ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনী মাঠে নামতে পারছেন না মন্ত্রী-এমপি

দলীয় প্রার্থীর প্রচারে নেতৃত্ব সঙ্কটে আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১২ ডিসেম্বর ২০১৫

দলীয় প্রার্থীর প্রচারে নেতৃত্ব সঙ্কটে আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আসন্ন পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে নেতৃত্ব সঙ্কটে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ভোটারদের আকৃষ্ট করার ক্ষমতা থাকা দলটির জনপ্রিয় প্রায় বড় সব নেতাই বর্তমানে হয় মন্ত্রী নতুবা সংসদ সদস্য। খালেদা জিয়াসহ বিএনপির সাবেক সব মন্ত্রী-এমপি নির্বাচনে গণসংযোগ চালাতে পারলেও নির্বাচনী আচরণবিধির বেড়াজালে পড়ে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা কেউই দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামতে পারছেন না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হলেও মন্ত্রী-এমপিদের নির্বাচনী প্রচারে সরাসরি ‘না’ করে দিয়েছে ইসি। বিশাল এ শূন্যতা দূর করতে এবং দল সমর্থিত প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে মন্ত্রী-এমপির বাইরে থাকা সকল কেন্দ্রীয় নেতা এবং দলের সকল সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কারের পাশাপাশি বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে মূল দল কিংবা সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের কোন নেতা নির্বাচনী প্রচারে নামলে তাদেরও বহিষ্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট নেতাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর পর আগামী ৩০ ডিসেম্বর পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা ও ধানের শীষের লড়াইকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছে আওয়ামী লীগ। নেতৃত্ব সঙ্কট থাকলেও নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে যাতে কোন ধরনের সমস্যা না থাকে সেজন্য সার্বিক প্রস্তুতিও চলছে দলটিতে। নির্বাচনী কৌশল হিসেবে দলটির দেশব্যাপী জনপ্রিয় বাঘা বাঘা মন্ত্রী-এমপিরা কেন্দ্র থেকেই সারাদেশের নির্বাচন মনিটরিং ও নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেবেন। আর মন্ত্রী-এমপি নন এমন কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন গ্রুপ করে পর্যায়ক্রমে দেশব্যাপী পৌর এলাকায় সফর করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ চালাবেন। একই সঙ্গে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদেরও পৌর এলাকায় পাঠিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারের জন্যও পৃথক একটি টিম গঠন করা হয়েছে। জানা গেছে, ২৩৪টি পৌরসভার মধ্যে প্রায় শতাধিক পৌরসভা নিয়ে চিন্তিত আওয়ামী লীগ। একদিকে নিজ দলের অর্ধ শতাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী, অন্যদিকে ১৪ দলীয় জোটের শরিক ৫টি দলের ৪৩ পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। এসব পৌরসভায় দু’দিক সামাল দিয়ে দলীয় প্রার্থী বিজয় নিশ্চিত করতে গলদঘর্মই হতে হচ্ছে দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের। কেন্দ্র থেকে বার বার বোঝানোর পরও স্থানীয় কিছু সংসদ সদস্য ও জেলার প্রভাবশালী নেতাদের মদদের কারণে অর্ধ শতাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী এখনও অনড় অবস্থানে রয়েছেন। যদিও ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে বিদ্রোহীরা প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে দল থেকে তাদের আজীবনের জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত রয়েছে আওয়ামী লীগের। এমনকি বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কোন মন্ত্রী-এমপি কিংবা জেলার যত বড় নেতা হোক, জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে আওয়ামী লীগ কুণ্ঠাবোধ করবে না তাও ইতোমধ্যে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে চরমপত্র পাঠানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন দাবি করেন, পৌর নির্বাচনে দলের অর্ধেক বিদ্রোহী প্রার্থী ইতোমধ্যে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাকে দলীয় প্রধান কতটা প্রাধান্য দেন তা এতে উঠে এসেছে। আমরা বিদ্রোহী প্রার্থীদের একটি ম্যাসেজ দিয়েছি। যদি তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করেন তবে পরবর্তীতে আরও কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের কাউকেই ক্ষমা করা হবে না।
×