ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এবার শাহরিয়ারের সঙ্গে মাহমুদুল্লাহ

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫

এবার শাহরিয়ারের সঙ্গে মাহমুদুল্লাহ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অধিকাংশ ম্যাচই বসে থাকতে হয়েছে শাহরিয়ার নাফীসকে। প্রাথমিক পর্বে মাত্র তিন ম্যাচ খেলেছেন জাতীয় দলের সাবেক এ ক্রিকেটার। কিন্তু দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ব্যাট হাতে দারুণভাবে নিজেকে মেলে ধরেন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সাব্বির রহমান রুম্মানের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ১২৪ রানের বড় জুটি গড়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেন শাহরিয়ার। ওই ধারাবাহিকতা রেখেছেন মঙ্গলবার শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালেও। এদিন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৮১ রানের জুটি গড়ে দলকে চ্যালেঞ্জিং একটি সংগ্রহ পেতে সহায়ক একটি ইনিংস খেলেছেন তিনি। মাত্র ৩১ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৪ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দেন শাহরিয়ার। এবার বিপিএলের শুরুর দিকে দারুণ ভাল করলেও পরের দিকে কিছুটা ধারাবাহিকতার ঘাটতি দেখা গিয়েছিল মাহমুদুল্লাহর ব্যাটে। কিন্তু ফাইনালে তিনিও ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন। এবার তিনি খেলেছেন ৩৬ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৪৮ রানের কার্যকরী এক ইনিংস। চলতি আসরের শুরু থেকেই ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে ছিলেন বরিশাল বুলসের অধিনায়ক ও আইকন মাহমুদুল্লাহ। প্রাথমিক পর্বেই দুটি অর্ধশতক হাঁকান তিনি। রান সংগ্রাহকের তালিকায় প্রথম থেকেই ধারাবাহিকতার কারণে সেরা পাঁচে ছিলেন তিনি। তবে পরের দিকে ধারাবাহিকতাটা থাকেনি। তাই পিছিয়ে পড়ে ছিলেন। এলিমিনেটর ম্যাচে ৩৭ রানের ভাল একটি ইনিংস খেললেও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মাত্র ৫ রান করেই সাজঘরে ফিরেছিলেন। ফাইনালের আগে বুলসের কর্ণধার রিজওয়ান বিন ফারুক জানিয়েছিলেন কিছুটা ইনজুরিতে ভুগছেন মাহমুদুল্লাহ। কিন্তু সেই শঙ্কা কাটিয়ে ব্যাট হাতে নেমেছেন মাহমুদুল্লাহ। আর দল যখন ৬৮ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে বসল তখন ইনিংসের সর্বোচ্চ রানটা তার উইলো থেকেই বেরুলো। দলকে একটি ভাল অবস্থানে পৌঁছে দেয়ার জন্য দেখেশুনেই খেলেছেন। তবে পরে রান বাড়ানোর জন্যও ব্যাট চালিয়েছেন কিছুটা চড়াও হয়ে। এগিয়ে যাচ্ছিলেন আরেকটি অর্ধশতকের দিকে। কিন্তু ইনিংসের শেষ ওভারে শ্রীলঙ্কান পেসার নুয়ান কুলাসেকারাকে তুলে মারতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান। ইতি ঘটে মাহমুদুল্লাহর আরেকটি দারুণ ইনিংসের। এ আসরে তিনি ১৩ ম্যাচে ২৭.৯০ গড়ে ২৭৯ রান করে তৃতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রাহক। মাহমুদুল্লাহ উইকেটে যোগ দেন আরেক অভিজ্ঞ শাহরিয়ারের সঙ্গে। প্রাথমিক পর্বে এ বাঁহাতি তিন ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে করতে পেরেছিলেন ১, ১২ ও ৩। দলের সমন্বয়ের কারণে জায়গা হয়নি তার। তবে বিপিএল শুরুর আগে প্রত্যয় জানিয়েছিলেন দারুণ কিছু করার। অবশ্য ওপেনার হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইলের সঙ্গে নামার ইচ্ছা থাকলেও সেটা পূরণ হয়নি তার। কারণ প্রাথমিক পর্বে যে তিন ম্যাচে ওপেনিং করেছেন তখনও দলের সঙ্গে যোগ দেননি গেইল। ক্যারিবীয় এ ওপেনার বুলসে যোগ দেয়ার পর আর খেলারই সুযোগ হয়নি, তাছাড়া তিন ম্যাচ খেলেই ব্যর্থ হওয়ার জন্য ড্রেসিং রুমেই বসে থাকতে হয়েছে তাকে। তবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের মতো ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে গেইল না থাকায় আবার সুযোগ করে নেন তিনি একাদশে। আর ওই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে তিনি ৪০ বলে ৬ চারে ৪৪ রানের একটি দারুণ গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। কারণ তৃতীয় উইকেটে ১২৪ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন সাব্বিরের সঙ্গে, দলকেও রক্ষা করেন। নিজের ছন্দটাও খুঁজে পান তিনি। একটা ভাল ইনিংস যে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিতে পারে সেটার প্রমাণ পাওয়া গেছে শাহরিয়ারের ফাইনালে ব্যাটিং দেখে। এদিন শুরু থেকেই অনেক আক্রমণাত্মক মেজাজ নিয়ে খেলতে পেরেছেন তিনি। আগের তুলনায় বেশ সাবলীলও ছিলেন। অবশ্য রানের খাতা খোলার জন্য ৬ বল খেলতে হয়েছে। এরপরই তিনি ড্যারেন স্টিভেন্সকে লংঅন দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করেন আক্রমণাত্মক মেজাজের। তারপর আর তাকে আটকে রাখা যায়নি। পরে চলতি আসরে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখানো পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত আসহার জাইদিকেও ছক্কা হাঁকিয়েছেন এবং আসরের সর্বাধিক উইকেট শিকারি তরুণ পেসার আবু হায়দার রনিকেও ওভার বাউন্ডারি হাঁকান লংঅন দিয়ে। মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৮১ রানের জুটি গড়ে দলকে ফাইটিং স্কোর এনে দেন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা শাহরিয়ার।
×