ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিধনে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও তৎপরতা নেই

চট্টগ্রাম মহানগরীতে মশার উৎপাত

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

চট্টগ্রাম মহানগরীতে   মশার উৎপাত

আহমেদ হুমায়ুন, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বেড়েছে মশার উৎপাত। ফুটপাথ থেকে শুরু করে বাসা-বাড়ি কোথায় রেহাই মিলছে না। সবখানে মশার কামড়ে অতিষ্ঠ নগরবাসী। শীত আসায় মশার উপদ্রব আরও বেড়েছে। প্রতিনিয়ত মশার উৎপাত বাড়লে এখনও মুশক নিধন কর্মসূচী শুরু করেনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। অন্যান্য বছর চসিকের পক্ষ থেকে নবেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত চার মাস নগরীর নালা নর্দমাসহ পরিত্যক্ত স্থানে ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি স্প্রে করা হলেও এ বছর তা বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বরাবরের মতো এ বছরও বাজেটে মুশক নিধনে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এদিকে বাজেটে অর্থ বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে বন্দর নগরীতে মুশক নিধনে কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। ডিসেম্বর মাস শেষ হতে চললেও নগরীর কোথাও স্প্রে ও ওষুধ ছিটাতে দেখা যায়নি। উল্টো ওষুধ না ছিটানোর কারণে মশকবাহী নানা রোগে ভুগতে শুরু করেছে নগরবাসী। এতে নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও চিকিৎসকের চেম্বারে মশাবাহী নানা রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে বাজারে থাকা বিভিন্ন কয়েল-স্প্রে ব্যবহার করায় স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি আর্থিক ব্যয়ও বেড়েছে। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার আজিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, মশার কামড়ে বিভিন্ন ধরনের রোগের সঞ্চার হয়। বিশেষ করে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, এলার্জি ও চর্ম রোগ হয়। পঁচা পানিতে জন্ম নেয়া মশা কোন শিশুকে কামড় দিলে তার শরীরে এলার্জি হতে পারে। শীতকালে মশার উপদ্রব বাড়ে এ কারণে এ সময় ম্যালেরিয়া, চর্ম ও এলার্জি রোগী বেড়ে যায়। তিনি বলেন, মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে সত্য। পাশাপাশি পরিত্যক্ত স্থানে মশক নিধন ওষুধ ছিটাতে হবে। অন্যদিকে মশক নিধনে প্রতিবছর ওষুধ ছিটানো ও স্প্রেকে গুরুত্ব দেয়া হলেও এবার ওষুধ ছিটানোর পরিবর্তে নালা-খাল পরিষ্কারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন চসিক কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে তারা। কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কাজী শফিউল আলম বলেন, নালা-খালগুলো থেকে মশার জন্ম হয়। তাই আমরা চিন্তা করেছি এবার নালা-খালগুলো পরিষ্কার করব। নালা-খালগুলো পরিষ্কার থাকলে মশার উপদ্রব কমে যাবে। এ কারণে স্প্রে বন্ধ রাখা হয়েছে। চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মশক নিয়ন্ত্রণে প্রতি বছর নগরীর বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে ‘এডাল্ট ডি সাইট’ নামে পূর্ণাঙ্গ মশা ধ্বংসকারী ওষুধ ছিটানো হতো। এছাড়া বর্ষা মৌসুম ছাড়া বছরের অন্য দিনগুলোতে নালা-নর্দমায় ‘লাইট ডিজেল এবং লিমব্যাক’ (লাল তেল নামে পরিচিত) নামক মশার ডিম ধ্বংসকারী একটি তেল ছিটানোর ক্রাশ প্রোগ্রাম থাকে। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন নালা-নর্দমায় ব্যবহার করা হয় লাইট ডিজেল এবং স্কটল্যান্ডের তৈরি লিমব্যাক। নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য মাসে ৪শ’ লিটার করে লাল তেল বরাদ্দ থাকত, যা চসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নালা-নর্দমায় নিয়মিত ছিটাতেন। কিন্তু এ বছর বাজেটে মশক নিধন খাতে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও এখনও কোন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়নি।
×