ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মধ্যম আয়ের ফাঁদে লাতিন অর্থনীতি

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫

মধ্যম আয়ের ফাঁদে লাতিন অর্থনীতি

তানজিনা আক্তার লাতিন আমেরিকার বেশির ভাগ দেশ মধ্যম আয়ের ফাঁদের চোরাবালিতে আটকা পড়েছে। বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে লাতিন ও ক্যারিবীয় দেশগুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায় রয়েছে। এই অঞ্চলের মোট তেত্রিশটি দেশের মধ্যে ঊনত্রিশটি দেশকেই বিবেচনা করা হয় মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে। বাকি চারটির মধ্যে একটি নিম্ন আয়ের এবং তিনটি উচ্চ আয়ের দেশ। এসব দেশ দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচীতে ব্যাপক অর্থ বিনিয়োগের ফলে লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্য জয় করেছে এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সম্প্রসারণ ঘটেছে। নাগরিকদের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। এর অন্যতম কারণ শ্রমের মজুরি বৃদ্ধি। আর অব্যাহতভাবে শ্রমের মজুরি বৃদ্ধি এই অঞ্চলের দেশগুলোকে মধ্যম আয়ের ফাঁদে আটকে রাখছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সস্তা শ্রম দুষ্প্রাপ্য হওয়ায় দেশগুলো প্রথাগত ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে বাড়তি সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ব্যয় বৃদ্ধি পেলেও উৎপাদন অপেক্ষাকৃত কম হচ্ছে এবং রফতানি ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে দেশগুলো। এ অঞ্চলের অর্থনীতি এখনও উচ্চমূল্য সংযোজিত পণ্য উৎপাদনের সামর্থ্য অর্জন করতে পারেনি। তাছাড়া উচ্চমানের পণ্য উৎপাদনের সক্ষমতা এখনও এসব দেশে নেই। ফলে পণ্য উৎপাদন ও রফতানিতে পিছিয়ে পড়ায় দেশগুলো ‘মধ্যম আয়ের ফাঁদের চোরাবালিতে বেশ ভালোভাবেই আটকা পড়েছে। একারণে দেশগুলোতে বিনিয়োগ কমে আসছে। নিয়োগে ভাটা পড়া শুরু হয়েছে। এ অঞ্চলের প্রায় সতেরো লাখ মানুষ বেকার জীবন কাটাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে হাত গুটিয়ে বসে থাকা উচিত হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে আইএলওর আঞ্চলিক পরিচালক ম্যানুয়েল সালাজার বলেন, দেশগুলোকে মধ্যম আয়ের ফাঁদ থেকে বের হতে হলে বহুমুখী উৎপাদন, ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করণ এবং পরিমাণ এবং গুণগত মানের দিক থেকে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। তাছাড়া অনানুষ্ঠানিক খাতগুলোর সমস্যাও মোকাবেলা করতে হবে। ফাঁদ থেকে মুক্তি পেতে চীনের পদাঙ্ক অনুসরণ করার জন্য অনেক বিশেষজ্ঞ সুপারিশ করেছেন।
×