ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

র‌্যাবের অভিযান জরিমানা

হাসপাতালের ম্যানেজার ও নার্স করলেন গর্ভবতীর অপারেশন

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫

হাসপাতালের ম্যানেজার ও নার্স করলেন গর্ভবতীর অপারেশন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডাক্তার ছাড়াই অপারেশন করার অপরাধে যাত্রাবাড়ীর তিনটি হাসপাতালকে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। র‌্যাব-১০ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম এ জরিমানা করেন। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার গাউছিয়ার বাসিন্দা তরিকুল ইসলামের গর্ভবতী স্ত্রী মোছাঃ খাদিজা বেগম (২০) তীব্র ব্যথা অনুভব করার পর তাকে নেয়া হয় মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালে। রূপগঞ্জ থেকে এ হাসপাতালের গেট পর্যন্ত আসতে পারলেও চিকিৎসা করার সুযোগ হয়নি। তার আগেই এক দালাল তাকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যায় যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগের আল মদিনা নার্সিং হোমে। তখন শনিবার দিবাগত রাত ৩টা। ভর্তির পর সেখানে তার আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়। তখন তার স্বামীকে জানানো হয়- বাচ্চা বাঁচাতে হলে এখনই অপারেশন করাতে হবে। নইলে মহাসর্বনাশ হয়ে যাবে। ওই হাসপাতালের ম্যানেজার আরশাদ হোসেনের পীড়াপীড়িতে রাজি হন খাদিজার স্বামী তরিকুল। ভোর চারটায় অপারেশন করে একটি ছেলে সন্তান বের করে আনা হয়। তরিকুলের কাছে তখনো পর্যন্ত সবই ঠিক বলে মনে হয়। কিন্তু পরে যখন জানতে পারেন ওই ক্লিনিকে অপারেশনের সময় ছিলেন না কোন গাইনি চিকিৎসক। শুধু একজন নার্স ও একজন টেকনিশিয়ান এই অপারেশনটা করেছে। অথচ খাদিজার ফাইলে লেখা রয়েছে আবুল কাশেম নামের একজন চিকিৎসকের। তরিকুল বুঝতে পারেন তিনি শুধু প্রতারিতই হননি- এতে তার স্ত্রীর জীবনও ছিল বিপদোন্মুখ। খাদিজার মতো এমন শত শত গর্ভবতীকে দিনের পর দিন সিজার করার দাযিত্ব পালন করে আসছে একজন টেকনিশিয়ান ও নার্স। এ ধরনের ব্যাপক অভিযোগ নিয়েই র‌্যাব শনিবার দুপুরে হানা দেয় আল মদিনা নার্সিং হোমে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম তারপর যা দেখলেন- তাতে তিনি নিজেও বিস্মিত। জানালেন- খাদিজার মতো অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন। অভিযানের সময় ওই হাসপাতালের ম্যানেজার ও নার্স সামসুন্নাহার স্বীকার করেন- কোন গাইনি চিকিৎসক ছাড়াই তারা নিজেরাই খাদিজার অপারেশন করেছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট সারওয়ার আলম বলেন- কত বিশ্রী ও নোংরা এখানকার পরিবেশ তা চোখে না দেখলে বোঝা দায়। অপারেশন থিয়েটারের সামনে একজনকে মাছ এবং শাক সবজি কাটাকাটি করতে দেখা যায়। অপারেশন কক্ষটি অত্যন্ত নোংড়া ও অপরিষ্কার। তাছাড়া হাসপাতালটির লাইসেন্সও গত তিন বৎসর যাবত নবায়ন করা হয়নি। এ সব অভিযোগের কারণে হাসপাতালের ম্যানেজার ও মালিককে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
×