ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইমরুলের ব্যাটিং ঝড়

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫

ইমরুলের ব্যাটিং ঝড়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ানডেতে দারুণভাবে প্রত্যাবর্তন হয়েছিল। বিশ্বকাপে ব্যর্থতার কারণে জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে গত মাসে হোমসিরিজে দলে ফিরে টানা দু’টি অর্ধশতক পেয়ে যান ইমরুল কায়েস। ওয়ানডে কিংবা টেস্ট ক্রিকেটে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারলেও টি২০ ফরমেটে এ ওপেনার একেবারেই অনিয়মিত। তবে চার বছর পর টি২০ দলে ফিরলেও তেমন কিছুই করতে পারেননি। চলতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরেও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের এ ওপেনারের ব্যাটে বড় কোন রান দেখা যায়নি। অবশেষে গুরুত্বপূর্ণ সময়েই জ্বলে উঠলেন। শনিবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে চলতি আসরে নিজের প্রথম অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন। মাত্র ৪৮ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৬৭ রান করেন তিনি। এবার বিপিএলে জাতীয় দলের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা ছিল আলোচনার মূল। লীগ পর্বে জাতীয় দলের অপরিহার্য ব্যাটসম্যানরা রান খরায় ভুগেছেন। এমনকি জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা নিজে ব্যক্তিগতভাবে ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কারণ আগামী বছর বড় দু’টি আসর টি২০ এশিয়া কাপ এবং টি২০ বিশ্বকাপ আছে। এর আগে জাতীয় দলের ব্যাটসম্যানদের জন্য আত্মবিশ্বাস তৈরি ও অনুপ্রেরণা লাভের অন্যতম মঞ্চ বিপিএল। এমনকি লীগ পর্বের শেষ ম্যাচের পর মাশরাফি জানিয়েছিলেন জাতীয় দলের কোচ চান্দিকা হাতুরাসিংহেও জাতীয় দলের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও মাশরাফি প্রত্যাশা জানিয়েছিলেন অচিরেই জাতীয় দলের ব্যাটসম্যানরা রানে ফিরবেন। সেটাই যেন সর্বপ্রথম করে দেখালেন ইমরুল। চলতি বছরের শুরুতে বিশ্বকাপে চরমভাবে ব্যর্থ এ বাঁহাতি ওপেনার টানা তিনটি ঘরোয়া সিরিজে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মাঠের বাইরে ছিলেন। আবারও জাতীয় দলে ফেরাটা দুষ্কর হয়ে পড়েছিল তরুণ সৌম্য সরকারের দুর্দান্ত নৈপুণ্যের কারণে। কিন্তু ইনজুরির কারণে সৌম্য জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে খেলতে না পারায় সুযোগ পেয়ে যান ইমরুল। আর টানা দুই ওয়ানডেতে ৭৬ ও ৭৩ রানের দু’টি দারুণ ইনিংস খেলে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন ঘটে তার। তবে বরাবরের মতোই টি২০ ক্রিকেটে ব্যর্থ হন ইমরুল। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে এক টি২০ খেলে মাত্র ১০ রান করেই ফিরে যান। মাত্র পাঁচটি আন্তর্জাতিক টি২০ খেলেছেন ইমরুল। ২০১০ সালে টি২০ অভিষেকের পর তিনি করেছেন ০, ০, ২২, ২ ও ১০ রান। ঠিক চার বছর পর জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে টি২০ ক্রিকেটে ফিরলেও ব্যর্থ হন। সেটা অব্যাহত থাকে এবার বিপিএলেও। যদিও ছোটখাটো রান করছিলেন। তাই একেবারে ব্যর্থও বলা যাবে না ২৮ বছর বয়সী এ ওপেনারকে। লীগ পর্বের ১০ ম্যাচের মধ্যে তার উল্লেখযোগ্য রানগুলো হচ্ছে ৪৮, ৩৫ ও ৩৮। সর্বশেষ দুই ম্যাচে ৩৮ ও ২৭ রান করে ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন দারুণ কিছু করবেন। সেটা সত্যিই করে দেখালেন দলের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ের দিনে। এদিন শুরু থেকেই বেশ সাবলীল ভঙ্গি নিয়ে খেলেছেন। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় মাত্র ৩৩ বলেই অর্ধশতক পেয়ে যান। আরেক ওপেনার লিটন দাসের সঙ্গে ৭৯ রানের উদ্বোধনী জুটি উপহার দেন তিনি। লিটন ফিরে গেলেও দলকে শতরান পেরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর সাজঘরে ফিরেছেন ইমরুল। তবে এর আগে তার নামের পাশে যোগ হয়েছে ৬৭ রান। দলকে ভাল একটি অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছেন এবং সেই সঙ্গে নিজের ধারাবাহিকতার খরাটাও ঘুচিয়েছেন ইমরুল।
×