ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মুন্সীগঞ্জের দুই পৌরসভা নির্বাচনী জ্বরে কাঁপছে

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫

মুন্সীগঞ্জের দুই পৌরসভা নির্বাচনী জ্বরে  কাঁপছে

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ প্রতীক বরাদ্দের পর পৌরসভায় নির্বাচনী প্রচার জমে উঠেছে। মাইকিং, প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি ভোট প্রার্থনা, মিছিল, উঠান বৈঠক, জনসংযোগ সবই চলছে। নির্বাচনী জ্বরে কাঁপছে মফস্বল শহর। প্রার্থীরা নানা কৌশলে ভোটারদের কাছে তাদের উপস্থাপনা করছেন, দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি। পোস্টারে ঝুলানো হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে। বিএনপির অংশগ্রহণে নির্বাচন চিত্রে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। লড়াই হচ্ছে সেয়ানে সেয়ানে। তবে মিরকাদিমে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলে সেখানে বিএনপি শিবিরে হতাশা বিরাজ করছে। ধলেশ্বরী তীরের প্রাচীন জনপদ মুন্সীগঞ্জ এবং বন্দর নগরী মিরকাদিমে এখন যেন নির্বাচনী উৎসব চলছে। চায়ের স্টল থেকে হাট-বাজার, অফিস আদালত সর্বত্রই নির্বাচনের আলাপচারিতা। যেখানে মানুষের বিচরণ সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন প্রার্থীরা আর নিজের পক্ষে ভোট চাচ্ছে। প্রার্থী ও তার সমর্থকদের আনাগোনা তো রয়েছেই। মসজিদ-মন্দিরেও প্রার্থীরা হানা দিচ্ছে। ভোটারদের মন জয়ে অনেক কৌশলই প্রয়োগ করা হচ্ছে। নির্বাচনী বাজারে ভোটারদের কদরও বেড়ে গেছে। তবে ভোটাররাও প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিচার বিশ্লেষণ করছে। মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার আওয়ামী লীগ প্রার্থী নৌকা প্রতীকের হাজী ফয়সাল বিপ্লব ভোটারদের প্রত্যাশা পূরণ করে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি করবেন। এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ নামের সংগঠনের সভাপতি রেজাউল ইসলাম সংগ্রাম মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। মাওয়ায় আওয়ামী লীগের জনসভায় আওয়ামী লীগের মনোনীত দুই মেয়র প্রার্থী ফয়সাল বিল্পব ও মিরকাদিম পৌর মেয়র প্রার্থী শহিদুল ইসলাম শাহীনকে পরিচয় করিয়ে দেয় দলের শীর্ষ নেতারা। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্র্থী একে ইরাদত মানু একইভাবে আশাবাদী বিজয় নিয়ে। আর ভোটারদের আশা পূরণেও দৃঢ়তার কথা বলে। তিনি বলেন, জনস্বার্থে কাজ করেছি আগামীতেও করব। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মহিউদ্দিন ব্যাপারী হাতপাখা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছে। শহরের তরুণ প্রজন্মরা তাদের পছন্দের মেয়র হিসেবে এমন ব্যক্তিকে চাচ্ছে যাদের রয়েছে ক্লিন ইমেজ। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদকসেবনকারীদের তারা বয়কট করবে বলে জানায় তরুণ প্রজন্মের ভোটাররা। আসলাম হোসেন নামে তরুণ ব্যবসায়ী বলেন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, গডফাদারদের আমরা মেয়র হিসেবে দেখতে চাই না। তাই এবার ভোটটা দেব ভেবে চিন্তে। এদিকে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী একে ইরাদত মানু জানায়, আমরা স্বাধীনভাবে প্রচার করতে পারছি না। পেশীশক্তির কাছে পরাজয় বরণ করতে হচ্ছে প্রচারে। এদিকে কাউন্সিলর প্রার্থীরাও বসে নেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে আকুতি মিনতি করে ভোটারদের সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে ছুটে চলেছে। সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতেও যেতে ভুল করছে না। অন্যদিকে মহিলা সংরক্ষিত কাউন্সিলররা রান্নাঘরে গিয়ে মা-বোন-ভাবির সঙ্গে বসে ভাত-তরকারির হাঁড়ির খোঁজখবর নিচ্ছে। দিচ্ছে নানা প্রতিশ্রুতি। মহিলা ভোটারদের সমর্থন পেতে মরিয়া সংরক্ষিত কাউন্সিলররা। মুন্সীগঞ্জের সবখানে এখন চলছে আলু ক্ষেতের পরিচর্যা। সাধারণ মানুষের বেশিরভাগ এখন আলু ক্ষেতে ব্যস্ত। তাই প্রার্থীরা সাধারণ মানুষের কাছে ছুটে যাচ্ছে মাঠেও। প্রার্থীরা শীতের কুয়াশা উপেক্ষা করে ছুটছে ভোটারের ঘরে ঘরে। মাদক, সন্ত্রাসমুক্ত পৌরসভা গঠনে একই রকম সুর মিরকাদিমের বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী নৌকা প্রতীকের শহিদুল ইসলাম শাহীনের। এই পৌরসভায় বিএনপি প্রার্থী শামসুর রহমান ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে লড়ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনসুর আহম্মেদ কালাম লড়ছে মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে। জেপি সমর্থিত প্রার্থী সাইকেল প্রতীকের হোসেন রেনু জানায়, আমি যখন মেয়র ছিলাম তখন এলাকার রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন করেছি। নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করেছিলাম। আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে আমার মনে হয় মিরকাদিম পৌর নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে না। কারণ যারা রাজনীতি করত তারা মনোনায়ন পায়নি। যারা এক সময় এক দল করত তারা এখন অন্য দলে এসে মনোনায়ন পেয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগে দু’জন মেয়র প্রার্থী রয়েছে তাদের মধ্যে মতের অমিল রয়েছে। আর বিএনপি থেকে একজন সমর্থককে মেয়র প্রার্থী করা হয়েছে।
×