ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর আগমন ॥ মাওয়ায় উৎসব মুখর পরিবেশ, ব্যাপক প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫

প্রধানমন্ত্রীর আগমন ॥ মাওয়ায় উৎসব মুখর পরিবেশ, ব্যাপক প্রস্তুতি

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ॥ মাওয়ার পদ্মা সেতুর মূল পাইলিং এবং নদী শাসনের কাজ উদ্বোধন করতে শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাওয়ায় আসছেন। এই আগমন নিয়ে এখন বিরাজ করছে উৎসব আমেজ। চলছে চূড়ান্ত পর্যায়ের ব্যাপক প্রস্তুতি। ইতোমধ্যেই সেতুর প্রায় ২৭ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জে এখন আনন্দের বন্যা বইছে। জেলার পাড়া মহল্লায় থেকেই এই আয়োজনের ছোয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাজ সাজ রব পরে গেছে মাওয়া ঘিরে। বাদ্য বাজনা, পোস্টার, ফেস্টুন, মোটর সাইকেল শোভাযাত্রাসহ স্লোগানে স্লোগানে সরগরম হয়ে উঠেছে হাট বাজার আর পাড়া মহল্লা। এদিকে সেতুর কাজের উদ্বোধনের পর বিকালে মাওয়ার নতুন গোল চত্ত্বরে সমাবেশকে ঘিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। এই সমাবেশে আড়াই লাখ লোক সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন, স্থানীয় সাংসদ অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। প্রধানমন্ত্রী শনিবার সকালে জাজিরা প্রান্তে নদী শাসনের কাজেরও উদ্বোধন করবেন। সেখানে এক সূধী সমাবেশেব বক্তব্য রাখবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বেলা ১২ মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর মুল কাজের ভিত্তি ফলক উম্মোচন করবেন। সেখানে এক সূধী সমাবেশেব বক্তব্য রাখবেন তিনি । পরে তিনি পার্শ্বতর্বী দোগাছি সার্ভিস এরিয়া-১ এর ভিভিআইপি কটেজে নামাজ এবং মধ্যাহ্ন ভোজ সেরে বেলা ৩টায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশ বক্তব্য রাখবেন। এই সফরকে ঘিরে পদ্মা এবং পদ্মা তীরে এখন ব্যাপক নিরাপত্তা গ্রহন করা হয়েছে। মেদিনীমন্ডল খান বাড়ির কাছে মহাসড়কের পশ্চিম প্রান্তে মাওয়া নতুন গোল চত্বর নির্মাণ করা হচ্ছে বিশাল মঞ্চ। মঞ্চ ঘিরে ব্যানার ফ্যাস্টুনে ছেয়ে গেছে গোটা এলাকা। জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এমপি বলেন, এ এলাকা পদ্মার ভাঙন প্রবণ এলাকা। নদী ভাঙনে লৌহজং অর্ধেক হয়ে গেছে। যেটুকু ছিল তার অর্ধেক জমি এ এলাকার জনগন পদ্মা সেতুর জন্য ছেড়ে দিয়েছে। তাই এ সেতুতে বিক্রমপুরের লোকজনের অবদান অনেক। বিক্রমপুরবাসী যেমন পদ্মা সেতুর জন্য জমি ছেড়ে দিয়েছে, যেমনি শনিবার প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা দিয়ে এ এলাকার মানুষ প্রমান করবে পদ্মা সেতুর জন্য তাদের ত্যাগ কত বড়। মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো সাইফুল হাসান বাদল বাদল জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর প্রায় ২৭ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ১২ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে সবরকম প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। পুলিশ সুপার বিল্পব বিজয় তালুকদার জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রায় ১৬ শ’ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রকৌশলী জানালেন, নির্মাণকাজের প্রায় ১৭ ভাগ শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সেতুর ১৪ দশমিক ৯ ভাগ কাজ শেষ করার পরিকল্পনা ছিল। কাজ শেষ হয়েছে ১৭ দশমিক ৩ ভাগ। লক্ষ্যমাত্রার ১২২ দশমিক ৮৬ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। তবে বাকি কোনো প্যাকেজই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেনি। নদীশাসনের কাজের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৮ ভাগ। কাজ হয়েছে ১৩ দশমিক ৭৩ ভাগ। জাজিরাপ্রান্তে সংযোগ সড়কের ৭০ দশমিক ৪৯ ভাগ কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও শেষ হয়েছে ৫০ দশমিক ৮৮ ভাগ। মাওয়া প্রান্তে সংযোগ সড়কের ৬৭ দশমিক ৩১ ভাগ কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও শেষ হয়েছে ৫৯ দশমিক ৮৭ ভাগ। পদ্মা সেতু সেতু নির্মিত হলে জিডিপি এক দশমিক দুই শতাংশ বৃদ্ধিসহ তবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যে স্বপ্নপূরণ হচ্ছে, তার মূল্য অর্থনৈতিক হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি। গোটা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে।
×