ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেষ পর্যন্ত ব্যাটে-বলে সেরা বিদেশীরাই

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫

শেষ পর্যন্ত ব্যাটে-বলে সেরা বিদেশীরাই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রাথমিক পর্ব শেষে স্থানীয় ক্রিকেটাররাই ছিলেন সবার ওপরে। তবে ধীরে ধীরে বিদেশী ক্রিকেটাররা নিজেদের প্রমাণ করেছেন। শেষ পর্যন্ত এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ ক্রিকেটের তৃতীয় আসরে শ্রেষ্ঠত্ব বিদেশী ক্রিকেটারদেরই। ব্যাট-বলের পারফর্মেন্সে বিদেশী ক্রিকেটাররা শীর্ষস্থানে থাকলেও সমান তালে লড়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও। ব্যাটিং নৈপুণ্যে সেরা ৬ ক্রিকেটারের তালিকায় তিনজনই আছেন বাংলাদেশের। আর বোলিং নৈপুণ্যে সেরা ৬ ক্রিকেটারের মধ্যেও তিন বাংলাদেশী। ব্যাটিংয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসের শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা ৩৮.৭৭ গড়ে ৩৪৯ রান করে শীর্ষে আর বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার কেভন কুপার ২২ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে। মঙ্গলবার বিপিএলের ফাইনালে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওপেনার ইমরুল কায়েস ৫৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। তবে কপাল পুড়েছে তরুণ উদীয়মান পেসার আবু হায়দার রনির। টুর্নামেন্ট জুড়েই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন ১৯ বছর বয়সী নেত্রকোনার এ বাঁহাতি পেসার। তবে ধারাবাহিকভাবে ভাল করলেও ফাইনালেই সবচেয়ে বাজে বোলিং প্রদর্শনী দেখিয়েছেন তিনি। ৪ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে কোন উইকেট পাননি। টুর্নামেন্টের সেরা বোলার হওয়ার লড়াইটা ছিল তার বরিশাল বুলসের পেসার কেভন কুপারের সঙ্গে। তিনি দুই উইকেট নিয়ে হয়েছেন টুর্নামেন্টের শীর্ষ উইকেট শিকারি। দুই নম্বরে থেকে শেষ করেছেন রনি। কিন্তু ক্যারিয়ারে প্রথমবার কোন টি২০ আসরে খেলতে নেমেই বিধ্বংসী বোলিং করে নজর কেড়েছেন সবার। এ কারণে বিপিএলের ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল ক্রিকেটার’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। আগের দুই আসরে ব্যাটে-বলে অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে সবার ওপরে ছিলেন টি২০ ক্রিকেটে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এবার তিনি ১১ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিলেও পুরো আসরেই ব্যাট হাতে ছিলেন একেবারে নিষ্প্রভ। রান করতে পেরেছেন মাত্র ১৩৬! তাকে নৈপুণ্যে ছাড়িয়ে গেছেন পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত ইংলিশ অলরাউন্ডার আসহার জাইদি। তিনি ব্যাট হাতে ১১ ম্যাচের ৮ ইনিংসে ৫৩.৭৫ গড়ে ১ হাফসেঞ্চুরিসহ করেছেন ২১৫ রান। আবার বল হাতেও দারুণ অবদান রেখেছেন তিনি। মাত্র ১০.৪১ গড়ে নিয়েছেন ১৭ উইকেট। সে কারণে টুর্নামেন্ট সেরাও এই প্রথমবার বিপিএলে হয়েছেন কোন বিদেশী ক্রিকেটার। এবার আসরে একমাত্র হ্যাটট্রিকটা অবশ্য বাংলাদেশী বোলারেরই দখলে। দারুণ বোলিং করেছেন নিজেকে ফিরে পাওয়ার পেসার আল-আমিন হোসেন। তিনি সিলেট সুপার স্টারসের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন প্রাথমিক পর্বের ম্যাচে। ১৭ উইকেট নিয়ে তালিকায় তার অবস্থান ছয়ে। তবে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ব্যর্থতা ছিল নজরে পড়ার মতো। প্রথম থেকেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন ইমরুল কায়েস, লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমানদের মতো তারকারা। তবে শেষদিকে এসে তারাও অবশ্য ব্যাটে রান পেয়েছেন। ইমরুল তো পরের দিকে ধারাবাহিকভাবে রান করে সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের তালিকায় দুইয়ে উঠে এসেছেন। আর সাব্বির শেষদিকে দুই ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে রানে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি ১৩ ম্যাচের ১০ ইনিংস ব্যাট করে ১৮৯ রান নিয়ে শেষ করেছেন ১১ নম্বরে থেকে। সৌম্য শেষ কয়েকটা ম্যাচ ভাল করে ১২ ম্যাচে ১৭৭ রান নিয়ে ১২ নম্বর অবস্থান নিয়ে শেষ করেছেন। সিলেট সুপার স্টারস অধিনায়ক ও আইকন মুশফিকুর রহীম ধারাবাহিকভাবেই রান পেয়েছেন। তিনি ১০ ম্যাচে ২৬.১৬ গড়ে করেছেন ১৫৭ রান। এছাড়া রানের মধ্যেই ছিলেন বরিশাল বুলস অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ব্যাটে-বলে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন জাতীয় দলের অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। তিনি ১১ ম্যাচে ৬ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে ১৯.৩০ গড়ে ১৯৩ রানও করেছেন। সবমিলিয়ে বিদেশী ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাল মিলিয়েই এবার বিপিএল শেষ করেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
×