ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গণতন্ত্রকে কবরে পাঠানো হয়েছে॥ খালেদা জিয়া

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ১২ ডিসেম্বর ২০১৫

গণতন্ত্রকে কবরে পাঠানো হয়েছে॥ খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার জনমতকে রক্তাক্ত পন্থায় দমন করে ক্ষমতা জবরদখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া এ অভিযোগ করেন। এদিকে দুপুরে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পৌরসভা নির্বাচনের বারোটা বাজানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। খালেদা জিয়া বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজ চরম সঙ্কটাপন্ন। গণতন্ত্রকে কবরে পাঠানো হয়েছে। আধিপত্যবাদ আজও ডানা বিস্তার করে রেখেছে। ৫ জানুয়ারি তামাশার নির্বাচন করে গণতন্ত্রবিনাশী আধিপত্যবাদের শিখ-ি উৎপীড়ক শাসকশ্রেণি জনমতকে রক্তাক্ত পন্থায় দমন করে ক্ষমতা জবরদখল করে রেখেছে। মওলানা ভাসানীর উদ্যম ও সাহসিকতাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে পারলেই আগ্রাসী শক্তিকে আমরা রুখতে সক্ষম হবো। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমল থেকে স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে সকল স্বৈরশাসকের অপশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা এবং দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশপ্রেমিক মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর অবদান নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। রাজনৈতিক জীবনে তিনি আজীবন শোষিতের পক্ষ নিয়ে শাসকগোষ্ঠীকে দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। তিনি নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সকল সময় থেকেছেন আপোসহীন নেতৃত্বের ভূমিকায়। খালেদা জিয়া বলেন, দেশ ও জনগণের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ভাসানীর বলিষ্ঠ ও সাহসী ভূমিকা আমাদের চিরদিন একটি শক্তিশালী এবং আত্মনির্ভরশীল দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে প্রেরণা ও উৎসাহ যোগাবে। তাঁর প্রদর্শিত পথ ধরে চলতে পারলেই অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছাতে কোন কঠিন বাধাই আমাদের পথ আগলাতে সক্ষম হবে না। পৌর নির্বাচনের বারোটা বাজানোর চেষ্টা চলছে- রিজভী ॥ আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের বারোটা বাজানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, পৌর নির্বাচনের আগে নির্বিচারে গণগ্রেফতার দেশে এখন ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। আর নির্বাচন কমিশন যদি আগের মতো ন্যক্কারজনক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় তাহলে মৃতপ্রায় গণতন্ত্রের জানাজা পড়তে আর বেশি সময় লাগবে না। রিজভী বলেন, সরকার বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করতে মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। এজন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে তাদের গ্রেফতার করছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যৌথ অভিযানে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিনিয়িত আটক করা হচ্ছে। এতে নির্বাচনের পরিবেশ নির্মল ও স্বচ্ছতার পরিবর্তে গন্ধময় হয়ে উঠছে। এ ধরনের পরিস্থিতি টিকিয়ে রেখে কোনভাবেই স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয়। রুহুল কবির রিজভী বলেন, পৌর নির্বাচনে সরকারের লাগামহীন লোভের আশা পূরণ করতে নির্বাচন কমিশন আগের মতো অনুগামী ভূমিকা পালন করছে। সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা প্রতিনিয়ত নির্বাচনের আচরণ-বিধি লংঘন করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সতর্কতা উপেক্ষা করে তারা প্রচারণা চালাচ্ছেন অথচ নির্বাচন কমিশন শোকজের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ রেখেছে। সরকারের অনুগত না হয়ে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, তাদের প্রতি আহ্বান, পৌর নির্বাচনে অশুভ কর্মের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে নিজের নীতিবোধকে কলঙ্কিত করবেন না। আর যদি ক্ষমতাসীনদের প্রদর্শিত পথ ধরেই হাঁটেন, তাহলে ইতিহাসে ধান্ধাবাজ বলেই অভিহিত হবেন। কারগারে বিএনপির ৮৫ বছর বয়সের সিনিয়র নেতা এমকে আনোয়ারের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, এভাবে চলতে থাকলে গণতন্ত্র থাকবে না। এ সময় তিনি ১১ মাস কারাগারে অবস্থানকালে কষ্টের কথা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, একুশে টেলিভিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালামকে কারাগারে জিম্মি করে এ চ্যানেলটি দখল করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক শিকদার, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।
×