ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ধলেশ্বরী ব্রিজ ও হানিফ ফ্লাইওভারে টোল দিলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫

ধলেশ্বরী ব্রিজ ও হানিফ ফ্লাইওভারে টোল দিলেন প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি, মাওয়া থেকে ফিরে ॥ ভিমরি খাওয়ার দশা টোল আদায়কারীদের! টোলবক্সের সামনে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানালা খুলে নিজের গাড়িসহ বহরে থাকা সকল গাড়িরই টোল পরিশোধ করার নির্দেশ দিলেন। তটস্থ ও অবাক-বিস্ময়ে পাথর হয়ে যাওয়া ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে টোল গ্রহণ করেন। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া থেকে সড়কপথে ঢাকায় ফেরার পথে শনিবার এমনিভাবে সবাইকে হতবাক করে দিয়ে ব্রিজ ও ফ্লাইওভারের টোল প্রদান করে এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার সকাল থেকে দুপুর অবধি প্রমত্তা পদ্মার দু’পাড় শরীয়তপুরের জাজিরা ও মাওয়ায় পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে হঠাৎ করেই সড়কপথে ঢাকায় ফেরার সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হেলিকপ্টারযোগেই সকাল এগারোটায় জাজিরায় যান প্রধানমন্ত্রী। মেদিনীম-লের খানবাড়িতে জনসভা শেষে ওই হেলিকপ্টারযোগেই তাঁর ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। সে অনুযায়ী তাঁকে বহনকারী গাড়ির বহর হেলিপ্যাডেও যায়। কিন্তু হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তিনি জানান, হেলিকপ্টার নয়, সড়কপথেই তিনি ফিরবেন ঢাকায়। প্রধানমন্ত্রী এমন সিদ্ধান্ত জানানোর পর পরই প্রস্তুত হয় তাঁর গাড়িবহর। বুলেটপ্রুফ গাড়িতে চড়ে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন সড়কপথেই। পথে অতিক্রম করতে হয় ধলেশ্বরী ব্রিজ ও যাত্রাবাড়ী মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার। এই দুই টোলপ্লাজাতেই গাড়ি দাঁড় করান তিনি। এ সময় নিজের গাড়িসহ বহরের সব গাড়ির টোল পরিশোধ করতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। নির্দেশ পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীন ধলেশ্বরীর টোলপ্লাজা এবং মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় সবগুলো গাড়ির টোল বাবদ মোট তিন হাজার টাকা পরিশোধ করেন। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার উদ্বোধনের পর প্রথম যেদিন এর ওপর দিয়ে যান সেদিনও টোল দিয়েছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। যা বলেন তাই-ই করেন শেখের বেটি ॥ সকাল সাড়ে নয়টা। জাজিরার নাওডোবা সুধীসমাবেশে প্রবেশ করেই সামনে আসার চেষ্টা করছেন অশীতিপর বৃদ্ধ ইলিয়াস আলী। কিন্তু সামনে নিরাপত্তা বেষ্টনী। নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে আর সামনে এগোতে বাধা দেন। ক্ষোভে ফেটে পড়ে তিনি জোরেই বলতে থাকেনÑ ‘শেখ সাহেব আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন, তার কন্যা আজ অসাধ্যকে সাধন করেছেন। তাই শেখের বেটিকে একনজর কাছ থেকে দেখতে চাই। আমাকে যেতে দিন। অতীতে কেউ পারেনি, পদ্মা সেতু নির্মাণ করে দেখিয়ে দিচ্ছেন শেখের বেটি। গোটা দুনিয়ায় শেখের বেটি আমাদের মাথা উঁচু করে দিয়েছে।’ কিন্তু এতকিছুর পরও মন গলেনি নিরাপত্তারক্ষীদের। পরে বাইরে টাঙ্গানো ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে দেখা যায় ইলিয়াস আলীকে। নাওডোবার গৃহবধূ হাসিনা বেগম সামনে টাঙ্গানো পদ্মা সেতু প্রকল্পের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বলেন, ‘ওই খানে আমাগো বাড়ি ছিল। সেতুর লাইগা দিয়া দিছি। শেখের বেডি টাহা-পয়সা দিয়া দিছে। অহন হেয় আইছে, উদ্বোধন করল। খুব খুশি লাগতাছে। তাকে কাছ থেকে দেখতে পেলে ভাল লাগত।’
×