুষ্ঠান। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করবে মুক্তধারা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র। সাংস্কৃতিক পর্বে আরও অংশগ্রহণ করবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যালিক্স প্রিক্যাডেট স্কুল ও বহ্নিশিখার শিক্ষার্থীরা। প্রাচ্যনাটের পরিবেশনায় মঞ্চায়ন হবে নাটক ‘গর্ত’। শুরু হলো দেশব্যাপী বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে এবং ৬৪ জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৫।’ ‘সবার জন্য চলচ্চিত্র, সবার জন্য শিল্প সংস্কৃতি’ স্লোগান নিয়ে শুরু হওয়া এ উৎসব শেষ হবে ২৪ ডিসেম্বর। সন্ধ্যা ৬টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। উৎসবের উদ্বোধনী সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে আলোচক ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকী, মসিহউদ্দিন শাকের এবং মোরশেদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক সারা আরা মাহমুদ। পক্ষকালব্যাপী এ উৎসবে জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তন এবং সকল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে একযোগে একই ধরনের চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। উদ্বোধনী আলোচনা পর্বের পর জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় দেখানো হয় তারেক মাসুদ পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’। এই উৎসবে আজ ১১ ডিসেম্বর দেখানো হবে এ্যাডাম দৌলার ‘বৈষম্য’ (সকাল ১০টা), আলমগীর কবিরের ‘সীমানা পেরিয়ে’ (বিকেল ৪টা), জহির রায়হানের ‘কাচের দেয়াল’ (সন্ধ্যা ৬টা), ১২ ডিসেম্বর প্রদর্শিত হবে মসিহউদ্দিন শাকের ও শেখ নিয়ামত আলীর ‘সূর্যদীঘল বাড়ি’ (বিকেল ৪টা), প্রসূন রহমানের ‘সুতপার ঠিকানা’ (সন্ধ্যা ৬টা)। ১৩ ডিসেম্বর গৌতম ঘোষের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ (সন্ধ্যা ৬টা), ১৪ ডিসেম্বর বাদল রহমানের ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ (সন্ধ্যা ৬টা), ১৫ ডিসেম্বর হারুনুর রশীদের ‘মেঘের অনেক রং’ (সন্ধ্যা ৬টা) ছবিগুলো প্রদর্শন করা হবে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে মোরশেদুল ইসলামের ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ (বিকেল ৪টা), নাসিরউদ্দীন ইউসুফের ‘গেরিলা’ (সন্ধ্যা ৬টা), ১৭ ডিসেম্বর সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ (সন্ধ্যা ৬টা), ১৮ ডিসেম্বর নোমান রবিনের ‘কমন জেন্ডার’ (সকাল ১০টা), তারেক মাসুদের ‘রানওয়ে’ (বিকেল ৪টা), মুরাদ পারভেজের ‘বৃহন্নলা’ (সন্ধ্যা ৬টা) প্রদর্শিত হবে। ১৯ ডিসেম্বর আবু সাইয়ীদের ‘কীর্ত্তনখোলা’ (বিকেল ৪টা), আকরাম খানের ‘ঘাসফুল’ (সন্ধ্যা ৬টা), ২০ ডিসেম্বর সাইদুল আনাম টুটুলের ‘আধিয়ার’ (সন্ধ্যা ৬টা), ২১ ডিসেম্বর তানভীর মোকাম্মেলের ‘লালন’ (সন্ধ্যা ৬টা), ২২ ডিসেম্বর সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকীর ‘ঘুড্ডি’ (সন্ধ্যা ৬টা), ২৩ ডিসেম্বর আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘সারেং বৌ’ (সন্ধ্যা ৬টা) এবং ২৪ ডিসেম্বর গাজী রাকায়েতের ‘মৃত্তিকা মায়া’ (সন্ধ্যা ৬টা) ছবিগুলো দেখানো হবে। উৎসবের চলচ্চিত্র উপভোগ করতে কোন টিকেট বা পাস লাগবে না।
×