ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যানা হু’র উল্টো সুর

উবাচ

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫

উবাচ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একদা বিএনপি সরকারের মন্ত্রী ছিলেন তিনি। বার কয়েক দলবদল করলেও বিএনপি তাকে ক্ষমতায় যাওয়ার আগে আগে বুকে টেনে নিয়েছে ঠিকই। কারণ সম্ভবত এই লোকটা ভারি কাজের। তিনি ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা সংক্ষেপে যিনি ব্যানা হু নামেই পরিচিত। এক সময় তিনি সংলাপ সংলাপ বলে পাগলপ্রায় ছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি বলছেন না এর আর কোন দরকার নেই। হুদা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, এক সময় আমিই বলেছি, দেশের সমস্যা সমাধানে ও সঙ্কট নিরসনে দুই নেত্রী খালেদা জিয়া ও আপনাকে একসঙ্গে বসতে। বার বার বলেছি, আলোচনার কোন বিকল্প নেই। দেশরক্ষায় সংলাপই একমাত্র সমাধান। মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার নেতাকর্মীকে সাক্ষী রেখে বলতে চাই সংলাপের কোন প্রয়োজন নাই। আলোচনার কোন প্রয়োজন নাই। আপনি একাই দিতে পারেন, এই দেশের সকল সমস্যার সফল সমাধান। আপনি একক সিদ্ধান্ত দেবেন এবং আপনিই একক কৃতিত্ব নেবেন। এই কৃতিত্ব শেয়ার করার মতো দ্বিতীয় কোন যোগ্য ব্যক্তি নাই। রিজভীর আবিষ্কার! স্টাফ রিপোর্টার ॥ বার বার কারাবরণকারী সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা রিজভী আহমেদ হঠাৎ এক তত্ত্ব আবিষ্কার করছেন। সেটা হচ্ছে সরকার মুক্তিযুদ্ধকে বিক্রি করছে। দেশে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি থাকলে স্বাধীনতার কথা বলবে নাতো কি রাজাকারদের সঙ্গে দহরম-মহরম সম্পর্ক গড়ে তুলবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারটা কি মুক্তিযুদ্ধ বিক্রি? রাজাকারদের শিকড় উপড়ে ফেলা কি মুক্তিযুদ্ধ বিক্রি? যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা আর বিজয়ের ইতিহাসের সঙ্গে বছরজুড়েই জড়িয়ে রয়েছে বাঙালী। আগে যা জাতীয় দিবসের মধ্যে সীমিত ছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়ে সারা জাতি বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে। এসবই কি মুক্তযুদ্ধ বিক্রি? রিজভী আহমেদ বলছেন আমরা ভয়ঙ্কর অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরশাসনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ব্যক্তি স্বাধীনতা নেই, কথা বললে মামলার পর মামলা দেয়া হচ্ছে মামলার হুমকি দেয়া হচ্ছে। এর জন্য কি ৩০ লাখ শহীদ প্রাণ দিয়েছেন? দুই লাখ মা-বোন ইজ্জত দিয়েছেন? এই দুই প্রশ্নই রিজভীর। যদি রিজভী আহমেদকে পাল্টা প্রশ্ন করা হয় তাহলে এই স্বাধীন দেশের পতাকা রাজাকারের গাড়িতে তুলে দেয়ার জন্যই কি ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিলেন দুই লাখ মা বোন ইজ্জত দিয়েছিলেন? কী জবাব আছে তার। স্মৃতিসৌধে কোন্ মুখে স্টাফ রিপোর্টার ॥ বদর নেতা মতিউর রহমান নিজামী আর আলী আহসান মুজাহিদের নির্দেশে দেশে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে। দেশে আবালবৃদ্ধবনিতা সকলে এই ইতিহাস জানে। আরও একটি বিষয় মানুষের স্মৃতিতে জ্বল জ্বল করছে তা হচ্ছে এই ঘৃণিত দুই যুদ্ধপরাধীদের গাড়িতে উড়ছে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের দেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছিলেন। আর বেগম জিয়া তাদের মন্ত্রী বানিয়ে দেশ শাসনের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন। বিজয় অর্জনের ঠিক আগে আগে ১৪ ডিসেম্বর-১৯৭১ জাতিকে মেধাশূন্য করতে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বেছে বেছে হত্যা করে অথচ এখন সেই শহীদদের প্রতিই শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে ছুটে যাচ্ছেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কোন্ মুখে ও নাটক করতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গেছেন সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তরে বুদ্ধিজীবীদের ঘাতক আলবদর-রাজাকার-আলশামস প্রধানদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে লাখো শহীদের রক্তস্নাত পতাকা তুলে দিয়েছিলেন এই খালেদা জিয়া। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় আন্দোলনের নামে শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। কিন্তু তিনি মুখ মুখে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে গেলেন? সেখানে কি নাটক করতে গেছেন? আসলে তাঁর এই শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়া জাতির সঙ্গে ধোঁকা ও তামাশা করা ছাড়া আর কিছুই নয়। সামান্যতম লজ্জা, ঘৃণা ও শরম থাকলে সেখানে তিনি যেতে পারতেন না। আর কিছু মুক্তিযোদ্ধা দেখলাম তাঁর সঙ্গে গেছেন! তাঁরাও কোন্ মুখে এবং কার সঙ্গে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গেলেনÑ একটু ভেবে দেখার অনুরোধ জানাই।
×