ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রতীক ও ব্যক্তি ইমেজ ॥ ভোটে প্রভাব ফেলবে

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫

প্রতীক ও ব্যক্তি ইমেজ ॥ ভোটে প্রভাব ফেলবে

সমুদ্র হক ॥ বগুড়ার ৯টি পৌর নির্বাচনের মধ্যে প্রায় সকলের দৃষ্টি ধুনট পৌরসভার দিকে। এই পৌর নির্বাচনে মেয়র পদের জন্য মাঠে নেমেছে তিনজন। বর্তমান আওয়ামী লীগ মেয়র এজিএম বাদশা দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে শরিফুল ইসলামকে। আর বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে সাবেক মেয়র আলিম উদ্দিন হারুনকে। নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগের আরও এক বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। তার নাম আল আমিন তরফদার। দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে তিনি রণে ক্ষান্ত দিয়েছেন। কিন্তু রানিং মেয়র এ জিএম বাদশা উল্টো হুঙ্কার ছেড়েছেনÑ দল বহিষ্কার করলেও কোনভাবেই তিনি মাঠ ছাড়বেন না। শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তে বহিষ্কৃত হয়েছেন তবু রণে ভঙ্গ দেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত (বর্তমানে বহিষ্কৃত) এই রানিং মেয়র এজিএম বাদশা প্রতীক নিয়েছেন জগ। নৌকা, ধানের শীষের সঙ্গে জগ কতটা দৌড়াতে পারে তা জানার সময় এখনও আসেনি। তবে ভোটাররা যে আওয়ামী লীগের বিভক্ততা ও বিএনপি এই তিন বিভাজনের মধ্যে অবস্থান করছেন তা এখন পরিষ্কার। বগুড়ায় যমুনা তীরের এই ধুনট এলাকা অনেকটাই ক্রিটিক্যাাল। কোন ধরনের প্রেডিকশন তো দূরে থাক ছোট্ট ধারণাও করা যায় না। সকালে যে ব্যক্তিকে দেখা গেল একজনের সুনামে পঞ্চমুখ বিকেল না গড়াতেই তিনি তার বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। আবার সন্ধ্যার পর বাজারে চায়ের স্টলের ভোট ক্যাম্পেনে পূর্বের ব্যক্তির এত গুণকীর্তন শুরু করেছেন যে গ্রামের ভাষায় মানুষ ‘টাশকি (কিছুই বুঝে উঠতে না পেরে হোঁচট খাওয়া) খাচ্ছে। এ সময় কেউ যদি প্রশ্ন করে উত্তর মেলে, ভোটের বাজারে দরদাম তো ওঠা নামা করবেই। এ জায়গাটিতে নির্বাচনী প্রার্থী ও ভোটার কূল-কিনারা করতে পারছে না। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা রম্য কখনও বলে ‘জোয়ার ভাটা রে ভাই জোয়ার ভাটা।’ এ জোয়ার ভাটার পাল্লায় পড়েছে ধুনট পৌর এলাকার ৯ হাজার ৯শ’ ১৬ ভোটার। এর মধ্যে মহিলা ভোটারের সংখ্যা বেশি। কয়েকজন ভোটার বললেন, যেভাবে প্রচার চলছে তাতে এখনই কিছু বলার সময় আসেনি। তাছাড়া প্রচারের মিছিলের লোক সংখ্যা দেখে কিছু বলা যায় না। প্রচার মিছিলে আম পাবলিক টানতে কি করতে হয় তা অনেকেরই জানা। ধুনট পৌরসভার ইলেকশনের বিষয়ে সমাজ উন্নয়ন কর্মী এ এস এম জিয়াউল আলম শাহীন স্পষ্ট করেই বললেন, ‘প্রতীক ও ব্যক্তির অবস্থান এখন সমান সমীকরণে বলা যায়। দলীয় প্রতীক এবং ব্যক্তিত্ব এ দুইয়ের মধ্যে নির্বাচন হচ্ছে এবার। দলীয় প্রার্থীর প্রতীক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর ইমেজই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।’ তার মতে, ইলেকশনের আগের মুহূর্তটিতে যে স্যুইং হয় তাতে ত্রিমুখী লড়াইয়ে কেউ ইমেজ সঙ্কটে পড়লে লড়াই দ্রুত দ্বিমুখীতে পরিণত হয়ে ভোটের ফলাফলে মেয়রের চেয়ারটিতে একজন বসবেন। এলাকার একজন প্রবীণ ব্যক্তি বললেন মেয়র পদে অবতীর্ন তিন জনের বৃত্তান্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়Ñ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দলীয় প্রতীক নৌকার প্রার্থী শরিফুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বর্তমান মেয়র এ জি এম বাদশা যিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নেমেছেন তিনি ব্যক্তি ও দল দুইয়ের ইমেজ নিয়েই মাঠে আছেন। বিএনপির প্রার্থী সাবেক মেয়র পৌর বিএনপির সভাপতি আলিম উদ্দিন হারুন এক সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন। পরে বিএনপিতে যোগদান করে স্থানীয় নেতৃত্বের অংশ হয়েছেন। সিটিং মেয়রের (এ জিএম বাদশা) আগের টার্মে তিনি মেয়র ছিলেন। এই তিনজনের মধ্যে অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রার্থী শরিফুল ইসলাম। ভোটাররা ঠিক কোন দিকে যাবে তা বলা কঠিন অন্যতম দুই কারণে ১. প্রতীক ও ব্যক্তির অবস্থান সমান। ২. নদীর জোয়ার ভাটার মতো ভোটারদের মন কখন কোন দিকে যায়।
×